মেলবোর্নে ১৯৯২ সালের পুনরাবৃত্তি হলো না। বরং পাকিস্তানের স্বপ্ন ভঙ্গ করে শিরোপা জয়ের উল্লাসে মেতেছে ইংল্যান্ড। পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো টি-২০ বিশ^কাপের শিরোপা জিতলো ইংল্যান্ড। পাকিস্তানের করা ১৩৭ রানের জবাবে ইংল্যান্ড এক ওভার বাকি থাকতে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ইংল্যান্ড। এ নিয়ে ইংল্যান্ড দ্বিতীয়বারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপের শিরোপা জয় করলো। অন্যদিকে পাকিস্তান দ্বিতীয়বার ফাইনালে হারলো।
১৯৯২ সালের পুনরাবৃত্তি হওয়ার সম্ভাবনা যে তৈরি হয়নি তা নয়। বরং সেই হাসি হাসার সুযোগ ঠিকই তৈরি করেছিল পাকিস্তান। কিন্তু একটা ইনজুরি সেই সম্ভাবনায় পানি ঢেলে দিলো। ইংল্যান্ডের ইনিংসে ১২.৩ ওভারের ঘটনা। স্বল্প রানের পুঁজি নিয়েও পাকিস্তান ভালোভাবেই চেপে ধরেছিল ইংল্যান্ডকে। ক্রমেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে থাকা হ্যারি ব্রুককে শাহীন আফ্রিদির হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন শাদাব খান। ক্যাচ ঠিকই ধরেছেন আফ্রিদি তবে পাকিস্তানের সমর্থকদের হৃদস্পন্দন তখন যেনো থমকে দিয়েছিলেন। কেননা ক্যাচ নিতে গিয়ে যে দলের ভরসার প্রতীক আফ্রিদি পায়ে ব্যথা পান।
প্রকৃত অবস্থা বুঝতে সমর্থকদের কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হলো। ১৫.১ ওভারে আফ্রিদির হাতে বল তুলে দিলেন অধিনায়ক বাবর। ৩০ বলে তখন ইংল্যান্ডে দরকার ৪১ রান। এ অবস্থায় বাবর তার বাকি থাকা দুই ওভার করতে পারলে ম্যাচের চিত্র ভিন্ন হতে পারতো। কিন্তু এক বলের বেশি করতে পারলেন না আফ্রিদি। আর তখনই মূলত পাকিস্তান ম্যাচ থেকে ছিটকে যায়। পায়ের ব্যথার কারণে আফ্রিদি আর বল করতে পারেননি। মাঠ ছেড়ে চলে যান। সে সঙ্গে পাকিস্তানের শিরোপা জয়ের স্বপ্নও নিয়ে যান মাঠের বাইরে।
আফ্রিদির পরিবর্তে বল করতে এসে ইংল্যান্ডের জয়ের পথটা সহজ করে দিলেন ইফতিখার আহমেদ। ওই ওভারে ইফতিখারের করা পাঁচ বল থেকে ১৩ রান তুলে নেয় ইংল্যান্ড। পরের ওভারে মোহাম্মদ ওয়াসিমের কাছ থেকে ১৩ রান নিয়ে ইংল্যান্ড জয়ের কাজটা সহজ করে ফেলে। বেন স্টোকস ৪৯ বলে ৫২ রানে অপরাজিত থাকেন। মঈন আলী শেষ পর্যন্ত থাকতে পারেননি। তবে ১২ বলে ১৯ রান করার পাশাপাশি দলকে সবচেয়ে বড় জুটি গড়তে সহায়তা করেছেন। স্টোকসের সঙ্গে পঞ্চম উইকেট জুটিতে ৪৮ রান করেন তারা। এছাড়া হ্যারি ব্রুক ২৩ বলে ২০ রান করেছেন। আর ওপেনার জস বাটলারের সংগ্রহ ছিল ১৭ বলে করেছিলেন ২৬।
এর আগে ইংল্যান্ডের আমন্ত্রণে পাকিস্তান ব্যাটিংয়ে নেমে ভালোই শুরু করেছিল। অন্তত টুর্নামেন্টের শুরুর দিকে তাদের ওপেনাররা যতটা ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছিলেন এ ম্যাচে তার থেকে কিছুটা ব্যতিক্রম ছিলেন। ২৯ রানের পার্টনারশিপ ছিল মোহাম্মদ রিজওয়ান ও বাবর আজমের। রিজওয়ান ১৫ রান করেছিলেন। বাবর আজমের সংগ্রহ ছিল ৩২ রান। মিডল অর্ডার শন মাসুদ ছাড়া অন্যরা নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। ২৮ বলে ৩৮ রান করেন মাসুদ। ফলে দলের সংগ্রহটা সমৃদ্ধ হয়নি পাকিস্তানের। ইফতিখার আহমেদ বড় সর্বনাশটা করেন পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনে। ৬ বল খেলেছেন। কিন্তু স্কোরবোর্ডে কোনো রান জমা করতে পারেননি। ফলে ১৩৭ রানে শেষ হয়ে পাকিস্তানের ইনিংস।
সাম কুরান ছিলেন ইংল্যান্ডের সফল বোলার। তার বোলিংয়ে পাকিস্তান ব্যাটাররা স্বস্তি পায়নি। ৪ ওভারে মাত্র ১২ রান দিয়েছেন তিনি। ৪ ওভার বোলিং করে তুলে নেন ৩ উইকেট। এছাড়া আদিল রশিদ ও ক্রিস জর্ডান দুটো করে উইকেট শিকার করেন।
ভোরের আকাশ/আসা
মন্তব্য