-->
শিরোনাম
বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা টেস্ট সিরিজ

ঘরের মাঠে এবার টেস্ট পরীক্ষা

ক্রীড়া প্রতিবেদক
ঘরের মাঠে এবার টেস্ট পরীক্ষা

দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে টেস্ট সিরিজটা ছিল দুঃস্বপ্নেরই। পেসারদের স্বর্গরাজ্যে ছড়ি ঘুড়িয়েছেন স্পিনাররা। বিশেষ করে বললে কেশব মহারাজ। তার সঙ্গে ছিলেন হার্মার। সাদা পোশাকের সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে হোয়াইটওয়াশ হয়ে দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। টাইগারদের সামনে এবার নতুন টেস্ট সিরিজ। আর সেটা শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ঘরের মাঠেই। স্বাগতিক হিসেবে এবার কেমন করবে বাংলাদেশ, সেটাই দেখার বিষয়। বাংলাদেশের বিপক্ষে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে আগামী মে মাসের শুরুতেই ঢাকায় পা রাখবে শ্রীলঙ্কা জাতীয় ক্রিকেট দল। এরই মধ্যে ২১ সদস্যের প্রথমিক দল ঘোষণা করেছে লঙ্কান ক্রিকেট বোর্ড। ঘোষিত প্রাথমিক স্কোয়াডে নেই সম্প্রতি ভারত সফর করা একাধিক ক্রিকেটার। লাহিরু থিরিমান্নে ও চারিথ আসালাঙ্কা প্রাথমিক দল থেকে বাদ পড়েছেন। এছাড়া ঘরোয়া টুর্নামেন্টে ব্যাট হাতে দুর্দান্ত পারফর্ম করেও প্রাথমিক স্কোয়াডে ডাক পাননি কামিন্দু মেন্ডিস। তবে স্কোয়াডে জায়গা করে নিয়েছেন রোশন সিলভা ও ওসাদা ফার্নান্দো।

রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটে শ্রীলঙ্কায় সৃষ্ট অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ড বাংলাদেশে দল পাঠাবে কিনাÑ এ নিয়ে খানিক অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। এবার স্কোয়াড ঘোষণার মধ্য দিয়ে সব সংশয় উড়ে গেল। বাংলাদেশ সফর ঘিরে দেশটির ক্রিকেট বোর্ড প্রাথমিক স্কোয়াড দিয়েছে। যেখান থেকে দুই ম্যাচের সিরিজ খেলতে ঢাকায় পাঠানো হবে ১৮ ক্রিকেটারকে। লঙ্কানদের বিপক্ষে স্বাগতিক বাংলাদেশ ১৫ মে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে প্রথম টেস্ট খেলতে মাঠে নামবে। মিরপুরে দ্বিতীয় তথা সিরিজের শেষ টেস্ট ম্যাচ শুরু ২৩ মে। আগামী ৮ মে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের ঢাকায় পা রাখার কথা রয়েছে। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ঘরের মাঠে কেমন করবে বাংলাদেশ? পরিসংখ্যানে অনেক এগিয়ে থাকছে শ্রীলঙ্কা। এ ফরম্যাটে দুই দল মুখোমুখি হয়েছে ২২ বার। তাতে বাংলাদেশের হার ১৭টি। জয় মাত্র একটিতে। বাকি চার ম্যাচ হয়েছে ড্র। বাংলাদেশের একমাত্র জয় সেটাও ২০১৭ সালে। শ্রীলঙ্কার মাটিতে। কলম্বোয় অনুষ্ঠিত সেই ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছিল ৪ উইকেটের ব্যবধানে। প্রথম ইনিংসে সেই ম্যাচে শ্রীলঙ্কা করেছিল ৩৩৮ রান। জবাবে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৪৬৭ রান করেছিল বাংলাদেশ। সেঞ্চুরি করেছিলেন সাকিব আল হাসান। খেলেছিলেন ১৫৯ বলে ১১৬ রানের দারুণ ইনিংস।

