ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো পেরেছেন কিন্তু পারেননি মোহাম্মদ সালাহ। সাদিও মানে সফল, ব্যর্থ মোহাম্মদ সালাহ। যার ফলে কাতার বিশ্বকাপে মাঠে থাকবেন রোনালদো-সাদিও মানেরা। আর দর্শকের আসনে সালাহ। মঙ্গলবার রাতে উত্তেজনাপূর্ণ টাইব্রেকারে মিসরকে ৩-১ গোলে হারিয়ে সাদিও মানের সেনেগাল কাতার বিশ্বকাপের টিকেট পেয়েছে। নির্ধারিত সময়ের খেলা ১-১ গোল গড়ে সমতা ছিল। নিজেদের মাঠে প্রথম লেগের খেলায় মিসর ১-০ গোলে জয় পেয়েছিল। আর মঙ্গলবার ফিরতি লেগের খেলায় সেনেগাল একই ব্যবধানে জয় পাওয়ায় খেলা টাইব্রেকারে গড়ায়। আর সেখানে ঘটে নাটকীয় সব ঘটনা।
অবশ্য ম্যাচের শুরু থেকেই নাটকীয় ঘটনা ঘটে। প্রথম লেগের খেলায় মিসর চতুর্থ মিনিটে গোল করে এগিয়ে গিয়েছিল। ম্যাচের বাকি সময়ে কোনো দল আর গোল করতে পারেনি। সেনেগালের রাজধানী ডাকারের বাইরে অবস্থিত ডিয়ামনিয়াদিও স্টেডিয়ামে তার ব্যতিক্রম হয়নি। বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে টিকে থাকতে আগে একটা গোলের প্রয়োজন ছিল সেনেগালের। নিজ দর্শকের সামনে সেই গোলটা পেতে মোটেও দেরি হয়নি তাদের। এ ম্যাচেও দর্শকরা চতুর্থ মিনিটে গোলের দেখা পায়। মিসরের হামদি ফাতির ওন গোলে সেনেগাল শরীরে প্রাণ ফিরে পায়।
স্টেডিয়ামে উপস্থিত ৫০ হাজার দর্শকের সামনে স্বাগতিক সেনেগাল দারূণ খেলা উপহার দেয়। তবে গোলের দেখা পায়নি। বিরতির পর তাদের আধিপত্য আরো বাড়ে কিন্তু ফাউলের কারণে খেলা বারবার বাধাগ্রস্থ হয়। মিসরের বদলি খেলোয়াড় জিজো দারূণ দুটো সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেননি। ফলে খেলা অতিরিক্ত সময়ে গড়ায়। এ সময়ে সেনেগাল একাধিক গোলের সুযোগ পেয়েছিল। বিশেষ করে ইসমাইলা সার দারুণ সব সুযোগ নষ্ট করেন। একবার তো গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি।
অতিরিক্ত সময়েও সহজ সুযোগ নষ্ট করেন সার। সাদিও মানের কাছ থেকে বল পেয়ে বাইরে মারেন তিনি। ফলে নির্ধারিত সময়ে আর কোনো গোল হয়নি। তারই ধারাবাহিকতায় খেলা গড়ায় টাইব্রেকার নামের ভাগ্য পরীক্ষায়। আর সেখানে বেশির ভাগ খেলোয়াড়ই মানসিক দক্ষতার পরিচয় দিতে ব্যর্থ হয়।
টাইব্রেকারে সেনেগাল প্রথম শট নেন। কিন্তু গোলের দেখা পাননি তিনি। সেনেগাল দ্বিতীয় শটেও গোল পায়নি। তবে ম্যাচের নাটকীয়তা ধরে রাখতে যেনো মিসরও গোল না করার সিদ্ধান্ত নেয়। তারাও প্রথম দুই শট থেকে গোল করতে পারেনি। আর এ ব্যর্থতায় নেতৃত্ব দিয়েছেন মোহাম্মদ সালাহ। সেনেগাল পরের তিন শটেই গোল পায়। মিসর তৃতীয় শটে গোল পেলেও চতুর্থ শটে ব্যর্থতার পরিচয়। ফলে তাদের পঞ্চম শট নেওয়ার দরকার হয়নি। আর সেনেগালের হয়ে পঞ্চম শট নেওয়া সাদিও মানের গোলটি ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারক হয়ে যায়।
সালাহ’র এ ব্যর্থতা আফ্রিকান নেশনস কাপের ফাইনালের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। সে সময়ও সালাহ টাইব্রেকারে গোল করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। ব্যর্থ হয়েছিল তার দেশও। সেনেগাল ৪-২ গোলে জয় পেয়ে শিরোপা জিতেছিল।
মন্তব্য