-->
শিরোনাম

‘১০ পয়েন্ট খুব গুরুত্বপূর্ণ’

তৃতীয় ওয়ানডেতে মুখোমুখি বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান, চট্টগ্রামে ম্যাচ শুরু বেলা ১১টায়

ক্রীড়া প্রতিবেদক
‘১০ পয়েন্ট খুব গুরুত্বপূর্ণ’

টানা দুই জয়ে সিরিজ নিশ্চিত হয়েছে আগেই। সোমবার তৃতীয় ওয়ানডেতে আফগানিস্তানের মুখোমুখি হবে উজ্জীবিত বাংলাদেশ। এই ম্যাচ জিততে পারলে আফগানরা হবে হোয়াইটওয়াশ। তবে বাংলাদেশের চোখ কিন্তু হোয়াইটওয়াশে নয়, ১০ পয়েন্টে। তেমনটিই জানালেন দলের নির্ভরযোগ্য অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ।

আগে সিরিজ জয় নিশ্চিত হলে পরের ম্যাচগুলোতে পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যাপার থাকত। অভিজ্ঞদের বিশ্রাম ও নতুনদের সুযোগ দেওয়ার ভাবনা থাকত। হোয়াইটওয়াশ নিয়ে আলোচনাই থাকত মুখ্য। সেসব দিন এখন অতীত। আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগ চালু হওয়ার পর প্রতিটি ম্যাচই পেয়ে গেছে আলাদা গুরুত্ব। একেকটি ম্যাচে জড়িয়ে ১০ পয়েন্ট।

দ্বিতীয় ম্যাচ জিতে সিরিজ নিশ্চিতের পাশাপাশি সুপার লিগের শীর্ষে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। সেখান থেকে আরো দূরে যেতে চায় বাংলাদেশ। রোববার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে কথা বলেন মিরাজ। ১৩ মিনিটের সংবাদ সম্মেলনে একটিবারও তিনি উচ্চারণ করেননি হোয়াইটওয়াশ শব্দটি। কিন্তু পয়েন্টের কথা বললেন কয়েকবার।

সিরিজ হেরে আত্মবিশ্বাসে পিছিয়ে থাকা আফগানদের বিপক্ষে আরো ১০ পয়েন্টপ্রাপ্তির সুযোগ তাই হাতছাড়া করতে চায় না দল। মিরাজ বলেন, ‘সিরিজ জেতার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ১০ পয়েন্ট। বিশ^কাপে কিন্তু শীর্ষ আট দল কোয়ালিফাই হবে। সিরিজ জিতেছি খুব ভালো কথা। আমাদের পরবর্তী টার্গেট আরেকটি ম্যাচ জিতে ১০ পয়েন্ট নিতে পারলে দলের জন্য অনেক ভালো হবে। সামনে হয়তো অনেক ভালো সুযোগ আসবে। হয়তো অনেক বড় চ্যালেঞ্জ আসবে। কিন্তু আমি মনে করি, এই ১০ পয়েন্ট যদি নিতে পারি, তখন আমাদের জন্য সহজ হয়ে যাবে সামনের চ্যালেঞ্জগুলো।’

প্রথম ম্যাচে মিরাজ ও আফিফের জুটিতে জিতেছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে মিরাজ ব্যাট করারই সুযোগ পায়নি। লিটন ও মুশফিকের ব্যাটেই ৩শ ছাড়ায় বাংলাদেশ। দারুণ বোলিংয়ের পর বাংলাদেশ ম্যাচ জেতে ৮৮ রানে। সিনিয়রদের নিয়ে মিরাজ বলেন, ‘অবশ্যই সিনিয়ররা আমাদের ব্যাকআপ করে, কথা বলে। ওনারা চায় আমরা জুনিয়ররা যেন পারফরম করি। তা হলে ওনাদের কাজ সহজ হয়। আমরা জুনিয়ররা পারফরম করলে দলের রেজাল্টের ব্যাপারটা ভালো হয়। তারা সব সময়ই ভালো খেলেছেন। ভালো করবেন। আমরাও যদি তাদের সঙ্গে ভালো খেলতে পারি তা হলে দলের জন্য ভালো হবে। দেখেন আমি লিটন মোস্তাফিজ অলমোস্ট ৫-৬ বছর খেলে ফেলেছি, কিছু অভিজ্ঞতা তো হয়েছে। চেষ্টা করব যতটুকু অভিজ্ঞতা হয়েছে তা কাজে লাগিয়ে ভালো ক্রিকেট খেলার জন্য।’