ফিফটির দেখা পেয়েছিলেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মুশফিকুর রহিম ও সৌম্য সরকার। তামিম ১ রানের জন্য পাননি ফিফটির দেখা। শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় ইনিংসে করেছিল ৩১৯ রান। তাতে বাংলাদেশের জন্য জয়ের টার্গেট দাঁড়ায় ১৯১ রান। বাংলাদেশ এ লক্ষ্য স্পর্শ করতেও ঘাম ছুটে গিয়েছিল। উইকেট পড়েছিল ৬টি। ওপেনার তামিম ইকবাল করেন ৮২ রান। সাব্বির করেন ৪১ রান। শেষ পর্যন্ত মুশফিক ও মিরাজের জুটিতে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে আসে টেস্টে প্রথম জয়। সেই ঐতিহাসিক জয়ের পর শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বাংলাদেশ টেস্ট খেলেছে চার ম্যাচ। এর মধ্যে দুটিতে জয় ও দুটি হার। প্রথম ড্র ঘরের মাঠ চট্টগ্রামে। দ্বিতীয় ড্র শ্রীলঙ্কার মাটিতে পাল্লেকেলেতে। ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ টেস্ট খেলেছে ৮টি। হার ৬টিতে। বাকি দুই ম্যাচে ড্র। দুটি ড্রই চট্টগ্রামে। মিরপুরে অনুষ্ঠিত হয়েছে ৩ ম্যাচ। ৩টিতেই হার। ঘরের মাঠে সর্বশেষ ম্যাচ ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে। মিরপুরে অনুষ্ঠিত সেই ম্যাচে বাংলাদেশ হেরেছিল বাজেভাবে। কপালে জুটেছিল ২১৫ রানের বড় হার। এই মিরপুরেই আবার ইনিংস ও ২৪৮ রানে হারের রেকর্ডও রয়েছে বাংলাদেশের। সেটা অবশ্য ২০১৪ সালে।

২০১৮ সালের পর টেস্ট খেলতে বাংলাদেশে আসছে শ্রীলঙ্কা। খেলবে শুধু দুটি টেস্ট ম্যাচ। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেস্টের দুঃসহ স্মৃতি ঘরের মাঠে পুষিয়ে নিতে মুখিয়ে আছে মুমিনুল শিবির। যদিও ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশ ভালো করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। যে দলটির বিরুদ্ধে জয়ের রেকর্ডই ছিল না তাদের মাটিতে, সেখানে সিরিজ জিতে ফিরেছেন তামিমরা। কিন্তু টেস্ট সিরিজে অনেকটা খর্ব শক্তির প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে বাজেভাবে হারায় সমালোচনা তৈরি হয়েছে। ডারবান টেস্টে বাংলাদেশ হার মানে ২২০ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৫৩ রানে অলআউট হয়ে হইচই ফেলে দেন মুমিনুলরা। পোর্ট অব এলিজাবেথে চিত্র আরো খারাপ। তিন দিনেই হেরে যায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে এবার ৮০ রানে অলআউট টাইগাররা। কপালে জোটে হোয়াইটওয়াশের সঙ্গে ৩৩২ রানের হার। এবার সুযোগ ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ভালো করে টেস্টের ইমেজ উন্নত করা। সেই কাজটি কতটা সফলভাবে করতে পারবেন মুমিনুলরা, তা দেখা যাবে সামনে।

শ্রীলঙ্কার প্রাথমিক স্কোয়াড : দিমুথ করুনারত্নে (অধিনায়ক), ওসাদা ফার্নান্দো, পাথুম নিশাঙ্কা, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা (সহ-অধিনায়ক), অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস, কামিল মিসারা, কুশল মেন্ডিস, রশন সিলভা, নিরোশান ডিকওয়েলা, দীনেশ চান্দিমাল, রমেশ মেন্ডিস, চামিকা করুনারত্নে, কাসুন রাজিথা, বিশ^ ফার্নান্দো, দিলশান মাদুশঙ্কা, শিরান ফার্নান্দো, মোহাম্মদ সিরাজ, প্রবীণ জয়াবিক্রমা, লাসিথ অ্যাম্বুলদেনিয়া, জেফরে ভেন্ডারসে, সুমিন্দা লক্ষণ ও লাকসিতা মুনাসিংহা।

মন্তব্য

Beta version