ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দশে থাকা দলগুলোর মধ্যে একমাত্র নেদারল্যান্ডস ও ইংল্যান্ড ছাড়া সব দলই এবারের কাতার বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বে হারের স্বাদ গ্রহণ করেছে। সেই আত্মবিশ্বাসকে পুঁজি করেই আজ নকআউট পর্বেও এগিয়ে যেতে চায় গ্যারেথ সাউথগেটের ইংল্যান্ড। আল বায়াত স্টেডিয়ামে শেষ ষোলোতে তাদের প্রতিপক্ষ আফ্রিকান চ্যাম্পিয়ন সেনেগাল।
ওয়েলসকে শেষ ম্যাচে হারিয়ে গ্রুপ-বির শীর্ষ দল হিসেবেই ইংল্যান্ড শেষ ষোলোর টিকিট পেয়েছে। এই প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে সেনেগালের মোকাবিলা করতে যাচ্ছে থ্রি লায়ন্সরা।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গোলশূন্য ড্রয়ের পর ইংল্যান্ডকে নিয়ে অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল। অথচ ইরানকে ৬-২ গোলে হারিয়ে দারুণভাবে বিশ^কাপ শুরু করেছিল ইংলিশরা। আক্রমণভাগের দারুণ সেই ছন্দ দ্বিতীয় ম্যাচে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে ২০১৮ সেমিফাইনালে খেলা দলটির ম্যানেজার হিসেবে সাউথগেট তার অভিজ্ঞতা আরো একবার কাজে লাগিয়ে ঠিকই তৃতীয় ম্যাচে আবারো শক্তিশালীভাবেই ফিরে এসেছেন।
গত বছর ইউরোতে ঘরের মাঠে ফাইনালে ইতালির কাছে হেরে অল্পের জন্য শিরোপা হাতছাড়া হয়েছে। বড় আসরের শিরোপা খরা কাটাতে মরিয়া পুনরুজ্জীবিত ইংল্যান্ড বারবার একই ভুল আর করতে চায় না। ১৯৬৬ সালে একমাত্র পাওয়া শিরোপাটা আবারো ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চায় সাউথগেটের উজ্জীবিত শিষ্যরা।
আফ্রিকান কোনো দলের বিরুদ্ধে গত ১০ ম্যাচে হারেনি ইংল্যান্ড। সে কারণেই আজ সেনেগালের বিরুদ্ধে কাগজে-কলমে ফেভারিট হিসেবেই মাঠে নামবে ইংলিশরা।
কাতারে খেলতে আসার আগে কয়েকদিন অবশ্য সাউথগেটের দলের সময়টা মোটেই ভালো যায়নি। উয়েফার নেশন্স লিগে হেরে দ্বিতীয় টায়ারে নেমে যাওয়ার পর বিশ্বকাপের প্রস্তুতিও শঙ্কার মধ্যে পড়ে। তবে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের দুই তারকা রাশফোর্ড ও হ্যারি ম্যাগুয়েরের ফর্মে ফেরা কাতারে ইংল্যান্ডের সাফল্যের মূল চাবিকাঠি।
গত কয়েক বছর ধরে বেশ কিছু টুর্নামেন্ট খেলার অভিজ্ঞতাই কাল কাজে লাগাতে চায় ইংল্যান্ড।
সেনেগালও আফ্রিকান চ্যাম্পিয়ন হিসেবে মধ্যপ্রাচ্যে খেলতে এসে নিজেদের লক্ষ্য ঠিকই অর্জন করে ফেলেছে। নকআউট পর্ব খেলার প্রাথমিক লক্ষ্য পূরণের পর এবার আরো এগিয়ে যাওয়ার পালা। এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে তারা খেলতে যাচ্ছে। ইকুয়েডরের সঙ্গে ৭০ মিনিটে অধিনায়ক কালিদু কুলিবালির গোলে সেনেগালের ২-১ ব্যবধানের জয় নিশ্চিত হয়। আর এতেই মিলে নকআউটের টিকিট।
এর আগে নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে প্রথম ম্যাচে পরাজয়ের পর কাতারকে ৩-১ গোলে হারিয়েছিল সেনেগাল। ২০০২ বিশ্বকাপে দুর্দান্ত খেলা সেনেগাল দলের দুই সদস্য আলিয়ু সিজে ও এল হাডজি ডিউফ এবারের দলটিতে কোচ ও সহকারী কোচের দায়িত্ব পালন করছেন।
এখন এই দুজনের লক্ষ্য ইংল্যান্ডকে হটিয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করা। কাতারে ইনজুরির কারণে সিজে দলে পাননি মূল তারকা সাদিও মানেকে। কিন্তু ২০১৫ সালে সেনেগালের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে দারুণ একটি প্রতিভাবান ও কৌশলী দল তিনি হাতে পেয়েছেন। একসঙ্গে সবাই মিলে দলকে পুনর্গঠন করে প্রথমবারের মতো আফ্রিকান নেশন্স কাপের শিরোপা ঘরে তুলেছেন।
ইউরোপিয়ান কোনো দলের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে নয়টি ম্যাচের মধ্যে আটটিতেই পরাজিত হয়েছে সেনেগাল। তাদের একমাত্র জয়টি এসেছিল সুইডেনের বিরুদ্ধে।
সেনেগাল শুধু সাদিও মানে নয়, এভারটনের ইদ্রিসা গুয়েকে হলুদ কার্ডের কারণে কাল দলে পাবে না। শেষ ম্যাচে গোড়ালির ইনজুরিতে পড়েছেন মিডফিল্ডার চেইকু কুয়াটে। তার স্থানে লিস্টার সিটির নামপালিস মেন্ডির খেলার সম্ভাবনাই বেশি।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য