অনেকটা ফাঁকা মাঠে দুর্বার গতিতে শিরোপার দিকে এগিয়ে চলেছে রিয়াল মাদ্রিদ। শনিবার রাতে তারা অ্যাওয়ে ম্যাচে রায়ো ভায়েকানোকে ১-০ গোলে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থানটা আরও সুদৃঢ় করেছে। শেষ মূহুর্তে করিম বেনজেমার করা গোলের সুবাদে এই জয় পেয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ।
রায়ো ভায়েকানোর বিপক্ষে এ জয় রিয়াল মাদ্রিদকে দ্বিতীয় স্থানে থাকা সেভিয়া অনেকটা নিরাপদ দূরত্বে নিয়ে গেছে। দুই দলের পার্থক্য এখন ৯ পয়েন্ট। ২৬ ম্যাচ শেষে রিয়াল মাদ্রিদের সংগ্রহ ৬০। সেভিয়ার পয়েন্ট ৫১। তবে তারা একটা ম্যাচ কম খেলেছে। শনিবার নিজেদের মাঠে অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ ২-০ গোলে হারিয়েছে সেল্টা ভিগোকে।
বার্সেলোনা বা অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ লা লিগায় শিরোপা লড়াই থেকে বেশ ছিটকে পড়েছে। অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ অনেক আগেই পথ হারিয়েছে। আর বার্সেলোনা রিয়াল মাদ্রিদকে নয়, অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদকে অনুসরণ করছে। পাঁচ নম্বরে তারা। অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ চার নম্বরে। ফলে রিয়াল মাদ্রিদ অনেকটা দুঃশ্চিন্তা মুক্ত হয়েই লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে চলেছে।
প্রতিপক্ষ দলগুলো ভালো অবস্থানে না থাকায় লড়াইয়ের সেই ইচ্ছাটা যেনো হারিয়ে ফেলেছে রিয়াল মাদ্রিদ। তাই তো রায়ো ভায়েকানোর বিপক্ষে ম্যাচ রিয়ালের শুরুটা ছিল খুবই ধীর গতির। শুধু তাই নয়, ম্যাচে পয়েন্ট হারানোর শঙ্কাও তৈরি হয়েছিল। গোলশূন্যভাবে ম্যাচ শেষ করার সম্ভাবনা তৈরি করেছিল স্বাগতিক দলটি। কিন্তু শেষ বাঁশি বাজার আগে রেফারিকে আরও একবার লম্বা বাঁশি বাজাতে হয়। সাত মিনিট আগে বেনজেমা স্বাগতিক দর্শকদের হতাশায় ডুবিয়ে সতীর্থদের আনন্দে ভাসিয়ে দেন।
সতীর্থ ভিনিসিয়াস জুনিয়রের কাছ থেকে বল তিনি গোলটি করেন। দুইজনের চমৎকার বোঝাপড়ার ফসল হিসেবেই তারা গোলেটি তুলে নেন। গোলের সিংহভাগ কৃতিত্ব ভিনিসিয়াসের। বেনজামার কাছ থেকে বল পেয়ে রায়ো ভায়েকানোর ডিফেন্ডারদের ফাঁকি দিয়ে যে বলটা ভিনিসিয়াস দিয়েছিলেন সেখানে বলে একটু পা ছোঁয়ানোর কাজটাই করতেই হয়েছে বেনজামাকে। এ গোলের মাঝ দিয়ে এ মৌসুমে দুইজনের গোলের সংখ্যা ৩২ হলো। রিয়াল মাদ্রিদের ৫২ গোলের ৩২টি করেছেন তারা।
ম্যাচ শেষে রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলোত্তি বলেন, ছেলেরা যেভাবে জয় তুলে নিয়েছে তাতে আমি সন্তুষ্ট। আমি জয় পেয়েছি। কিন্তু পরিবেশটা মোটেও সহজ ছিল না। প্রতিপক্ষ, মাঠ- সবই ছিল জটিল। আমার মনে হয় আমরা ভালো করেছি। কেননা এখানে খুব বেশি দল জয় নিয়ে ফিরতে পারে না।’
রিয়াল মাদ্রিদ জয় পেলেও রায়ো ভায়েকানো খুব যে খারাপ খেলেছে বা তাদের জয়ের সম্ভাবনা ছিল না তা নয়। বরং রিয়াল মাদ্রিদের গোলরক্ষক থিবু কর্তোয়ার দৃঢ়তায় এ ম্যাচে রায়ো ভায়েকানো গোল থেকে বঞ্চিত হয়েছে। কর্তোয়াকে একাধিকবার রায়োর স্ট্রাইকার কঠিন পরীক্ষা দিতে বাধ্য করেছে। সে পরীক্ষায় অবশ্য উতড়ে গেছেন কর্তোয়া। একবার মারিও সুয়ারেজের বুলেট গতির হেড রুখে দেন। অন্যবার পোস্টের কাছ থেকে আলভারো গার্সিয়ার নেয়া শট থেকেও ভায়েকানোকে গোল বঞ্চিত করেন।
কর্তোয়া বলেন, ‘মাঠের অবস্থা ভালো ছিল না। ফলে স্বাভাবিক খেলাটা খেলা কঠিন হয়ে পড়েছিল। মাঠের অবস্থা এতটাই খারাপ যে এটা লা লিগার সঙ্গে মানানসই নয়। একটা আদর্শ মানের মাঠের সঙ্গে এ মাঠের তুলনা করা যায় না।’
ম্যাচে রেফারিংয়ের মান নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে রায়ো ভায়েকানো। মারাত্মক ফাউল করা সত্ত্বেও রিয়ালের মিডফিল্ডার কাসেমিরোকে কার্ড না দেখানোয় তারা অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। ভিএআর দেখে রেফারি তাকে হলুদ কার্ড দেখিয়ে সতর্ক করেন।
মন্তব্য