-->
শিরোনাম

ম্যাথুস-চান্দিমালের ব্যাটে অস্বস্তি!

ক্রীড়া প্রতিবেদক
ম্যাথুস-চান্দিমালের ব্যাটে অস্বস্তি!

তৃতীয় দিন শেষেও দুজন ছিলেন অপরাজিত। চতুর্থ দিনেও ব্যাট হাতে শাসন করলেন পুরোদমে। গড়লেন ১৯৯ রানের জুটি। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস ও দিনেশ চান্দিমাল। এ দুজনের ব্যাটেই এখন চরম অস্বস্তিতে বাংলাদেশ। কারণ মিরপুর টেস্টে শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংসের রান হয়েছে ৫০৬। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৩৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে কাঁপাকাঁপি অবস্থা বাংলাদেশের। গতকাল বৃহস্পতিবার চতুর্থ দিনের প্রথম দুটি সেশন চান্দিমাল ও ম্যাথুস খেলেছেন স্বাচ্ছন্দ্যে। পান সেঞ্চুরিও। তিন অঙ্কে পৌঁছানোর পরও ব্যাট হাতে সাবলীল ছিলেন দুজন। তৃতীয় সেশনে এসে সাফল্য পায় বাংলাদেশের বোলাররা। ব্যক্তিগত ১২৪ রানের মাথায় দিনেশ চান্দিমাল বিদায় নেন এবাদতের বলে তামিমের হাতে ক্যাচ দিয়ে। এবাদত হোসেনের তৃতীয় উইকেটে ভাঙে ৪১৫ বল স্থায়ী ১৯৯ রানের জুটি।

আগের ডেলিভারির তুলনায় ইবাদতের একটু কম গতির ডেলিভারির নিচে যেতে পারেননি চান্দিমাল। যতটা তুলতে চেয়েছিলেন পারেননি, ঝাঁপিয়ে মুঠোয় জমান তামিম। ১৩৩ রানে অপরাজিত থাকা অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের তখন নতুন সঙ্গী নিরোশান ডিকভেলা। এর কিছুক্ষণ পর অবশ্য বিদায় নেন নিরোশান ডিকভেলা। তার আউট ছিল বেশ মজার। কারণ বাংলাদেশের বোলাররা আবেদন করেছিল স্টাম্পিংয়ের। কিন্তু আম্পায়ার রিপ্লে দেখে দেন কট বিহাইন্ড। সাকিব আল হাসানকে উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে এসে খেলেন নিরোশান ডিকভেলা। ব্যাটসম্যানের মুভমেন্ট বুঝতে পেরে বল অফ-স্টাম্পের অনেক বাইরে করেন অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার। ঠিকমতো ব্যাটে লাগাতে পারেননি ডিকভেলা। অনেকটা সেøা বল লিটন গ্লাভসে জমিয়ে ভেঙে দেন স্টাম্প। আবেদন করেন স্টাম্পিংয়ের। নিশ্চিত হতে তৃতীয় আম্পায়ারের কাছে পাঠান মাঠের আম্পায়ার। রিপ্লেতে দেখা যায়, বল ব্যাট স্পর্শ করে জমা পড়েছে লিটন দাসের গ্লাভসে। স্টাম্পড নয়, কট বিহাইন্ড আউট হন ডিকভেলা। এক চারে ৯ বলে ৯ রান করে ফেরেন তিনি। সাকিব ধরেন তার চতুর্থ শিকার।

এরপর ম্যাথুস একাই রানের চাকা সচল রাখলেও উইকেট পতন ছিল ধারাবাহিক। দলীয় ৫০১ রানের মাথায় রমেশ মেন্ডিস। এই উইকেটও নেন এবাদত হোসেন। ১১ বলে ১০ রান করে এলবির ফাদে পড়েন লঙ্কান টেলএন্ডার। পরের ওভারেই নিজের পঞ্চম উইকেট তুলে নেন সাকিব। তিন বল খেলেও রানের খাতা খুলতে না পারা প্রভীন জয়বিক্রমা ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে লিটনের হাতে। শেষ উইকেট আসিথা ফার্নান্দো। তিনি অবশ্য হয়ে যান রানআউট, ২ রান করে। তাতেই শেষ হয় শ্রীলঙ্কার ইনিংস। ব্যক্তিগত ১৪৫ রানে অপরাজিত থেকে যান ম্যাথুস। ৩৪২ বলের ইনিংসে তিনি হাঁকান ১২টি চার ও দুটি ছক্কার মার। চার বছর পর টেস্টে বল হাতে ৫ উইকেট শিকার করেন বাংলাদেশের সাকিব। বাকি চারটি উইকেট নেন পেসার এবাদত। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ করেছিল ৩৬৫ রান। জবাবে ম্যাথুস ও চান্দিমালের সেঞ্চুরিতে ৫০৬ রান করে শ্রীলঙ্কা। ১৪১ রানে পিছিয়ে থেকে দিনের শেষ বেলায় ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই দুর্দশায় পড়েন স্বাগতিকরা। ২৩ রানে হারায় ৪ উইকেট। ক্রিজে অপরাজিত দুই নির্ভরযোগ্য ব্যাটার লিটন ও মুশফিক। এ জুটিই ভরসা এখন বাংলাদেশের। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ষষ্ঠ ওভারে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ১১ বল খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি তামিম। টেস্টে দুই ইনিংসে প্রথমবারের মতো শূন্য দেখলেন দেশ সেরা এ ওপেনার। ফার্নান্দোর বলেই দুবার আউট তামিম।

এরপর অহেতুক রান আউটের শিকার নাজমুল হোসেন শান্ত। ১১ বলে তিনি করেন মাত্র ২ রান। দলীয় ১৯ রানে ফেরেন অধিনায়ক মুমিনুল হক। রাজিথার বলে তিনি ফেরেন রিক্ত হস্তে, শূন্যরানে। এরপর বিদায় নেন ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়ও। একটু থিতু হলেও ফার্নান্দোর বলে মেন্ডিসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ২৭ বলে ১৫ রান করে। ছোট্ট ইনিঙসে তিনি হাঁকান তিন চার। এর আগে গোটা দিন শ্রীলঙ্কার হয়ে ব্যাট হাতে শাসন করেন ম্যাথুস ও চান্দিমাল। দুজনই পান সেঞ্চুরি। চান্দিমাল ১২৪ রান করে বিদায় নিলে ধস নামে লঙ্কান ব্যাটিংযে। ৫০৬ রানে গুটিয়ে যায় তাদের ইনিংস। ১৪৫ রানে অপরাজিত থাকেন ম্যাথুস। চতুর্থ দিন শেষে বাংলাদেশ এখনো ১০৭ রানে পিছিয়ে। পঞ্চম দিনে বাংলাদেশ কতটা চমক দিতে পারে, তাই দেখার বিষয়। ১৬ বলে ১৪ রানে মুশফিক ও ১১ বলে ১ রানে লিটন আছেন অপরাজিত। প্রথম ইনিংসে এ দুজনের ২৭২ রানের জুটিতে মুখ রক্ষা হয়েছিল বাংলাদেশের। এবার টেস্টের শেষ দিনে এ দুজন কী পারবেন কিছু করে দেখাতে। নাকি অপেক্ষা করছে তিক্ত হার। আর সেটা হলে ১-০ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজ জিতে বিমান ধরবে লঙ্কান ক্রিকেটাররা।

মন্তব্য

Beta version