-->
শিরোনাম

এবার ৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের জার্মান পতাকা বানিয়ে সবাইকে চমকে দিলেন

মাগুরা প্রতিনিধি
এবার ৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের জার্মান পতাকা বানিয়ে সবাইকে চমকে দিলেন
মাগুরায় প্রিয় দল জার্মানির সাড়ে ৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পতাকা বানিয়ে চমকে দিয়েছেন আমজাদ হোসেন

আমজাদ হোসেন, মাগুরা: জার্মানি থেকে আনা ওষুধ খেয়ে মাগুরার আমজাদ হোসেন দুরারোগ্য রোগ থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। তারপর থেকেই তিনি ফুটবলে জার্মানিকে সমর্থন জানিয়ে আসছেন। সেইবার ভয়ঙ্কর ব্যাধিকে হার মানানো আমজাদের বয়স ৭০-এ ঠেকেছে। বয়সের ভার জাঁকিয়ে বসলেও ফুটবল আর জার্মান দলের প্রতি ভালোবাসা কমেনি এক বিন্দু। ফুটবল বিশ্বকাপের উন্মাদনার মধ্যে এবার প্রিয় দলের সাড়ে ৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পতাকা বানিয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছেন আমজাদ হোসেন।

 

সদর উপজেলার চাউলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের নিশ্চিন্তপুর স্কুল মাঠে শুক্রবার বেলা ১১টায় দীর্ঘ এ পতাকা প্রদর্শন করে এটিকে বিশ্বের ‘সবচেয়ে বড়' পতাকা বলে দাবি করেছেন তিনি।

 

একই ইউপির ঘোড়ামরা গ্রামের দরিদ্র কৃষক আমজাদ ২০০৬ সালে প্রথম জার্মানির দেড় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পতাকা তৈরি করেন। সেই পতাকা ২০১০ সালের বিশ্বকাপে আড়াই কিলোমিটারে গিয়ে দাঁড়ায়।

 

এর সঙ্গে আরও এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্য যুক্ত করে ২০১৪ সালে আমজাদ তৈরি করেন সাড়ে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ পতাকা; সবশেষ ২০১৮ সালে পতাকার দৈর্ঘ্য দাঁড়িয়েছিল সাড়ে পাঁচ কিলোমিটারে। গতবারের চেয়ে পতাকার দৈর্ঘ্য দুই কিলোমিটার বাড়াতে প্রায় এক লাখ টাকা খরচ হয়েছে বলে আমজাদ জানান।

 

জার্মানি দলের প্রতি ভালোবাসার কারণ জানতে চাইলে আমজাদ বলেন, ১৯৮৭ সালে একটি কঠিন রোগে আক্রান্ত হন তিনি। জার্মানির ওষুধ খেয়েই সেই রোগ থেকে মুক্তি পান। এরপর থেকেই তিনি জার্মানের ভক্ত। একইভাবে জার্মান ফুটবল দলকেও তিনি ভালোবাসেন।

 

প্রিয় দলের সবচেয়ে বড় পতাকা বানিয়ে ভালোবাসার সেই প্রকাশ ঘটান দাবি করে আমজাদ আরো বলেন, এবার নতুন দুই কিলোমিটার পতাকা তৈরি করতে কাপড়ে খরচ হয়েছে ৭০ হাজার টাকা। বাকি ৩০ হাজার গেছে দর্জির মজুরি আর যাতায়াতে।

 

স্থানীয়রা জানান, আমজাদ দরিদ্র হলেও জার্মানির পতাকা বানানোর জন্য এর আগে তিনি বাড়ির তিন শতক জমিও বিক্রি করেছেন। ২০১৪ সালে জার্মান রাষ্ট্রদূত মাগুরায় তার বাড়িতে ওই পতাকা দেখতে গিয়েছিলেন।

 

এ সময় তাকে জার্মান দূতাবাসের পক্ষ থেকে সংবর্ধনাও দেওয়া হয়; একই সঙ্গে জার্মান ফুটবল দলের ফ্যানক্লাবের আজীবন সদস্যপদ দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন আমজাদ।

 

এবারের বিশ্বকাপে জার্মান চ্যাম্পিয়ন হলে বাড়িতে কয়েকশ' লোককে খাওয়ানোসহ গোটা পতাকা নিয়ে মাগুরা শহরে মিছিল করবেন বলে জানান।

 

মাগুরা ফুটবল অ্যাকাডেমির পরিচালক সৈয়দ বারিক আনজাম বার্কি বলেন, ‘‘আমজাদ জার্মান-পাগল মানুষ। দরিদ্র কৃষক হলেও বিশ্বকাপ ফুটবল এলে তিনি জার্মানির দীর্ঘ পতাকা বানিয়ে চমক সৃষ্টি করেন। প্রতি বছর তার পতাকার দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পায়।”

 

চাউলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজার রহমান বলেন, আমজাদ এ বছর সাড়ে ৭ কিলোমিটার পতাকা তৈরি করে চমক সৃষ্টি করেছে। তার এ জন্য বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশসহ তার নিজ এলাকা পরিচিতি লাভ করছে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version