-->

বিজয়ের রেকর্ড ছাপিয়ে রূপগঞ্জের জয়

ক্রীড়া প্রতিবেদক
বিজয়ের রেকর্ড ছাপিয়ে রূপগঞ্জের জয়

ব্যাট হাতে একাই লড়লেন। খেললেন ৭৩ রানের ঝলমলে ইনিংস। গড়লেন এক মৌসুমে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। তারপরও দিন শেষে মনটা খারাপ এনামুল হক বিজয়ের। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে বৃহস্পতিবার তার দল প্রাইম ব্যাংক হেরেছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের কাছে। সাভারের বিকেএসপিতে সুপার লিগের ম্যাচে রূপগঞ্জ জিতেছে ৩ উইকেটে। অন্যদিকে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে রূপগঞ্জ টাইগার্সকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। বিকেএসপির ৩ নম্বর গ্রাউন্ডে আবারো হেরে গেছে আবাহনী। এ ম্যাচে ২৭ রানে জিতেছে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স।

১২ ম্যাচ শেষে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে থাকল লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। ১২ ম্যাচে ২২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে শেখ জামাল। আর ১২ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তৃতীয় স্থানে আছে প্রাইম ব্যাংক। সাভারে বিকেএসপির ৪ নম্বর মাঠে ভেজা আউটফিল্ডের কারণে রূপগঞ্জ ও প্রাইম ব্যাংকের ম্যাচটি ৩৩ ওভারে নামিয়ে আনা হয়। ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন রূপগঞ্জের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। ব্যাট হাতে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের দুই ওপেনার এনামুল হক বিজয় ও তামিম ইকবাল। ছক্কা দিয়ে রানের খাতা খুলেছিলেন এবারের আসরে প্রথম খেলতে নামা তামিম। ৩ ওভার শেষে ২৪ রান পায় প্রাইম ব্যাংক। তবে চতুর্থ ওভারে প্রথমবারের মতো আক্রমণে এসে উইকেট তুলে নেন লিজেন্ডস অব রূপঞ্জের সাকিব আল হাসান। তামিমকে ৮ রানে থামান সাকিব। শর্ট মিড উইকেটে তানভীর হায়দারকে ক্যাচ দেন তামিম।

পরের ওভারে ৩ নম্বরে নামা শাহাদাত হোসেনকে খালি হাতে ফেরান লিজেন্ডস অব রূপঞ্জের আরেক বাঁহাতি স্পিনার নাবিল সামাদ। এতে ২৫ রানে ২ উইকেট হারায় প্রাইম ব্যাংক। এরপর মিডলঅর্ডার ব্যাটার মুমিনুল হককে নিয়ে রানের চাকা ঘোরান বিজয়। উইকেটে সেটও হয়ে গিয়েছিলেন তারা। ১৩ রান করা মুমিনুলকে আউট করে এ জুটি ভাঙেন মাশরাফি। নিজের পরের ওভারে প্রাইম ব্যাংকের অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুনকে ৩ রানে আউট করেন মাশরাফি। মাশরাফির জোড়া আঘাতের সঙ্গে উইকেট শিকারে মাতেন সাকিবও। ৬ নম্বরে নামা নাসির হোসেনকে ৪ রানে আউট করেন সাকিব। ফলে ৭২ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে প্রাইম ব্যাংক। এ অবস্থায় ষষ্ঠ উইকেটে ৬৭ রানের জুটি গড়েন বিজয় ও ইয়াসির আলী। এ জুটি গড়ার পথে এবারের আসরের সপ্তম হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন বিজয়। পরে ব্যক্তিগত ৭৩ রানে বিজয়কে আউট করেন লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের পেসার আল-আমিন হোসেন।

৭৩ রানের ইনিংসের সুবাদে ডিপিএলের ইতিহাসে এক মৌসুমে সর্বোচ্চ রানের মালিক হয়ে যান বিজয়। ছাপিয়ে যান সাইফ হাসানকে। ৪ বছর ধরে রেকর্ড নিজের দখলে রেখেছিলেন সাইফ। ২০১৮-১৯ মৌসুমে প্রাইম দোলেশ^রের হয়ে দারুণ সময় কাটে ডানহাতি এ ওপেনারের। ১৬ ম্যাচে ৬২.৬১ গড়ে ৮১৪ রান করেছিলেন তিনি। ৮০৫ রান নিয়ে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বিপক্ষে মাঠে নামেন এনামুল। এক মৌসুমের শীর্ষ রান সংগ্রাহক হতে ১০ রান দরকার ছিল তার। শুরুতেই তা স্পর্শ করেন তিনি। ১২ ম্যাচে ১২ ইনিংসে ২টি সেঞ্চুরি ও ৭টি হাফসেঞ্চুরিসহ ৭৩.১৬ গড়ে ৮৭৮ রান করেছেন বিজয়। ১২ ম্যাচের মধ্যে ৯ ম্যাচেই পঞ্চাশোর্ধ রান করেছেন দুর্দান্ত ফর্মে থাকা বিজয়। রেকর্ডের সীমানাটা আরো বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ আছে তার, সুপার লিগে আরো ৩টি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবেন তিনি। বিজয়ের পর আছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের নাঈম ইসলাম। ১১ ম্যাচে ২টি সেঞ্চুরি ও ৫টি হাফসেঞ্চুরিসহ ৭৮.২০ গড়ে ৭৮২ রান নিয়ে ২ নম্বরে আছেন তিনি।

বিজয়ের সঙ্গে বড় জুটি গড়া ইয়াসির থামেন ৩৯ রানে। ফলে ৩১.২ ওভারে সবক’টি উইকেট হারিয়ে ১৫২ রানের সংগ্রহ পায় প্রাইম ব্যাংক। রূপগঞ্জের সাকিব-ভারতের চিরাগ জনি ও মাশরাফি ২টি করে উইকেট নেন। ১৫৩ রানের জবাবে শুরুতেই বিপদে পড়ে রূপগঞ্জ। প্রাইম ব্যাংকের দুই স্পিনার মাহেদি হাসান ও রাকিবুল হাসানের বোলিং নৈপুণ্যে ৪২ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারায় তারা। এর মধ্যে ২টি উইকেট ছিল রাকিবুলের। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান সাব্বির রহমার টপঅর্ডারে ২৬ রান করেন। পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে উইকেটে গিয়ে বড় ইনিংস খেলতে পারেননি সাকিব। ৩৪ বলে ১টি চারে ২১ রান করেন তিনি। তার আগে চিরাগ ১৪ ও মাশরাফি ৬ রানে ফিরলে, মহাবিপদেই পড়ে রূপগঞ্জ। ৮৪ রানে সপ্তম উইকেট হারায় রূপগঞ্জ। এ অবস্থায় জয়ের জন্য শেষ ৩ উইকেটে ৭৭ বলে ৬৯ রান দরকার পড়ে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের। অষ্টম উইকেটে ৭৫ বল খেলে অবিচ্ছিন্ন ৭০ রান যোগ করে রূপগঞ্জকে দারুণ এক জয় এনে দেন তানভীর ও মুক্তার আলী। তানভীর ৩১ ও মুক্তার ৩৯ রানে অপরাজিত থাকেন। তানভীরের ইনিংসে ৪টি চার ও মুক্তারের ইনিংসে ২টি করে চার-ছক্কা ছিল। ম্যাচসেরা মুক্তার।

মন্তব্য

Beta version