-->
উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ

চেলসি শেষ আটে

ক্রীড়া ডেস্ক
চেলসি শেষ আটে

প্রথম লেগের খেলায় ২-০ গোলে এগিয়ে ছিল চেলসি। ফলে পথটা একটু সহজ ছিল। সে সহজ পথে হেঁটে চেলসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছেছে। বুধবার রাতে অ্যাওয়ে ম্যাচে তারা লিলের বিপক্ষে ২-১ গোলে জয় পেয়েছে। প্রথম লেগে তারা ২-০ গোলে জয় পেয়েছিল। ফলে ৪-১ গোল গড় নিয়ে ইংলিশ ক্লাবটি শেষ আটে নাম লিখিয়েছে।

প্রথম লেগের জয়ের পরও চেলসির পথটা মোটেও মসৃণ ছিল না। বিশেষ করে মাঠের বাইরে দলটির অবস্থা মোটেও স্বস্তিদায়ক নয়। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের কারণে ক্লাবটির রুশ মালিক আব্রামোভিচের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাজ্য। ফলে ক্লাবটি বেশ নাজুক অবস্থায় রয়েছে। লিলের বিপক্ষে ম্যাচটি খেলতে কিভাবে তারা যাবে তা নিয়েও দুঃশ্চিন্তার শেষ ছিল না। তবে সব দুঃশ্চিন্তাকে তারা উড়িয়ে দিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে। সব বাধা উপেক্ষা করে সাফল্যের পথে চলাটা অব্যাহত রেখেছে।

মাঠের বাইরের পরিস্থিতি যে এ ম্যাচে পড়েনি তা নয়। ক্লাবের ভবিষ্যত অনিশ্চিত থাকার বিষয়টি তাদের মনের ওপর বড় চাপ ফেলেছিল। তাইতো ম্যাচের শুরুটা ছিল যাচ্ছেতাই। চেলসির এ দুর্বলতার সুযোগটি কাজে লাগাতে মোটেও দেরি করেনি লিল। তাদের শুরুটা ছিল দুর্দান্ত। তাইতো ম্যাচের প্রথম গোল ছিল তাদের। ৩৮ মিনিটে ৩৬ বছর বয়সী বুরাক ইলমাজ পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে নিয়েছিলেন। এ গোলের মাধ্যমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নক আউট পর্বে তৃতীয় বয়োজ্যেষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে গোল করার কৃতিত্ব দেখালেন ইলমাজ। তার আগে এ কীর্তি গড়েছেন পাওলো মালদিনি ও রায়ান গিগস।

জর্জিনহোর হাতে বল লাগায় লিল এ পেনাল্টি পেয়েছিল। এতে গোল ব্যবধান কমে ১-২ তে চলে এসেছিলে। শেষ আটে জায়গা করে নেওয়ার একটা স্বপ্নও তাদের মনে উঁকি দিচ্ছিল। ঘরোয়া লিগের পারফরম্যান্স তাদের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার ব্যাপারে আরো একটু জোরালো করেছিল। কেননা গত তিন ম্যাচে তাদের রক্ষণভাগকে ফাঁকি দিয়ে কেউ গোল করতে পারেনি। কিন্তু খুব বেশিক্ষণ এ স্বপ্নে তারা বিভোর থাকতে পারেনি। বরং প্রথমার্ধেই তাদেরকে বাস্তবে ফিরিয়ে আনেন ক্রিস্টিয়ান পুলিসিক। এ অর্ধের ইনজুরি সময়ে গোল করেন তিনি। ফলে চেলসি আবার দুই গোলের ব্যবধানে এগিয়ে যায়। সে সঙ্গে তারা কোয়ার্টার ফাইনালের পথে আরো এক ধাপ এগিয়ে যায়। এ গোলের মাধ্যমে একটা কীর্তি গড়েছেন পুলিসিক। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কনকাকাফ অঞ্চলের খেলোয়াড়দের মধ্যে এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি গোল করার কীর্তি ছিল জাভিয়ের হার্নান্দেজের। পুলিসিক তার সঙ্গী হলেন।

চেলসি ডিফেন্ডার সিজার অ্যাজপিলিকুয়েতা ৭১ মিনিটে ব্যবধান ২-১ করেন। সে সঙ্গে গোল গড় ৪-১ এ চলে যায়। চেলসির কোয়ার্টার ফাইনালও নিশ্চিত হয়। তবে এতে যেনো তাদের বিপদ বেড়েছে। কেননা ক্লাবের অনিশ্চয়তার মাঝে তাদেরকে অ্যাওয়ে ম্যাচে খেলার খরচের কথা ভাবতে হবে। ক্লাবের মালিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় অর্থের সরবরাহ নিয়ে জটিলতা শুরু হয়েছে। এ সব কারণে আব্রামোভিচ ক্লাব বিক্রি করে দিতে চাইছেন। এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন ক্লাব কেনার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। লিভারপুলের সাবেক চেয়ারম্যান স্যার মার্টিন ব্রাউটন এ তালিকায় রয়েছেন। মেজর লিগ বেসবলের দল শিকাগো কাবসের মালিক রিকেটস ফ্যামিলিও চেলসির মালিক হওয়ার বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়েছে।

আগে গোল করেও জয় না পাওয়ায় লিল নিজেদের দুর্ভাগা ভাবতেই পারে। কেননা বিরতির পর গোল করার দারুণ দুটো সুযোগ পেয়েছিল তারা। কিন্তু ইলমাজ সুযোগ দুটো কাজে লাগাতে পারেনি।

শুক্রবার কোয়ার্টার ফাইনালের ড্র হবে। তখনই চেলসি অ্যাওয়ে ম্যাচের খরচের বিষয়টি হিসাব নিকাশ করতে পারবে। আব্রামোভিচের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির আগে লিলের বিপক্ষে ম্যাচের প্রায় সবকিছুই চূড়ান্ত ছিল। ফলে এ ম্যাচ নিয়ে ভাবনা থাকলেও অতটা সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়নি।

 

মন্তব্য

Beta version