সেন্ট লুসিয়া টেস্টের দ্বিতীয় দিন পার হয়েছে কেবলই। ম্যাচের অর্ধেক সময় পার হওয়ার আগেই ফলাফলের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই সেই ইঙ্গিতে বাংলাদেশের সামনে হার চোঙ রাঙাচ্ছে। বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে করা ২৩৪ রানের জবাবে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৫ উইকেটে ৩৪০ রান করেছে। ফলে দ্বিতীয় দিন শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১০৬ রানে এগিয়ে গেছে। সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয় ফর্মে থাকা কাইল মায়ার্স রয়েছেন ক্রিজে। ১২৬ রানে অপরাজিত তিনি। তার সঙ্গে ২৬ রানে অপরাজিত জোসুয়া দা সিলভা।
শনিবার ড্যারেন স্যামি স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজ যখন দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করেছিল তখন তারা ১৬৭ রানে পিছিয়ে ছিল। আগের দিনের অপরাজিত দুই উদ্বোধনী ব্যাটার ক্রেগ ব্রাথওয়েট ও জন ক্যাম্পবেল ব্যাটিং শুরু করেছিলেন। তারা অবশ্য খুব বেশিদূর দলকে এগিয়ে নিতে পারেননি, তবে দিন শেষে দল ১০৬ রানে এগিয়ে রয়েছে।
ক্রেগ ব্রাথওয়েট ও জন ক্যাম্পবেল আগের দিন দারুণ ব্যাটিংয়ের ইঙ্গিত দিলেও দ্বিতীয় দিন বাংলাদেশের সামনে হুমকি হতে পারেননি। তাদের দ্রুতই ফিরিয়ে দিয়েছিলেন মেহেদি হাসান মিরাজ ও শরিফুল ইসলাম। তাদের পথ ধরে সাফল্য পেয়েছিলেন খালেদ আহমেদ। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ওয়েস্ট ইন্ডিজকে স্বল্প রানে বেঁধে ফেলার একটা স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছির। কিন্তু সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ পায়নি। বরং কাইল মায়ার্সের ব্যাটিং দ্বিতয়ি দিনটা বাংলাদেশের জন্য হতাশায় রূপ নিয়েছে।
১৩২ রানে যখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ চতুর্থ উইকেট হারায় তখন জার্মেই ব্লাকউডের সঙ্গে যোগ দেন কাইল মায়ার্স। আর তখন থেকেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে জড়ো হওয়া মেঘটা ধীরে ধীরে সরে যেতে থাকে। এ জুটি ১১৬ রান জড়ো করে। ৪০ রান করেছিলেন ব্লাকউড। মূলত ব্লাকউড উইকেট ধরে রাখার দায়িত্বটা ভালোভাবে পালন করেছেন। তাইতো ৪০ রানের ইনিংসটি খেলতে ১২১ বলের মোকাবেলা করেছেন।
খষ্ঠ উইকেটে জোসুয়া দা সিলভাকে নিয়েও মায়ার্স দারুণ একটা জুটি গড়েছেন। এ জুটি এরই মধ্যে ৯২ রান জমা করেছে। মায়ার্স তার ১২৬ বলের ইনিংসটি খেলেছেন ১৮০ বলে। ১৫টি বাউন্ডারি ও দুটো ওভার বাউন্ডারি মেরেছেন তিনি। মায়ার্সের সঙ্গে অপরাজিত থাকা জোসুয়াও উইকেট ধরে রাখার দায়িত্বটা ভালোভাবেই সামাল দিয়েছেন। তাইতো দিন শেষে তার নামের পাশে ২৬ রান দেখা গেলেও বলের দিকে তাকালে বোঝা যায় কত বড় দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ১০৬ বল খেলেছেন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিনা উইকেটে ৬৭ রানে দিন শেষ করেছিল। দ্বিতীয় দিনের শুরুতে ব্রাথওয়েট ও ক্যাম্পবেল জুটি দলকে শতরান পর্যন্ত নিয়ে যান। আর তখনই জুটিতে ভাঙ্গন ধরান শরিফুল। ৪৫ রানে ক্যাম্পবেল শরিফুলের বলে উইকেটরক্ষক নুরুল হাসানের হাতে ধরা পড়েন। এ জুটি বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরই ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপর দিয়ে একটা ঝড় বয়ে যায়। এ ঝড়ে একদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে তেমনি বাংলাদেশের বোলারদের মুখে শুরু হওয়া হাসি ক্রমেই চওড়া হতে থাকে। একে একে ফিরে যান ক্রেগ ব্রাথওয়েট, রেমন রেইফার ও এনক্রুমাহ বোনার। ৩২ রানে এই তিন ব্যাটার ফিরে যান। মূলত দুই রানে মধ্যে বিদায় হন এই তিন ব্যাটার। ব্রাথওয়েট ৫১ রানে মেহেদি হাসান মিরাজের বলে বোল্ড হন। এটা ছিল তার ২৭তম টেস্ট সেঞ্চুরি। পরের ওভারেই দুই ব্যাটার রেমন রেইফার ও এনক্রুমাহ বোনারকে আউট করেন খালেদ আহমেদ। রেইফার ২২ রান করলেও এনক্রুমাহ রানের খাতা খুলতেই পারেননি।
মেহেদি হাসান মিরাজ আবারো আঘাত হানেন। নতুন ব্যাটার জার্মেই ব্লাকউডকে ৪০ রানে ফিরিয়ে দেন। ততক্ষণে কাইল মায়ার্স ক্রিজে থিুত হয়ে গেছেন। সেখান থেকে তাকে আর নাড়ানো যায়নি। আর যায়নি বলেই বাংলাদেশের সামনে এখন ধীরে ধীরে চাপ বাড়তে শুরু করেছে।
অ্যান্টিগা টেস্ট তিন দিনেই জিতে নিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দ্বিতীয় টেস্টের মেয়াদ হয়তো বাড়বে কিন্তু ম্যাচ বাঁচানো বাংলাদেশের পক্ষে কঠিনই হয়ে যাবে। আসলেই এরই মধ্যে কঠিন হয়ে পড়েছেও।
মন্তব্য