ঐতিহাসিক তো বটেই। ঐতিহাসিক না হয়েও উপায় নেই। কবে যে আর পাকিস্তান নিজ দেশে টেস্ট খেলতে পারবে তা নিয়ে ছিল অনিশ্চয়তা। সফররত শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের ওপর সন্ত্রাসী হামলার কারণে যে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল তা কেটে গেছে বেশ আগেই। তারপরও অস্ট্রেলিয়া পাকিস্তান সফরে আসবে কিনা তা নিয়ে তৈরি হয়েছিল শঙ্কা। এর মাঝে করোনাভাইরাস আরো এক আতঙ্ক তৈরি করেছিল। এ আতঙ্ক কাটতে না কাটতে উদয় হলো আইপিএল। অবশেষে সব শঙ্কা, আতঙ্ক ও আর অনিশ্চয়তাকে দূরে ঠেলে শুরু হয়েছে পাকিস্তান-অস্ট্রেলিয়ার রাওয়ালপিন্ডি টেস্ট।
টেস্টের শুরুতেই হেসেছে স্বাগতিকরা। টস জিতে ব্যাটিং নিয়েছে। সেখানেও আছে স্বস্তি। ব্যাটাররা সেই স্বস্তির কারণ। তবে পাকিস্তানের ব্যাটাররা শুরু থেকেই সাবধানী ব্যাট করে চলেছেন। বিশেষ করে চা বিরতির পর পাকিস্তানের ব্যাটিং ছিল খুব ধীর গতির। তবে লাঞ্চের আগে পাকিস্তানের ব্যাটিং ছিল বেশ উপভোগ্য। আর দিন শেষে পাকিস্তান শিবিরে স্বস্তির বন্যা। ১ উইকেট হারিয়ে যে স্কোরবোর্ডে জমা হয়েছে ২৪৫ রান। সেঞ্চুরি করেছেন ওপেনার ইমাম উল হক। ১৩২ রানে অপরাজিত তিনি। তার সঙ্গে ৬৪ রানে অপরাজিত সাবেক অধিনায়ক আজহার আলী।
২০১৯ সালের অ্যাশেজের পর এ-ই প্রথম অস্ট্রেলিয়া দেশের বাইরে টেস্ট খেলছে। অন্যদিকে দীর্ঘ ২৪ বছর পর অস্ট্রেলিয়া পাকিস্তান সফরে এলেও তারা কোনো অনুশীলন ম্যাচ খেলেনি। অনুশীলনের পর্যাপ্ত সুযোগও পায়নি। যতটুকু পেয়েছিল তা আবার বৃষ্টি কেড়ে নিয়েছে।
টস জয়ের পর পাকিস্তানের আবদুল্লাহ শফিক ও ইমাম উল হক ইনিংসের গোড়াপত্তন করেন। দারুণভাবে তারা অস্ট্রেলিয়ার পেস আক্রমণ সামাল দিয়েছেন। বিশেষ করে ইমাম উল হক ছিলেন অনেক সাবলীল। ধীরে সুস্থে দেখেশুনে এগিয়েছেন। তাই সুফলতা পেয়েছেন। ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন। চা বিরতির পরপরই তিন অঙ্কের যাদুকরী এ সংগ্রহে পৌঁছান তিনি। চা বিরতির আগে ইমাম তার আগের সর্বোচ্চ রান ৭৬-কে টপকে যান।
পাকিস্তান প্রথম উইকেট হারায় ১০৫ রানে। ৪৪ রানে আউট হন আবদুল্লাহ শফিক। নাথান লিও’র বলে প্যাট কামিন্স ক্যাচ নেন। তিন বাউন্ডারি ও এক ওভার বাউন্ডারিতে সাজিয়েছিলেন তিনি ইনিংসটি। লাঞ্চের আগে এটাই ছিল অস্ট্রেলিয়ার একমাত্র সাফল্য। দ্বিতীয় সেশনে সফরকারী দল কোনো সাফল্য পায়নি। এ সময়ে ইমাম উল হক এবং সাবেক অধিনায়ক আজহার আলী সফরকারী বোলারদের শুধু হতাশা উপহার দিয়েছেন। তবে অস্ট্রেলিয়া বোলাররা এ সময় স্বাগতিক ব্যাটারদের ওপর বেশ চাপ সৃষ্টি করেছিলেন। ফলে এ সময়ে পাকিস্তানের রান সংগ্রহের হার বেশ কমে গিয়েছিল। মাত্র ৬৬ রান জমা হয়েছে পাকিস্তানের স্কোরবোর্ডে। শেষ সেশনে পাকিস্তান করেছে ৭৪ রান।
মন্তব্য