একটা সময় দাবি করা হতো, ভারতের আইপিএলের পরই দ্বিতীয় স্থানে আছে বিপিএল। সময়ের প্রবাহতায় সেই দাবি এখন ফাঁকা বুলি। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) সেই আগের জৌলুস নেই। বিপিএলে এখন ভালোমানের বিদেশি ক্রিকেটার আসতে চান না, সেটা এখন দিনের আলোর মতো পরিষ্কার ব্যাপার।
কেন এমন হলো? দেশের সেরা একটি ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টের কেন এই হাল? এবারের বিপিএলে আসর শুরুর আগে এমন প্রশ্নটাই আসছে বেশি করে। অব্যবস্থাপনা, অদক্ষতা, অনিয়ম, অদূরদর্শিতার কারণে যে বিপিএল এই জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে; এ নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই।
বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানও বেশ বিরক্ত বিপিএলের এমন অধঃপতনে। কেন বিপিএলকে আমরা আন্তর্জাতিক পর্যায়ের টুর্নামেন্টের কাতারে রাখতে পারিনি? এমন প্রশ্নে সাকিবের সোজাসাপ্টা উত্তর, ‘পারিনি নাকি চাইনি, জানি না, বলাটা কষ্টকর। চাইলে না পারার কোনো কারণ আমি দেখি না। আমার মনে হয় আমরা সৎ মনে কখনো চাইনি কিছু করতে এখন পর্যন্ত। বাজেট নেই, কারণ আমরা বাজেট তৈরি করতে পারিনি। যদি তৈরি করতে পারতাম। মান অর্জন করতে পারতাম, অবশ্যই এই বাজেটটা অনেক বড় হওয়ার কথা ছিল।’
সাকিব যোগ করেন, ‘গ্রামের এমন কোনো প্রত্যন্ত অঞ্চল দেখবেন না, যেখানে ক্রিকেট খেলা হচ্ছে না। এমন তো নয় যে, এটার জনপ্রিয়তা নেই। ১৬-২০ কোটি মানুষের একটা দেশে এত পছন্দের একটা খেলা, এটার বাজারটা থাকবে না এটা খুবই দুঃখজনক। মানে আমি অন্তত বিশ্বাস করি না।’
সাকিব মনে করছেন, ব্যর্থতাটা ম্যানেজমেন্টের। তার কথা, ‘আমার ধারণা এটা মার্কেটিংয়ের জায়গা থেকে বড় একটি ফেইলিউর (ব্যর্থতা)। যে কারণে আমরা সেই রকম একটা বাজার তৈরি করতে পারিনি। (ডিআরএস নেই) বাজে সংকট সম্ভবত। সদিচ্ছা থাকলে কোনো কিছু থেমে থাকার কারণ দেখি না। আমি তো কোনো কারণই দেখি না ডিআরএস না থাকার, তিন মাস আগে ড্রাফট বা অকশন না হওয়ার এবং দলগুলো ২ মাস আগে ঠিক হবে না। খেলোয়াড়রা এভেইলেবল থাকবে।’
‘এখন এক প্লেয়ার এক দিন আসবে, দুই দিন পর চলে যাবে। কে কখন আসবে কখন যাবে, কেউ জানে না। ড্রেস পায়নি প্লেয়াররা। আমি আপনাদের নিউজেই দেখেছি। একটা যা-তা অবস্থা। এর থেকে আমাদের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল) আরো ভালোভাবে হয়। কারণ তারা আগে থেকেই টিমটা গোছাতে পারে। আরো আগে থেকে জানে যে, টিমটা কী হচ্ছে এবং তারা সেভাবে প্রস্তুতি নিতে পারে।’
এরপরই বোমা ফাটান সাকিব। বলেন, বিপিএলে যা হচ্ছে, সেটা চাইলে এক দিনেই ঠিক করা সম্ভব। সাকিবের কথা, ‘আমাকে যদি প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব দেয়া হয় বিপিএলের, আমার বেশিদিন লাগবে না। আমার ধারণা এক থেকে দুই মাস লাগবে সর্বোচ্চ সবকিছু ঠিক করতে, খুব বেশি হলে। দুই মাসও লাগার কথা না, দুই মাস অনেক দূরের কথা বলছি। ‘নায়ক’ সিনেমা দেখেছেন না? এক দিনেও অনেক কিছু করা সম্ভব। যে করতে পারে, সে সব করতে পারে।’
‘এই পুরো সবকিছু বাদ দিয়ে আবার ড্রাফট হবে, অকশন হবে, ফ্রি টাইমে বিপিএল হবে, সব আধুনিক টেকনোলজি থাকবে। ব্রডকাস্ট ভালো থাকবে। হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভেন্যু থাকবে।’
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য