-->

তামিম-জয়ের ব্যাটে স্বস্তি

ক্রীড়া প্রতিবেদক
তামিম-জয়ের ব্যাটে স্বস্তি

এক রানের জন্য অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের আফসোস ছিল অনেক। তবে টিম শ্রীলঙ্কা তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলেছে। প্রথম ইনিংসে দলটি পৌঁছেছে ৩৯৭ রানে। যার মধ্যে সিংহভাগ রানই ম্যাথিউসের। সেঞ্চুরির পর তিনি হাঁটছিলেন ডাবলের দিকে। ভাগ্য খারাপ, ১৯৯ রানে তাকে বিদায় নিতে হয় টেস্ট ইতিহাসের ১২তম অভাগা হিসেবে। শ্রীলঙ্কা বড় স্কোর গড়লেও চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে স্বস্তিতে বাংলাদেশ। কারণ শেষ বিকেলে ব্যাট করতে নেমে কোনো উইকেট হারাতে হয়নি স্বাগতিকদের। বিনা উইকেটে ৭৬ রান করেছে মুমিনুলরা। ওপেনার তামিম ও জয় দুজনই অবিচ্ছিন্ন। বাংলাদেশ পিছিয়ে ৩২১ রানে।

দ্বিতীয় দিনের নায়ক দুই দলের দুজন। ১৯৯ রান করে আলোচনায় শ্রীলঙ্কার অলরাউন্ডার ম্যাথিউস। আবার তাকে আউট করেই টেস্ট ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং করেছেন বাংলাদেশের অফ-স্পিনার নাঈম ইসলাম। ম্যাথিউস ছিলেন তার ষষ্ঠ শিকার। টেস্ট ক্যারিয়ারে তৃতীয়বারের মতো তিনি পেলেন ৫ উইকেটের দেখা। তবে ষষ্ঠ উইকেট এ প্রথমবারের মতো। প্রথম দিন শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ছিল ৪ উইকেটে ২৫৮ রান। আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটার ম্যাথিউস ও দিনেশ চান্দিমাল দ্বিতীয় দিনেও দারুণ শুরু করেন ব্যাট হাতে। এ জুটি ক্রমেই স্কোরকে সমৃদ্ধ করেন। চান্দিমাল পেয়ে যান ফিফটির দেখা। ৩০০ ছাড়িয়ে যখন শ্রীলঙ্কার রান তখন বাংলাদেশকে ব্রেক থ্রুু এনে দেন প্রথম দিনের মতো নাঈম ইসলাম। এক ওভারেই তিনি তুলে নেন ২ উইকেট। দলীয় ৩১৯ রানের মাথায় বিদায় নেন চান্দিমাল। অফ-স্টাম্পের বাইরে পিচ করা বল রিভার্স সুইপ করার চেষ্টায় ব্যাটে খেলতে পারেননি তিনি। এলবিডব্লিউর আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। ভাঙে ম্যাথিউসের সঙ্গে তার ২৮৭ বল স্থায়ী ১৩৬ রানের জুটি। রিভিউ নিতে দেরি করেননি চান্দিমাল। কিন্তু বাঁচতে পারেননি। ৩ ছক্কা ও ২ চারে ১৪৮ বলে ৬৬ রান করেন লঙ্কান এ মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান।

মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলে নাঈমকে সুইপ করে তিন রান নেন নিরোশান ডিকভেলা। কিন্তু এক বল পর ফিরে যান ওই রানেই। শরীরের খুব কাছের বল কাট করার চেষ্টায় সফল হননি। বল তার ব্যাট ফাঁকি দিয়ে ছোবল দেয় অফ-স্টাম্পে। ডিকভেলার রান ৩। লাঞ্চের পর ঝলসে ওঠেন সাকিব আল হাসান। ১ ওভারে তিনিও তুলে নেন ২ উইকেট। রমেশ মেন্ডিসের স্টাম্প এলোমেলো করার পরের বলেই লাসিথ এম্বুলদেনিয়াকে এলবিডব্লিউ করে দেন তিনি। ১১৭তম ওভারের দ্বিতীয় বলটি জোরের ওপর করেন সাকিব। নিচু হয়ে যাওয়া সোজা বল ব্যাটে খেলতে পারেননি রমেশ। বোল্ড হয়ে যান ১ রান করে। পরের বলটি হালকা ভেতরে ঢোকে বাঁহাতি এম্বুলদেনিয়ার জন্য। কিন্তু ব্যাটে বল লাগাতে পারেননি তিনি। জোরালো আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। ম্যাথিউসের সঙ্গে কথা বলে রিভিউ নেন ব্যাটসম্যান। ইমপ্যাক্ট ছিল আম্পায়ার্স কল, তাতে টিকে থাকে রিভিউ, তবে ফিরে যেতে হয় ব্যাটসম্যানকে। পরের ওভারে দেড়শতে পার রাখেন ম্যাথিউস, ২৯৩ বলে। ক্যারিয়ারে লঙ্কান এ মিডলঅর্ডারের ব্যাটসম্যানের এটি চতুর্থ দেড়শ’ ছাড়ানো ইনিংস।

ম্যাথিউসের সঙ্গে এরপর সঙ্গ দিতে পারেননি ফার্নান্দো। শরিফুরের বল হেলমেটে লাগে তার। রিটায়ার্ট হার্ট হয়ে ফেরেন সাজঘরে ৮৪ বলে ১৭ রান করে। আসিথা ফার্নান্দোকে বোল্ড করেন নাঈম ইসলাম। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন ম্যাথিউস। ব্যক্তিগত ১৯৯ রানের মাথায় ম্যাথিউসকে ফেরান সেই নাঈমই। ক্যাচ লুফে নেন সাকিব। ৩৯৭ বলের ইনিংসে ম্যাথিউস হাঁকান ১৯টি চার ও একটি ছক্কা। টেস্ট ক্যারিয়ারে ম্যাথিউসের ডাবল সেঞ্চুরি আছে একটি। সেটি ২০২০ সালে হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে, ২০০ নটআউট। বল হাতে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৬টি উইকেট নেন মিরাজের বদলে দলে ঢুকা নাঈম ইসলাম। টেস্ট ক্রিকেটে তৃতীয়বারের মতো ৫ উইকটে পেলেন তিনি। সাকিব তিনটি, তাইজুল নেন ১ উইকেট। শেষ বিকালে প্রথম ইনিঙসের ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। তামিম ইকবাল ও মাহমুদুল হাসান জয় দেখেশুনে করেন শুরুটা। দিন শেষে দুজনই অপরাজিত। আছেন ফিফটির পথে। ৫২ বলে পাচ চারে ৩৯ রানে তামিম আছেন অপরাজিত। ৬৬ বলে ৫টি চারে ৩১ রানে অপরাজিত জয়।

মন্তব্য

Beta version