টেস্ট ক্রিকেটকে বর্তমানে অন্য মাত্রায় নিয়ে গেছে ইংল্যান্ড। টেস্টের সনাতন ধারাই পাল্টে ফেলেছে ইংলিশরা। টেস্ট ক্রিকেটকে দিয়েছে টি-টোয়েন্টির আমেজ। পুরোনো সেই ব্যাকরণ মেনে ভালো বলকে সমীহ দেখিয়ে শুধু আলগা ডেলিভারিকে শায়েস্তা করার চিরায়ত ধারা থেকে বেরিয়ে আগ্রাসী মেজাজে প্রতিপক্ষকে দুমড়েমুচড়ে দিচ্ছে ক্রিকেটের জনকরা।
পাকিস্তান সফরে প্রথম টেস্টে প্রথম দিনেই ৪ উইকেটে ৫০৬ রান তুলে ফেলেছিলেন ইংলিশ ব্যাটাররা। ওভারপ্রতি ৭-৮ তুলে ক্রলি-ব্রæকরা দেখিয়েছিলেন, টেস্ট মানেই ম্যাড়মেড়ে ব্যাটিং নয়। ভারতীয় দলেও তো লোকেশ রাহুল, বিরাট কোহলি, শ্রেয়াস আইয়ার, রিশভ পন্তের মতো একঝাঁক দুর্দান্ত উইলোবাজ আছেন। চাইলে তারাও করতে পারেন ইংলিশদের মতো আগ্রাসী আর অতি আক্রমণাত্মক টেস্ট ব্যাটিং।
বাংলাদেশের তুলনামূলক কমজোরি বোলিং শক্তির বিপক্ষে আক্রমণাত্মক হতে চাইলে যে হওয়া সম্ভব, দুদিন আগে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের পিচে সেটা দেখিয়েছেন ইশান কিশান। ১৩১ বলেই খেলেছেন ২১০ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস। আজ থেকে যে প্রথম টেস্ট শুরু হচ্ছে, সেখানেও কি অমন আক্রমণাত্মক মনোভাব দেখাবে ভারতীয়রা? টেস্টের আগে ভারতের ভারপ্রাপ্ত টেস্ট অধিনায়ক লোকেশ রাহুল বলেন, ‘আমার মনে হয়, সেটি তাদের (ইংলিশদের) জন্য কাজ করছে। প্রতিটি দলেরই নিজস্ব পন্থা আছে। যেসব দল ভালো করছে, তাদের কাছ থেকে আমরা সবাই শিখতে পারি।
তারা কীভাবে পারফর্ম করছে, তাদের জন্য কী কাজে দিচ্ছে। যেমনটি বললাম, সবসময় আপনি একই অ্যাপ্রোচে এগোতে পারবেন না। আপনি কোথায় আছেন, কন্ডিশন কেমন (এগুলো বিবেচনায় নিতে হবে)।’ রাহুল যোগ করেন, ‘এটা আসলে যে যেভাবে দেখবেন। একজন ক্রিকেটার হিসেবে এটিকে আমি বেপরোয়া মনে করি না। তাদের একটা নির্দিষ্ট মানসিকতা আছে। ভেবেচিন্তেই ইংলিশরা করছে এমন। তারা খেলোয়াড়দের সমর্থন দিচ্ছে, যারা নিজেদের কাজটি করছে। দলের জন্য কাজ করার ক্ষেত্রে আসলে কীভাবে করছেন, তাতে কিছু যায় আসে না।
আপনার দল, আপনার দেশের জন্য ফল আনতে চাইবেন। প্রতিটি ক্রিকেটারেরই এ মানসিকতা থাকে। ক্রিকেট বদলাচ্ছে। কীভাবে খেলবেন, সেটির নির্দিষ্ট কোনো উপায় ঠিক করা নেই। এটা আসলে খেলোয়াড়দের ওপর, ক্রিজে তারা কোনটি সবচেয়ে ভালো মনে করছে দলের জন্য। দল হিসেবে, নেতা হিসেবে আপনি সেটিকে সমর্থন করবেন শুধু।’
তবে কি আপনার দলও অমন মানসিকতা নিয়ে নামবে? লোকেশ রাহুলের জবাব, ‘আমরা আগে থেকেই নির্দিষ্ট কোনো মানসিকতা নিয়ে নামব না। হ্যাঁ, কোনো ভেন্যুর রেকর্ড ইতিহাস থেকে আপনি কিছু পয়েন্ট নোট করবেন। তবে দুই দলই কীভাবে খেলছে, সেটি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সাহসী, আগ্রাসী হয়ে ফল আনার চেষ্টা করব।’ যেহেতু এ সিরিজ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ। তাই ভারত অধিনায়কও জিততে মুখিয়ে আছেন। তাই তারও ইচ্ছে আগ্রাসী ক্রিকেট খেলার।
তবে অলআউট না গিয়ে পরিবেশ-পরিস্থিতি আর নিজ দলের অবস্থা বুঝে লক্ষ্য পরিকল্পনা প্রণয়নের কথা তার মুখে, ‘টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ উতরে যাওয়ার ব্যাপার আছে আমাদের। আমাদেরও আগ্রাসী হতে হবে। আমরা জানি, আমাদের অবস্থান কোথায়, ফাইনালে যেতে কী করতে হবে। যেমনটি বললাম, নির্দিষ্ট দিনে সবকিছু বিবেচনা করব। এটা টেস্ট ক্রিকেটে প্রতিটি দিন, প্রতিটি সেশনে দলের চাহিদা বিবেচনা করতে হবে। নিজেদের সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করে উপভোগ করতে হবে।’
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য