মো. ইমরান হোসাইন, আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৪ জুন ২০২৫ ০৬:০৪ পিএম
আমতলীর হাটে গরু বেশি, ক্রেতা নেই
পবিত্র ঈদুল আজহার আর মাত্র তিন দিন বাকী। আমতলীর ৮টি বাজারে গরু বেশী কিন্তু ক্রেতা কম। ছোট ও মাঝারি সাইজের গরুর কিছু ক্রেতা থাকলেও বড় গরুর ক্রেতা নেই। দামও তুলনামুলকভাবে অনেক কম।
আমতলী গরুর বাজার পরিচালক নিয়াজ মোর্শ্বেদ ইমন বলেন, যারা গরু ক্রয় করবে তারা তো এলাকায় নেই। তারা সকলেই এলাকা ছাড়া। ফলে বাজারে ক্রেতা অনেক কম।
আমতলী প্রাণী সম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় কোরবানীর জন্য ৮ হাজার ৮শ ১৩টি গবাদি পশুর চাহিদা রয়েছে। চাহিদার বিপরীতে এ উপজেলার ৯ হাজার ৭০টি পশু রয়েছে। এর মধ্যে ৫ হাজার ৯শ ১২টি গরু, ৫৯৫টি মহিষ, ২ হাজার ৫শ ৬৩টি ছাগল। চাহিদার তুলনায় ২শ ৫৭টি পশু বেশী রয়েছে।
শেষ সময়ে আমতলীর বাজারগুলো গরুতে সয়লাব কিন্তু ক্রেতা নেই। ছোট ও মাঝারী গরুর কিছু ক্রেতা থাকলেও বড় গরুর ক্রেতা নেই। এ সাইজের গরুর স্থানীয় তেমন ক্রেতা নেই। বাজারে যা বিক্রয় হচ্ছে, তা উত্তরাঞ্চলের পাইকারী ব্যবসায়ীরা ক্রয় করছে। এতে দুচিন্তায় পরেছে খামারীরা।
বুধবার আমতলীর গরুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, কিছু ছোট ও মাঝারি গরু ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে। বড় গরুর ক্রেতা নেই। এ বাজারে ৩শ গরু বিক্রয় হয়েছে। তার মধ্যে কোরবানীর জন্য ২০টি গরু নেই বলে জানান বাজার পরিচালক মো. নিয়াজ মোর্শ্বেদ ইমন। ছোট ও মাঝারী গরু লালন পালনের জন্য উত্তরাঞ্চলের পাইকারী ব্যবসায়ীরা ক্রয় করেছেন।
গরুর খামার মালিক সাইদুল ইসলাম বলেন, খামারের পায়রা বাহাদুর নামের একটি গরু বাজারে নিয়ে এসেছি, ক্রেতারা দাম বলে না। সাড়ে তিন লাখ টাকা দাম হাকালেও ক্রেতারা দাম বলেন, দুই লাখ সত্তর হাজার টাকা। তিনি আরো বলেন, বড় গরুর ক্রেতা অনেক কম। কিন্তু ছোট ও মাঝারি সাইজের গরুর চাহিদা কিছু বেশী।
দক্ষিণ রাওগা গ্রামের বাবুল মীর বলেন, তিনটি গরু গত ১৫ দিন আগে এক লাখ ