সাফ ট্রফি জয়ে বছরটি স্মরণীয় করেছে নারী ফুটবল দল

ক্রীড়া ডেস্ক
সাফ ট্রফি জয়ে বছরটি স্মরণীয় করেছে নারী ফুটবল দল
ফাইল ফটো

২০২২ সালটি যে বাংলাদেশের নারী ফুটবল দলের ঐতিহাসিক একটি বছর, সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। নেপালে অনুষ্ঠিত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথমবারের মতো শিরোপা জয়ের মাধ্যমে গোটা জাতিকে গৌরবান্বিত করেছে বাংলাদেশের নারী ফুটবল দল। ২০১৬ সালের পর সাফে এটি ছিল গোলাম রব্বানী ছোটনের শিষ্যদের দ্বিতীয় প্রচেষ্টা। সেপ্টেম্বরে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালায় অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টের ফাইনালে চারবারের রানার্সআপ স্বাগতিক নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে শিরোপা নিশ্চিত করে বাংলাদেশ নারী দল। এর আগে পাঁচবারের টানা চ্যাম্পিয়ন ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছেছিল নেপাল। ফলে টুর্নামেন্টের ষষ্ঠ আসরে এসে আবসান ঘটে ভারতীয় নারীদের একচেটিয়া রাজত্বের।

 

এর আগে অবশ্য দক্ষিণ এশীয় ফুটবলে বয়সভিত্তিক ট্রফি জয় করলেও অধরা ছিল মুল শিরোপা। এবারই প্রথম সিনিয়র বিভাগের শিরোপা জয়ে সক্ষম হয় টাইগ্রেসরা। ফাইনালের পথে বাংলাদেশ নারী দল গ্রুপ পর্বে মালদ্বীপকে ৩-০, পাকিস্তানকে ৬-০ এবং ভারতকে ৩-০ গোলে পরাজিত করে। সেমিফাইনালে দুর্বল ভুটানকে ৮-০ গোলে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। সবচেয়ে বড়কথা পুরো টুর্নামেন্টে ২৩ গোল করা বাংলাদেশ মাত্র একটি গোল হজম করেছে। শিরোপা জয়ের পাশাপাশি টুর্নামেন্টের সবগুলো পুরস্কারও জিতে নেয় বাংলাদেশের ফুটবলাররা। টাইগ্রেস অধিনায়ক ‘গোল মেশিন’খ্যাত সাবিনা খাতুন টুর্নামেন্টের ভেল্যুয়েবল প্লেয়ার খেতাব লাভ করেন। টুর্নামেন্টে দুই ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেন সাবিনা। প্রথমটি গ্রুপ পর্বে পাকিস্তানের বিপক্ষে এবং দ্বিতীয়টি ভুটানের বিপক্ষে সেমিফাইনালে। টুর্নামেন্টে সর্বমোট ৮ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কারও জিতে নিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাবিনা। এছাড়া পুরো আসরে মাত্র একটি গোল হজম করা বাংলাদেশ দলের গোল রক্ষক রূপনা চাকমা র্নিাচিত হন টুর্নামেন্ট সেরা গোলরক্ষক। একইসঙ্গে টুর্নামেন্টের ফেয়ার প্লে পুরস্কারটি জিতে নেয় বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। এদিকে পুরুষদের ঘরোয়া ক্লাব ফুটবলের শীর্ষ আসর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) শিরোপা জয় করেছে বসুন্ধরা কিংস। এটি ছিল ক্লাবটির হ্যাটট্রিক শিরোপা।

 

হকি : প্রথমবারের মতো আকর্ষণীয় ফ্র্যাঞ্চাজি টুর্নামেন্ট হকি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজনের মাধ্যমে বছরটি বেশ জাঁকজমকভাবে শেষ করেছে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন। এ টুর্নামেন্টের মাধ্যমে নতুন এক যুগে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশের হকি। প্রথমবারের মতো আয়োজিত এ টুর্নামেন্টের শিরোপা জয় করেছে একমি চট্টগ্রাম। মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত রোমঞ্চকর ফাইনালে মোনার্ক মার্ট পদ্মাকে হারিয়ে শিারোপা জয় করে একমি চট্টগ্রাম। ২-২ গোলে নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হওয়ায় পেনাল্টি শুটআউটের মাধ্যমে জয় পরাজয় নির্ধারিত হয়। সেখানে ৪-৩ গোলে জয়ের মাধ্যমে শিরোপা নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম।

 

টেবিল টেনিস : চলতি বছরের মে মাসে অনুষ্ঠিত সাউথ এশিয়ান জুনিয়র অ্যান্ড ক্যাডেট টেবিল টেনিস চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথমবারের মতো স্বর্ণ জয়ের মাধ্যমে নতুন এক ইতিহাস রচনা করেছে বাংলাদেশ। মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টের ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে স্বর্ণপদক জয় করে বাংলাদেশ।

 

আরচারি : চলতি বছর তুরস্কের কোনিয়ায় ৫৫ দেশের অংশ গ্রহণে অনুষ্ঠিত পঞ্চম ইসলামিক সলিডারিটি গেমসে আরচারিতে তিনটি পদক জয় করেছে বাংলাদেশ। গেমসে রোকসানা আকতার, শ্যামলী রায় ও পুষ্পিতা জামানকে নিয়ে গঠিত বাংলাদেশ মহিলা কম্পাউন্ড দল রৌপ্যপদক জয় করে। ফাইনাল রাউন্ডে তারা ২২২-২২৯ পয়েন্টে হেরে যায় বোস্তান উকার ইয়েসিম, সুজার আইসে ও ইলদিও সেভিমের সমন্বয়ে গড়া স্বাগতিক তুরস্কের কাছে। এছাড়া রিকার্ভের পদক নির্ধারণী ম্যাচে দিয়া সিদ্দিকী, নাসরিন আকতার ও বিউটি রায়ের সমন্বয়ে গঠিত বাংলাদেশ নারী দল ৬-২ সেট পয়েন্টে উজবেকিস্তানের আবদুসসাত্তোরোভা জিওদাখন, আবদুসসাত্তোরোভা জেবিনিসো এবং হামরোয়েভা নিলুফারকে হারিয়ে ব্রোঞ্জপদক জয় করে। পুরুষ রিকার্ভের পদক নির্ধারণী ম্যাচে আলমুসা আব্দুল রহমান, আলসুবাই রাশেদ ও আলভি মনসুরকে নিয়ে গঠিত সৌদি আরবকে ৬-০ সেট পয়েন্টে হারিয়ে বাংলাদেশকে ব্রোঞ্জ পদক এনে দেন রুমান সানা, হাকিম আহমেদ রুবেল ও সাগর ইসলাম।

 

ভোরের আকাশ/আসা

মন্তব্য