তিন দিনের প্রস্তুতি ম্যাচ। সিরিজ শুরুর আগে এমন ম্যাচে গা-গরম করে থাকেন ক্রিকেটাররা। যদিও এমন ম্যাচের রেজাল্ট হয় না সাধারণত। হয়ে থাকে ড্র। বাংলাদেশ দলের সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রেসিডেন্ট একাদশের সঙ্গে অনুষ্ঠিত ম্যাচও হয়েছে অনুমিত ড্র। তবে বাংলাদেশ তৃপ্ত এ প্রস্তুতি ম্যাচে। এবার টাইগারদের চোখ ১৬ জুন থেকে শুরু হওয়া প্রথম টেস্টে। প্রস্তুতি ম্যাচে সবার প্রস্তুতি অবশ্য আদর্শ হয়নি। প্রথম ইনিংসে শূন্য রানে ফিরে যাওয়া মুমিনুল হককে ব্যাটিং অনুশীলনের জন্য দ্বিতীয় ইনিংসে নামানো হয় ওপেনিংয়ে। কিন্তু নিজেকে হারিয়ে খুঁজতে থাকা ব্যাটসম্যান আত্মবিশ^াসের রসদ পাননি এদিনও। রানআউট হয়ে যান তিনি ৪ রানে। মূল কৌতূহল ছিল অবশ্য শেষ দিনে মোস্তাফিজকে ঘিরে। দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশ ৬৬ ওভার বোলিং করলেও সেদিন বোলিং করেননি এ বাঁহাতি পেসার। সেদিন তিনি ডিউক বলের বোলিং নিয়ে নেটে আলাদা করে কাজ করেন বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ডের সঙ্গে।
শেষ দিনে রোববার তিনি মাঠে নামেন বোলিংয়ে। ৪ উইকেটে ২০১ রান নিয়ে দিন শুরু করা উইন্ডিজ প্রেসিডেন্টস একাদশ ধাক্কা খায় শুরুতেই। প্রথম ওভারে মোস্তাফিজ ধরেন দুই শিকার। পরে আরেকটি উইকেট নিয়ে মোস্তাফিজ থামেন ৬ ওভারে ৩৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে। এ বোলিংয়ে বার্তা দিলেন, প্রায় দেড় বছর পর টেস্ট খেলতে তিনি প্রস্তুত। উইন্ডিজ প্রেসিডেন্টস একাদশ ইনিংস ঘোষণা করে ৮ উইকেটে ৩৫৯ রানে। প্রথম ইনিংসে ১৬২ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলা তামিম ইকবাল আর দ্বিতীয় ইনিংসে নামেননি ব্যাটিংয়ে। জয় ও মুমিনুলকে ওপেন করায় বাংলাদেশ। ১৬ বলে ৪ রান করে রানআউট হন মুমিনুল। প্রথম ইনিংসে শূন্য করা জয় খুব সাবলীল না হলেও উইকেট আঁকড়ে থাকেন। অপরাজিত থাকেন তিনি ৫৩ বলে ৯ রান করে। ব্যাটিং অনুশীলনের জন্য তিনে নামানো মিরাজ সুযোগটা কাজে লাগান ভালোই। অপরাজিত থাকেন তিনি ৫১ বলে ৩২ রান করে। ২০ ওভারে বাংলাদেশ ১ উইকেটে ৪৭ করার পর ড্র হয় ম্যাচ। ৩ উইকেটশিকারি পেসার এবাদত হোসেন চৌধুরী ম্যাচ শেষে জানান, প্রস্তুতি নিয়ে সন্তুষ্ট দল। তিনি বলেন, ‘তিন দিনের প্রস্তুতি ম্যাচ শেষ হলো আজকে। প্রস্তুতি সবার খুব ভালো হয়েছে। ব্যাটসম্যানরা সবাই খুব ভালো করেছে। তামিম ভাই দেড়শ করেছেন, শান্ত ৫০ করেছে। ব্যাটিং অর্ডারে সবাই ভালো করেছে।’
‘বোলিংয়ে আমরা ভালো করেছি, শুরুটা ভালো হয়েছে। মোস্তাফিজ যোগ দিয়ে আজকে প্রথম ওভারেই ২ উইকেট এবং সব মিলিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছে। প্রস্তুতির দিক থেকে তিন দিনের ম্যাচটি আমরা উপভোগ করেছি।’ উইন্ডিজের সঙ্গে টেস্ট পরিসংখ্যানে বাংলাদেশের অবস্থান খুব একটা ভালো নয়। ১৮ বারের মোকাবিলায় বাংলাদেশের জয় মাত্র চারটিতে। ড্র দুটি। বাকি ১২ ম্যাচে জয় পেয়েছে উইন্ডিজ। ক্যারিবীয়দের মাটিতে বাংলাদেশ খেলেছে ৮ ম্যাচ। তাতে বাংলাদেশের জয় দুটি। হার ৫টি। এক ম্যাচ হয়েছে ড্র। উইন্ডিজে বাংলাদেশ সর্বশেষ টেস্ট খেলেছে সেই ২০১৮ সালে। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশ হয়েছিল হোয়াইটওয়াশ। নর্থ সাউন্ডে প্রথম টেস্টে বাংলাদেশ হেরেছিল ইনিংস ও ২১৯ রানের ব্যবধানে। দ্বিতীয় টেস্টে ইনিংস হার হয়নি। তারপরও টাইগাররা হেরেছিল ১৬৬ রানের বড় ব্যবধানে। আগামী ১৬ জুন নর্থ সাউন্ডে শুরু বাংলাদেশ ও উইন্ডিজের মধ্যকার প্রথম টেস্ট। ২৪ জুন দ্বিতীয় টেস্ট। এরপর শুরু হবে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। ২ জুলাই প্রথম টি-টোয়েন্টি। ৩ ও ৭ জুলাই পরের দুই ম্যাচ। এরপর আছে ওয়ানডে সিরিজ। ১০ জুলাই প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ। ১৩ জুলাই দ্বিতীয় ওয়ানডে। ১৬ জুলাই প্রভিডেন্সে শেষ ওয়ানডে দিয়ে পূর্ণাঙ্গ উইন্ডিজ সফর শেষ করবে বাংলাদেশ।
মন্তব্য