সেন্ট লুসিয়া বলেই হয়তো আশাবাদী হওয়া। কেননা ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে অন্য ভেন্যুতে আর যাই হোক এখানে রানের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যাটারদের একটা সখ্যতা রয়েছে। অতীতের সেই ধারাবাহিকতা রেখে শুক্রবার শুরু হওয়া দ্বিতীয় টেস্টের শুরুতে তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। কিন্তু দিন শেষে সেই আগের বাংলাদেশ। ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে। ১ উইকেট স্কোরবোর্ডে ৬৭ রান জমা করা দলটিব প্রথম ইনিংসে ২৩৪ রানে অল আউট হয়েছে। জবাবেব দিন শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিবজ বিনা উইকেটে ৬৭ রান করেছে। ফলে প্রথম দিনে বাংলাদেশ ১৬৭ রানের এগিয়ে রয়েছে।
প্রথম টেস্টে বিপর্যয়ের কারণে দ্বিতীয় টেস্টে দুই পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষের আমন্ত্রণে ব্যাট হাতে নামা বাংলাদেশের শুরুটা ভালো ছিল। তামিম ইকবাল ও মাহমুদুল হাসান জয় ভালো করার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। যদিও জয় খুব বেশি সময় ক্রিজে থাকতে পারেননি তবে দ্বিতীয় উইকেটে তামিম ও নাজমুল হোসেন শান্ত ভালোভাবেই এগুচ্ছিলেন। তাদের ব্যাটিংয়ে প্রথম ইনিংসের হতাশা দূর করার ইঙ্গিত ছিল। ভালোভাবেই তারা ওয়েস্ট ইন্ডিজ পেসারদের মোকাবেলা করছিলেন। তারই সুবাদে প্রথম সেশনটা বাংলাদেশের হয়ে ছিল।
শুধুমাত্র মাহমুদুল হাসান জয়ের উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ লাঞ্চে গিয়েছিল। লাঞ্চের সময়টা যেনো সব গড়বড়ের মূল। নতুন করে শুরু করতে না করতেই সেই বিপর্যয়। আর রোধও করা যায়নি। একে একে সব আউটের পথে হেঁটেছেন। সদ্য সাবেক হওয়া অধিনায়ক মমিনুল হকে জায়গায় দলে আসা আনামুল হকও তার ব্যতিক্রম নন। তবে মমিনুলের তুলনায় ভালো করেছেন। ২৩ রান করেছেন।
এদিকে ক্রিজে নেমেই আনামুল হক রেকর্ড গড়ে ফেলেছেন। এর ফলে প্রায় আট বছর পর টেস্টে ফিরলেন তিনি। ৭ বছর ৯ মাস ১১ দিন পর টেস্টে ফিরেছেন, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এটি একটি রেকর্ড। এর আগে দীর্ঘতম বিরতি দিয়ে মাঠে ফেরার কীর্তি ছিল নাজমুল হোসেনের। ২০০৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর ভারতের বিপক্ষে অভিষেক টেস্ট খেলার পর নিজের দ্বিতয়ি টেস্ট খেলেছিলেন ২০১১ সালের ১৭ ডিসেম্বর। ঠিক সাত বছর পর টেস্টে প্রত্যাবর্তন হয়েছিল তার।
বাংলাদেশের ইনিংসে একটা মাত্র হাফ সেঞ্চুরি হয়েছে। আর তা করেছেন লিটন দাস। ৫৩ রানের ইনিংস তার। মাত্র ৭০ বলে তিনি এ ইনিংসটি খেলেন। ওপেনার তামিম ইকবালের সংগ্রহ ছিল ৪৬ রান। এছাড়া নাজমুল হক শান্ত করেছেন ২৬।
বাংলাদেশের ইনিংসটা আরো কম রানে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। দুইশ রান স্কোরবোর্ডে জমা হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছিল। তবে লোয়ার অর্ডারের দুই ব্যাটার মূলত দুই বোলার এবাদত হোসেন ও শরিফুল ইসলামের কীর্তিতে বাংলাদেশের ইনিংস দুইশ পার হয়। শুধু তাই নয়, ২৫০ রানের কাছাকাছি পৌঁছে যায়। নবম উইকেটে তারা ৩৬ রান যোগ করেন। বিধ্বংসী এক ইনিংস উপহার দেন শরিফুল। মাত্র ১৭ বলে স্কোরবোর্ডে ২৬ রান জমা করেন তিনি। আর এবাদত ৩৫ বলে করেছেন ২১ রান।
প্রথম টেস্টে সিঙ্গেল ডিজিটের রানের সংখ্যা বেশি থাকলেও এ টেস্টে তা থেকে রক্ষা পেয়েছে বাংলাদেশ। এ টেস্টের প্রথম ইনিংসে মাত্র চার ব্যাটার সিঙ্গেল ডিজিটের রান করেছে। অধিনায়ক সাকিব হাসানের নেতৃত্বে সেখানে সাকিবের (৮) পাশাপাশি আরো রয়েছেন নুরুল হাসান (৭), মেহেদি হাসান মিরাজ (৯) ও খালেদ আহমেদ (১)।
দ্বিতীয় দিনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং শুরু করবেন আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটার ক্রেগ ব্রাথওয়েট (৩০) ও জন ক্যাম্পবেল (৩২)। শরিফুল ইসলাম, খালেদ আহমেদ, সাকিব আল হাসান, এবাদত হোসেন ও মেহেদি হাসান মিরাজ বোলিং করলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসে প্রথম দিনে কোনো ক্ষত তৈরি করতে পারেননি।
মন্তব্য