-->
আগামীকাল থেকে পোর্ট অব এলিজাবেথে শুরু বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয় টেস্ট

অচেনা শহরেও স্বস্তির আশা

নিজস্ব প্রতিবেদক
অচেনা শহরেও স্বস্তির আশা

প্রথম টেস্টের শেষটা হতে পারত লড়াকু মেজাজে। চারটি দিন সেটা করা গেলেও শেষ দিনের হতচ্ছিরি পারফরম্যান্স এক নিমিষেই সব যেন শেষ করে দিয়েছে। টাইগারদের আত্মবিশ্বাসেও লেগেছে ধাক্কা। তারপরও এগিয়ে যেতে হবে সামনে। সেটাই করছে টিম টাইগার্স।

আগামীকাল শুক্রবার থেকে শুরু হবে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। ম্যাচটি হবে পোর্ট অব এলিজাবেথে। এই শহরটি বাংলাদেশের জন্য সম্পূর্ণ অচেনা। কারণ ক্রিকেটের কোনো ফরম্যাটেই এখানে খেলার অভিজ্ঞতা নেই বাংলাদেশের। তারপরও অচেনা শহরে স্বস্তির আশায় রয়েছেন মুমিনুলরা। তার মূল কারণ, মুমিনুলদের জন্য এই শহর অচেনা হলেও বাংলাদেশের হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর কাছে হাতের তালুর মতো চেনা। কারণ এই শহরেই যে বেড়ে ওঠা ডমিঙ্গোর।

পোর্ট এলিজাবেথের র‌্যাডিসন ব্লু হোটেলে উঠছে বাংলাদেশ দল। যেটি একেবারে ভারত মহাসাগরের তীরে। হোটেল থেকে নীল সমুদ্রের জলরাশি দেখেই চোখ জুড়িয়ে যায়। বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের মনেও নিশ্চয়ই ছুয়ে যাচ্ছে এই দৃশ্য। তবে সবার মনে একটাই প্রত্যয়, শেষ টেস্টে ভালো করা।

গত মঙ্গলবার ডারবান থেকে দেড় ঘণ্টার ফ্লাইটে গেবেখা বা পোর্ট এলিজাবেথ শহরে পৌঁছে বাংলাদেশ দল। এই শহরে প্রথমবারের মতো খেলতে আসা বাংলাদেশের কাছে টেস্ট ভেন্যু সেন্ট জর্জেস পার্ক ক্রিকেট গ্রাউন্ড অচেনাই মনে হবে। কিন্তু একজনের কাছে সেটিই খুব চেনা। তিনি রাসেল ডমিঙ্গো। বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচের বাড়ি দক্ষিণ আফ্রিকার এ উপকূল শহরে। প্রধান কোচের শহরে খেলা, বাংলাদেশ কি দারুণ কিছুর আশা করতে পারে? হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্নটার উত্তরে তিনটি ‘থাম্বস আপ’ পাঠিয়ে ডমিঙ্গো বুঝাতে চাইলেন ভালো কিছু অপেক্ষা করছে পোর্ট অব এলিজাবেথে।

কাজটা অবশ্য মোটেও সহজ নয়। দুর্দান্ত প্রতাপে ডারবান টেস্ট জিতে দারুণ উজ্জীবিত দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রোটিয়াদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে ভিন্ন কৌশলে জিতে। বাংলাদেশকে তারা কাবু করেছে প্রতিপক্ষ যে অস্ত্র নিয়মিত মোকাবিলা করে অভ্যস্ত, সেই স্পিন বিষে! দক্ষিণ আফ্রিকা বাংলাদেশ গুঁড়িয়ে দিয়েছে মনস্তাত্ত্বিক খেলাতেও।

দক্ষিণ আফ্রিকার মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার স্পিন খেলতে না পারায় দলের ব্যাটারদের কাঠগড়ায় তুলেছেন স্বয়ং বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হক। অবশ্য ডারবানে তিক্ত অভিজ্ঞতা ভুলে পোর্ট এলিজাবেথে নতুন কিছু করার কথা বললেন দলের টপঅর্ডার ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্ত, ‘(কেশব) মহারাজ অবশ্যই ভালো বোলার। আমি মনে করি, আমরা এর চেয়ে ভালো স্পিন খেলতে পারি। আগের টেস্ট নিয়ে খুব একটা ভাবছি না। আমরা চার দিন ভালো ক্রিকেট খেলেছি। শেষ ঘণ্টা দেড়েকের খেলায় আমরা টেস্টটা হেরে গেছি।’

দল যখন ডারবান থেকে পোর্ট এলিজাবেথে রওনা দিয়েছে, ঢাকার ফ্লাইট ধরতে তখন জোহানেসবার্গের পথে চোটে পড়ে ছিটকে যাওয়া তাসকিন আহমেদ ও শরীফুল ইসলাম। তাসকিন-শরীফুলকে হারানো যদি দুঃসংবাদ হয়, শেষ টেস্টে তামিম ইকবালের ফেরাটা একটা সুসংবাদ। শান্ত তাই বলছেন, ‘তামিম ভাই সব সময় দলের অনেক বড় খেলোয়াড়। তিনি ফিরলে অবশ্যই দলের শক্তির জায়গাটা বেড়ে যায়।’

প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর এই শহরেই টাইগারদের দ্বিতীয় টেস্ট ৮ থেকে ১২ এপ্রিল। সিরিজ বাঁচাতে যেখানে মরিয়া হয়ে খেলতে হবে মুমিনুলদের। ম্যাচের আগে দুই দিন অনুশীলনের সুযোগ রয়েছে।

সিরিজ নির্ধারণী দ্বিতীয় টেস্টে খেলবেন তামিম ইকবাল। যা দলের জন্য বড় পাওয়া। প্রথম টেস্ট তিনি খেলতে পারেননি পেটের পীড়ার কারণে। তাসকিন ও শরিফুলের দেশে ফেরার কারণে দ্বিতীয় টেস্টের একাদশে পরিবর্তন থাকবে বেশ কয়েকটি। পেসার তাসকিন আহমেদের জায়গায় দেখা যেতে পারে আবু জায়েদ রাহিকে।

দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ঐতিহাসিক ওয়ানডে সিরিজ জয়ের পর প্রথম টেস্টে বাংলাদেশ হেরেছে ২২০ রানের ব্যবধানে। চারটি দিন লড়াই করলেও শেষ দিনে ধূসর ব্যাটিংয়ে কপালে জোটে লজ্জার হার। ২৭৪ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় মাত্র ৫৩ রানে। পোর্ট অব এলিজাবেথে এবার ভালো কিছুর আশায় মুমিনুল ব্রিগেড।

মন্তব্য

Beta version