২০১৪ সাল। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য ভুলে যাওয়ার মতো এক বছর। পুরোটা সময়ে নেই দলের কোনো সাফল্য। ২০১২ সালে এশিয়া কাপের ফাইনালে ওঠা দলটা এই আসরে বিদায় নিল সবার আগে। ঘোর অমানিশার সেই সময়ে দলের অধিনায়ক হলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। নড়াইল এক্সপ্রেসের হাত ধরে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সুসময়ের শুরু।
প্রথমবার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলা কিংবা কোনো আইসিসি টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে বাংলাদেশ গিয়েছিল সেই মাশরাফির অধিনায়কত্বের দিনে। তবে ২০১৮ সালেই রাজনীতিতে সক্রিয় হন মাশরাফি। দীর্ঘ ক্যারিয়ারের শেষ বেলায় এসে প্রথমবারের মতো বিতর্কিত হয়েছিলেন সেখানেই। সদ্য ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগের হয়ে সাড়ে ৫ বছর ছিলেন জাতীয় সংসদের সদস্য।
গত ৫ই আগস্ট প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর দেশব্যাপী আওয়ামী লীগের নেতাদের বাড়িঘরে ভাঙচুর, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। জনপ্রিয় ক্রিকেটার হওয়ার পরেও সেখান থেকে রেহাই পায়নি মাশরাফির নড়াইলের বাড়িটি। ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ হয়েছে সেখানেও। তবে এমন কিছুর জন্য বিচার চাইবেন না বলে জানিয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক।
নড়াইলের বাড়ি প্রসঙ্গে মাশরাফির বক্তব্য, ‘নড়াইলের বাড়িটা করেছিলাম মায়ের জন্য। এখন শেষ। অনেকেই বলেছেন মামলা করতে, ব্যবস্থা নিতে। ছবি-ভিডিও সবই আছে অনেকের কাছে। তবে আমি বলেছি, এসব করব না। আমার বাবাকেও বলে দিয়েছি। এখনকার সরকার বা ভবিষ্যতে নির্বাচন করেও যে সরকার আসুক, কারো কাছেই বিচাই চাইব না। কোনো অভিযোগ নেই।’
দেশের এক গণমাধ্যমকে বুধবারের দেয়া সাক্ষাৎকারে জানালেন নিজ এলাকার মানুষের বিপক্ষে বিচার দিতে চান না তিনি, ‘খুলনা-যশোর থেকে বা ঢাকা থেকে গিয়ে কেউ এই বাড়ি ভাঙেনি। নড়াইলের কোনো না কোনো জায়গা থেকে উঠে আসা মানুষই পুড়িয়েছে। নড়াইলের মানুষের বিরুদ্ধে বিচার আমি চাইব না। নিজের ভাগ্য মেনে নিয়েছি। হয়তো কোনো ভুল করেছি, সেটার ফল পেয়েছি। কষ্ট আছে অবশ্যই, তবে রাগ-ক্ষোভ নেই কারো প্রতি। আমার প্রতি এখনো কারও ক্ষোভ থাকলে, আমি ক্ষমাপ্রার্থী।’
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্দোলনে যেতে মেয়েকে উৎসাহ দিতেন মাশরাফি তবে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় থেকেই নিজের নীরবতার জন্য অনুতপ্তও হয়েছেন মাশরাফি, ‘দেশের একটা ক্রাইসিস মুহূর্তে পাশে থাকতে পারিনি, কিছু করতে পারিনি, এটা আমাকে সবসময়ই ভোগাবে, পোড়াবে। সবসময়ই থেকে যাবে।’
ভোরের আকাশ/মি
মন্তব্য