-->
শিরোনাম

ভারতকে স্তব্ধ করল বাংলাদেশ, মিরাজ বীরত্বে রুদ্ধশ্বাস সিরিজ জয়

শামীম হাসান
ভারতকে স্তব্ধ করল বাংলাদেশ, মিরাজ বীরত্বে রুদ্ধশ্বাস সিরিজ জয়

শামীম হাসান: সেই মেহেদী হাসান মিরাজে আবার উদ্ধার বাংলাদেশ। কাল দ্বিতীয় ওয়ানডেতে প্রথম ওয়ানডের মতো ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছিল বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে তো দলকে উদ্ধার করেছেন, বল হাতে ফসকে যাওয়া ম্যাচকে নিজেদের করেছেন তিনি। তার অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্সে বাংলাদেশ দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ভারতকে ৫ রানে হারিয়েছে। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে বাংলাদেশের করা ২৭১ রানের জবাবে ভারত ৯ উইকেটে ২৬৬ রান করে।

 

এ জয়ের ফলে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ বাংলাদেশ এক ম্যাচ হাতে রেখেই জিতে নিলো। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ ভারতের বিপক্ষে টানা দ্বিতীয় ওয়ানডে সিরিজে জয় পেলো। ২০১৫ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশ ২-১ ব্যবধানে জিতেছিল। আগামী ১০ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের শেষ ম্যাচ। বাংলাদেশের সামনে ভারতকে হোয়াইট ওয়াশ করার হাতছানি এখন।

 

গত অক্টোবর-নভেম্বরে অনুষ্ঠিত টি-২০ সিরিজে বাংলাদেশ ভালো করতে পারেনি। টুর্নামেন্ট থেকে নাস্তানাবুদ হয়ে ফিরেছিল। এই ভারতের কাছেও হেরেছিল বাংলাদেশ। তবে ওয়ানডে সিরিজে মাঠে

 

নামতেই নিজেদেরকে আবার ফিরে পেয়েছে। র‌্যাংকিংয়ে ওপরের দিকে থাকা ভারতকে পরপর দুই ম্যাচে বাংলাদেশ নাস্তানাবুদ করেছে।

 

বুধবার মিরপুর স্টেডিয়ামে দিবারাত্রির ম্যাচে মুদ্রাভাগ্যে জয় পেয়ে বাংলাদেশ আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু খেলা শুরু হতে না হতেই বাংলাদেশ বুঝতে পারে সিদ্ধান্ত সঠিক হয়নি। একের পর

 

এক উইকেট হারাতে থাকে তারা। স্কোর বোর্ডে ৬৯ রান জমা হতে না হতেই শীর্ষ ছয় ব্যাটার ফিরে যান। আগের ম্যাচের মতো এ ম্যাচে ব্যাটকে তরবারিতে রূপ দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তার সঙ্গে ছিলেন মাহমুদুল্লাহ। তাদের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে ভারতীয় বোলাররা লাইন লেন্থ হারিয়ে বসে। যার ফলে একের পর এক বল মাঠের বাইরে ঠিকানা খুঁজে নেয়। সপ্তম উইকেটে তারা ১৪৮ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। মাহমুদুল্লাহ ৯৬ বলে ৭৭ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলেন। সাত বাউন্ডারিতে সাজানো ছিল তার ইনিংসটি। অন্যদিকে মিরাজ তার ক্যারিয়ারের প্রথম তিন অঙ্কের রানের দেখা পান। ৮৩ বলে তিনি তিন অঙ্কের জাদুকরী মাইলফলকে পৌঁছাতে আটটি বাউন্ডারির পাশাপাশি চারটি ওভার বাউন্ডারি মেরেছিলেন। এই সেঞ্চুরিতে মেহেদী রেকর্ডবুকেও স্থান করে নিয়েছেন। অষ্টম বা তার পরে ব্যাট হাতে নেমে দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে তিনি সেঞ্চুরি করার কৃতিত্ব দেখিয়েছেন।

 

বিশাল রানে নিচে চাপা দিয়ে শুরু থেকেই বল হাতে ভারতের ওপর চেপে বসে বাংলাদেশের বোলাররা। কিছু বুঝে উঠতে না উঠতে দুই নির্ভরযোগ্য ওপেনার বিরাট কোহলি ও শিখর ধাওয়ানকে থামিয়ে দেন। এবাদতের বলে বোল্ড হন বিরাট কোহলি। আর শিখর ধাওয়ানকে মিরাজের হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন মোস্তাফিজুর রহমান।

 

শ্রেয়াস আইয়ের কিছুটা প্রতিরোধ গড়লেও অন্য প্রান্তে থাকা ব্যাটারদের স্বস্তি দেয়নি বাংলাদেশের বোলাররা। দ্রুত আরো দুই উইকেট হারায় তারা। ফলে ৬৫ রানে ৪ উইকেট খোয়ায় ভারত। পঞ্চম উইকেটে অক্ষর প্যাটেলকে নিয়ে শ্রেয়াস আইয়ের ক্রমেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছিলেন। একে একে তারা স্কোরবোর্ডে ১০৭ রান জমা করেন। তারা আরো ভয়ঙ্কর রূপ নেয়ার আগে পর্দায় আসেন সেই মেহেদী হাসান মিরাজ। তার বলে শ্রেয়াস আফিফ হোসেনের হাতে ধরা পড়েন। ক্রিজ ছাড়ার আগে তিনি ১০২ বলে ৮২ রান করেন। ছয় বাউন্ডারির পাশাপাশি তিনটি ওভার বাউন্ডারি মারেন তিনি। অন্যদিকে অক্ষর প্যাটেল বল প্রতি রান করে গেছেন। ৫৬ বলে করেছেন ৫৬। দুই বাউন্ডারির পাশাপাশি তার ইনিংসে তিন ওভার বাউন্ডারি ছিল।

 

শেষ সময়ে রোহিত শর্মা দারুণভাবে ভারতকে ম্যাচে ফিরিয়ে এনেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারেননি। ২৬৬ রানে থমকে যায় তারা। মাত্র ২৮ বলে ৫১ রান করেন তিনি। বাংলাদেশ জয় পায় ৫ রানে।

 

ভোরের আকাশ/আসা

মন্তব্য

Beta version