অ্যাওয়ে ম্যাচে ড্র করে আশা জিইয়ে রেখেছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। কিন্তু নিজেদের মাঠের খেলায় সেই আশাকে বাস্তবে রূপ দিতে পারেনি ম্যানইউ। বরং তাদের হৃদয় ভেঙ্গে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ। ১-০ গোলে জয় পেয়েছে মাদ্রিদ। ম্যানইউয়ের হৃদয় ভেঙ্গে দেওয়া গোলটি করেন রেনান লোদি। এ জয়ের ফলে ২-১ গোল করে কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছেছে মাদ্রিদ। এর ফলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গত আট আসরে নক আউট পর্ব থেকে বিদায় নিল।
একই দিনে বেনফিকা কোয়ার্টার ফাইনালে নাম লিখিয়েছে। তারাও অ্যাওয়ে ম্যাচে ১-০ গোলে জয় পেয়েছে। প্রথম লেগের খেলা ২-২ গোলে ড্র হওয়ায় ৩-২ গোল গড় নিয়ে তারা শেষ আটে পৌঁছেছে। এর আগে লিভারপুল, ম্যানেচস্টার সিটি, বায়ার্ন মিউনিখ ও রিয়াল মাদ্রিদ কোয়ার্টা ফাইনালে উঠে শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা জিইয়ে রেখেছে।
একের পর সাফল্যের পথে যখন নগর প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানসিটি হাঁটছে তখন ম্যানইউ এর পৃথিবী ছোটো হয়ে আসছে। মঙ্গলবার ওল্ড ট্রাফোর্ডে অনুষ্ঠিত ম্যাচে হেরে যাওয়ায় এখন তারা শুধু প্রিমিয়ার লিগে টিকে রয়েছে। তবে শিরোপা জয়ের লড়াইয়ে নয়, তাদের লড়াই শেষ চারে টিকে থাকা। তাছাড়া ম্যানইউয়ের ট্রফি খরার মেয়াদ আরো বেড়ে গেলো। প্রিমিয়ার লিগের যে অবস্থা তাতে তাদের শিরোপা জয়ের কোনো সম্ভাবনা নেই। শীর্ষে থাকা ম্যাচসিটি থেকে ২০ পয়েন্ট দূরে রয়েছে তারা। এরই মধ্যে বাদ পড়েছে এফএ কাপ থেকে। ফলে তাদের ট্রফি খরার মেয়াদ বেড়ে পাঁচ বছরে।
শনিবার টটেনহাম হস্পারের বিপক্ষে যে দলটা খেলেছিল সে দলে তিনটি পরিবর্তন নিয়ে এ ম্যাচে দল সাজিয়েছিলেন কোচ র্যাংনিক। ব্রুনো ফার্নান্দেস প্রথম একাদশে ছিলেন। পল পগবা ও মার্কাস রাশফোর্ডকে বাইরে রেখেছিলেন। টিনএজ ফরোয়ার্ড অ্যান্থনি এলাঙ্গা প্রথম একাদশে। প্রথম লেগের ম্যাচে শেষ মিনিটে গোল করে তিনি ম্যানইউয়ের আশা জিইয়ে রেখেছিলেন। এ ম্যাচের শুরুতে দলকে এগিয়ে নেওয়ার দারুণ সুযোগ পেয়েছিল। ব্রুনো ফার্নান্দেজের কাছ থেকে পাওয়া বলে যে শটটি তিনি নিয়েছিলেন তা থেকে গোল পেতে পারতো ম্যানইউ। কিন্তু মাদ্রিদ গোলরক্ষক ইয়ান ওবলাক দারুণ দক্ষতায় অ্যান্থনির শট রুখে দেন।
এ ঘটনার পরপরই ম্যানইউ গোলরক্ষক ডেডিভ ডি গিয়াকে কঠিন পরীক্ষা নামতে হয়। রদ্রিগো ডি পলের দুর্দান্ত এক শট তিনি চমৎকারভাবে রুখে দেন। তবে ৪১ মিনিটে লোদির হেড ফেরাতে পারেননি।
ম্যাচ হারার পর ম্যানইউ কোচ রালফ র্যাংনিক বলেন, ‘আমার মনে হয় আমরা প্রথমার্ধে ভালো খেলেছি। আমরা সুযোগও পেয়েছি। তবে একটা বা দুটো যে সহজ সুযোগ পেয়েছিলাম তা কাজে লাগাতে পারিনি। কিন্তু বিরতির আগে পাল্টা আক্রমণ থেকে আমরা গোল হজম করে বসি। ফলে আমাদের জন্য কাজটা কঠিন হয়ে যায়। দ্বিতীয়ার্ধে খেলাটা কঠিন হয়ে পড়েছিল এবং প্রতিবারই তারা আমাদের আক্রমণ সফলভাবে রুখে দিয়েছে। মনে হয়েছে ভাগ্য আমাদের বিপক্ষে কাজ করছে।
ম্যাচ শেষে মাদ্রিদ কোচ ডিয়াগো সিমিওনে বলেন, ‘আমরা দ্বিতীয়ার্ধে ভালো খেলেছি। দলগতভাবে এ সময় আমরা ভালো চাপ তৈরি করেছিলাম। এ অর্ধে আমরা যা খেলেছি তা ছিল বছরের সেরা। যা হয়েছে তাতে আমরা খুশি। এ সাফল্যে ড্রেসিং রুমে উৎসব করেছি।’
ড্রেসিং রুমে উৎসব করলেও ম্যাচ শেষে সিমিওনের অভিজ্ঞতাটা মোটেও সুখকর ছিল না। ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজতেই সিমিওনে টানেলের দিকে ছুটে যান। এ সময় তার দিকে ম্যানইউয়ের সমর্থকরা তার দিকে বোতলসহ বিভিন্ন দ্রব্য ছুঁড়তে থাকে।
মন্তব্য