সিরিজের শেষ ম্যাচের আগের দিন অনুশীলন ঐচ্ছিক। সাকিব আল হাসান, লিটন দাস, মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, আফিফ হোসেনরা আসেননি মাঠে। সিরিজ জয় নিশ্চিত হওয়ার পর দল একটু নির্ভার কিনা, সেই প্রশ্ন জাগতেই পারে। মেহেদী হাসান মিরাজ তা শুনে প্রবল আপত্তি করলেন। পূর্ণ ৩০ পয়েন্টের হাতছানি যেখানে, অভিযান শেষ হওয়ার আগে স্বস্তির শ্বাস নেওয়ার সুযোগ কোথায়!

মিরাজ বলেন, ‘আমাদের তো অপশনাল অনুশীলন। আমরা বিপিএলে টানা ম্যাচ খেলেছি। তখন রেস্ট পাইনি। আজো অপশনাল অনুশীলন ছিল। হয়তো সাকিব ভাই একটু ক্লান্ত। আসলে অনুশীলন করলেই যে ভালো করবে এমন কিছু না। মানসিক রিফ্রেশমেন্টটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আজকে অপশনাল ছিল, মেন্ডাটরি ছিল না তোÑ যার যতটুকু দরকার ততটুকু অনুশীলন করেছে।’

ক্রিকেট ১১ জনের খেলা। সবাই একদিনে ভালো খেলবে না। প্রথম ম্যাচের সেই ১৭৪ রানের জুটি প্রসঙ্গে মিরাজ বলেন, ‘ক্রিকেট ১১ জনের খেলা। সবার অবদান রাখতে হয়। যেহেতু আমাদের এ রকম একটা সুযোগ আসছে। প্রথমে আমরা নরমাল ক্রিকেট খেলেছি। ওই সময় জেতার চিন্তা করি নাই। জুটি গড়ার চেষ্টা করেছি। যখন বড় জুটি হয়ে গেছে তখন চিন্তা করেছি কিভাবে ম্যাচটা জেতা যায়। যেহেতু আমাদের সুযোগ ছিল, সেটা কাজে লাগাতে পেরেছি তো এটা আমাদের ভবিষ্যতের জন্য ভালো হবে।’

টাইগারদের সাবেক হেড কোচ জেমি সিডন্স বর্তমানে কাজ করছেন বাংলাদেশের ব্যাটিং কোচ হিসেবে। মিরাজ তাকে পেয়েছেন প্রথমবারের মতো। তার প্রসঙ্গে মিরাজ বলেন, ‘আসলে ওর সঙ্গে তো বেশিদিন কাজ করার সুযোগ পাইনি। কিন্তু আগে থেকেই শুনেছি ও অনেক ভালো ব্যাটিং কোচ এবং টেকনিক্যালি ও খুবই ভালো। দুই-তিন যতটুকুই কাজ করেছি ভালো লেগেছে মানসিকভাবে সাপোর্ট দিয়েছি। এবং একটা কথা বলেছে যে এখন তো আর ম্যাচের ভেতর বেশি কিছু চেঞ্জ করার কিছু নেই যেটা টেকনিক্যালি-টেকটিক্যালি যে উন্নতিটা করতে হবে সেটা সামনে যখন গ্যাপ পাব তখন আমার সঙ্গে কথা হয়েছে তখন কাজ করবে এখন তো আমরা ম্যাচের ভেতর আছি তেমন কিছু করার সুযোগ নেই।’

জাতীয় দলে খেলাটা বেশ চ্যালেঞ্জ বলে মানছেন মিরাজ। তিনি বলেন, ‘আসলে প্রতিযোগিতা প্রতিটা সময়ই। জাতীয় দলে পারফরম করেই খেলতে হবে। চ্যালেঞ্জটা হলো, হ্যাঁ তরুণ বলতে অভিজ্ঞতার দিক থেকে তরুণ কিন্তু জাতীয় দলে জুনিয়র-সিনিয়র কোনো অজুহাত দিতে পারবেন না। আমি যদি পারফরম না করি তা হলে আমার জায়গায় অন্য কেউ আসবে। দিন শেষে নিজেকে যত জলদি গুছিয়ে নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সঙ্গে মানিয়ে নেব, তত জলদি আমি সফল হব ও আমার ক্যারিয়ারও বড় হবে।’

মন্তব্য

Beta version