কাতার বিশ্বকাপের ফেভারিট ব্রাজিল আজ সোমবার বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে স্টেডিয়াম ৯৭৪-এ গ্রুপের আরেক বিজয়ী সুইজারল্যান্ডের মুখোমুখি হচ্ছে। দুই দলই যেহেতু প্রথম ম্যাচে জয় দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করেছে তাই আজ ম্যাচ জিতে নকআউট পর্ব নিশ্চিতের লক্ষ্যেই মাঠে নামবে।
দারুণ পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে ব্রাজিল প্রথম ম্যাচেই সমর্থকদের প্রত্যাশা পূরণে অনেকটাই সফল হয়েছে। যদিও দলের সুপারস্টার নেইমার ডান গোড়ালির ইনজুরিতে পড়ে গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে গেছেন। সার্বিয়ার বিরুদ্ধে ২-০ গোলের জয়ে অবশ্য নেইমার গোল পাননি। তিতের তুরুপের তাস টটেনহ্যাম হটস্পার তারকা রিচার্লিসনই সেলেসাওদের এগিয়ে নিয়ে গেছেন; করেন ২ গোল।
বিশ্বকাপের শুরুতেই তিতেসহ পুরো দলই ইঙ্গিত দিয়েছিল ব্রাজিল এখন আর শুধু নেইমার নির্ভর নয়, তার প্রমাণ প্রথম ম্যাচেই মিলেছে। সে কারণেই আগের দুই বিশ্বকাপে যে চাপ নিয়ে নেইমার মাঠে নেমেছিলেন তার থেকেই অনেকটাই নির্ভার হয়ে এবার তিনি নেমেছিলেন।
কিন্তু আবারো সেই ইনজুরি তার ছায়াসঙ্গী হয়েই থেকে গেল। এবারের টুর্নামেন্টে ব্রাজিলের প্রথম ম্যাচের প্রতিপক্ষ সার্বিয়াকে ডার্ক হর্স হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিল। কিন্তু সেলেসাওরা তাদের আধিপত্য দিয়ে সার্বিয়াকে দাঁড়াতেই দেয়নি। দ্বিতীয়ার্ধে রিচার্লিসেনর জোড়া গোলে সার্বিয়া হেরে যায়।
বিশ্বকাপের শুরুতে ব্রাজিলিয়ান ও ব্রিটিশ গণমাধ্যমে রিচার্লিসনকে মূল একাদশে খেলানো নিয়ে যে আলোচনা শুরু হয়েছিল তার জবাব অনেকটাই দিয়ে দিয়েছেন ২৫ বছর বয়সি এ তারকা। পুরো ব্রাজিল দলের ছন্দময় ফুটবলে সমর্থকরা তাদের প্রিয় দলকে ফাইনালে দেখার আশা করতেই পারেন।
এর মাধ্যমে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা টানা ৮ জয় নিশ্চিত করেছে। ২০২১ কোপা আমেরিকার ফাইনালের পর থেকে তারা অপরাজিত রয়েছে। এ ৮ জয়ে ব্রাজিল ২৮ গোল দিয়েছে। ব্রাজিল বেশকিছু সুযোগ মিস করায় তা সার্বিয়ার জন্য সৌভাগ্য বয়ে এনেছে। অন্যদিকে সুইজারল্যান্ড তাদের প্রথম ম্যাচে ক্যামেরুনের বিরদ্ধে নিজেদের ভালোই প্রমাণ করেছে। গোলরক্ষক ইয়ান সোমারকে খুব বেশি পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি ক্যামেরুন।
নতুন কোচ মুরাত ইয়াকিন সেই একই কৌশলে সুইসদের এগিয়ে নিয়ে গেছেন। এ জয়ে ইয়াকিন সন্তুষ্ট হতেই পারেন, তার ওপর দল কোনো গোল হজম করেনি। শেষ ১০ ম্যাচে এনিয়ে দ্বিতীয়বার সুইজারল্যান্ড কোনো গোল হজম না করে ম্যাচ শেষ করেছে।
তবে সেই ম্যাচগুলোর বেশিরভাগই নেশন্স লিগে শীর্ষ দলগুলোর বিপক্ষে ছিল। ইউরো ২০২০-এর বাছাই পর্বে শেষ ছয়টি ম্যাচ সুইসরা মাত্র এক গোল খেয়েছিল। ওই সময়ই ইয়াকিন দলের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। চার বছর আগে গ্রুপ পর্বে তারা ব্রাজিলের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছিল। ক্যামেরুনের বিপক্ষে জয়ী হয়ে টানা চার ম্যাচে তারা অপরাজিত রয়েছে। এ জয়ে স্পেন ও পর্তুগালের মতো দলও রয়েছে। ব্রাজিলের বিপক্ষে এ সংখ্যা পাঁচ করতে পারলে নকআউট পর্বও নিশ্চিত হয়ে যাবে।
প্রথম ম্যাচের গোলদাতা বিল এম্বোলোর জন্য গোলের মুহূর্তটি ছিল অন্যরকম এক অনুভ‚তি। নিজের জন্মভ‚মির বিরুদ্ধে গোল করে তিনি দলকে প্রথম জয় উপহার দিয়েছেন। এদিকে গোড়ালির লিগামেন্ট ইনজুরিতে পড়ে গ্রুপ পর্ব মিস করা নেইমারের অনুপস্থিতিতে ব্রাজিল শিবিরে কিছুটা হলেও অস্বস্তি বিরাজ করছে।
এ কারণে তিতেকে কিছুটা কৌশলগত পরিবর্তন আনতে হচ্ছে। মধ্যমাঠে ফ্রেডকে বদলি বেঞ্চ থেকে উঠিয়ে আনা হতে পারে। রাইটব্যাক দানিলোও একই ইনজুরিতে ছিটকে গেছেন। এ কারণে অভিজ্ঞ ডানি আলভেসের সামনে সুযোগ আছে ২০১৪ সালের পর বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামার। রিয়াল মাদ্রিদের এডার মিলিটাওয়ের ওপর রক্ষণভাগ সামলানোর দায়িত্ব আসতে পারে।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য