বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের প্লে-অফের সেমিফাইনালে স্কটল্যান্ডকে ৩-১ গোলে হারিয়ে কাতারে খেলার স্বপ্ন টিকিয়ে রাখল ইউক্রেন। ম্যাচ শেষে ইউক্রেনের এ জয়কে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির সব মানুষের প্রতি উৎসর্গ করেছেন ইউক্রেনের ম্যানেজার ওলেস্কান্দার পেট্রাকোভ। রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসনের পর এটাই ইউক্রেন জাতীয় দলের প্রথম কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলত ম্যাচ। স্কটল্যান্ডের মাটিতে ইউক্রেনের হয়ে গোলগুলো করেছেন আন্দ্রি ইয়ারমোলেনকো, রোমান ইয়ারেমচুক ও আরটেম ডোভিক। কাতারের টিকিট নিশ্চিতে রোববার প্লে-অফের ফাইনালে ওয়েলসের মুখোমুখি হবে ইউক্রেন।
পেট্রাকোভ বলেন, ‘এ জয় আমার জন্য বা আমার দলের জন্য নয়, এটাই পুরো দেশের জন্য। ইউক্রেনের জন্য এটি একটি বিশাল জয়। ইউক্রেনের মানুষকে এমন একটি জয় উপহার দিতে ছেলেরা সবকিছু দিয়ে চেষ্টা করেছে। সামরিক আগ্রাসনের সঙ্গে লড়াই করতে করতে ক্লান্ত, বিধ্বস্ত দেশটির মানুষ আমাদের এ জয়ের দিকে তাকিয়ে ছিল। তারা আমাদের ধন্যবাদ জানায়, আমরা তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছি। আমাদের সামনে এখনো ওয়েলস আছে। কিন্তু ইউক্রেনকে বিশ^কাপে নিয়ে যেতে সম্ভাব্য সবকিছুই আমরা করব।’ ম্যাচটি গত মার্চে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও যুদ্ধের কারণে ইউক্রেনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তা পিছিয়ে দেয় ফিফা। মূল একাদশে খেলা ছয়জন খেলোয়াড় এখনো ইউক্রেনিয়ান বিভিন্ন ক্লাবের সঙ্গে চুক্তি ধরে রেখেছে, যাদের গত চার মাসে কোনো ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা নেই। ম্যাচ শুরুর আগে ম্যানচেস্টার সিটির ডিফেন্ডার ওলেস্কান্দার জিনচেনকো কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন। সে সময় তিনি জানান, ইউক্রেনকে বিশ্বকাপে দেখার জন্য পুরো দেশ মুখিয়ে আছে।
ম্যাচের শুরুতেই ভিক্টর টিসিগানকোভ ও ইয়ারমোলেনকোর দুটি শট দুর্দান্ত দক্ষতায় রুখে দেন স্কটিশ গোলরক্ষক ক্রেইগ গর্ডন। ৩৩ মিনিটে রুসলাম মালিনোভস্কির থ্রু বল ইয়ারমোলেনকো দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ইউক্রেনকে এগিয়ে দেন। গত ৮ ম্যাচ ধরে অপরাজিত রয়েছে ইউক্রেন। ১৯৯৮ সালের পর প্রথমবারের মতো বিশ^কাপে খেলার স্বপ্নে এখন তারা বিভোর। বিরতির পর ৪ মিনিটের মধ্যে ওলেকসান্দার কারাভায়েভের ক্রসে বেনফিকা স্ট্রাইকার ইয়ারেমকচুক ব্যবধান দ্বিগুণ করলে স্কটল্যান্ড শিবিরে হতাশা নেমে আসে। স্কট ম্যাকটোনিমের ক্রসে জন মাকগিনের হেড পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। ৭৯ মিনিটে কালুম ম্যাকগ্রিগর স্কটল্যান্ডের হয়ে এক গোল শোধ করলেও তা হার এড়াতে পারেনি। ইনজুরি টাইমে ডোভিকের গোলে ইউক্রেনের জয় নিশ্চিত হয়।
মন্তব্য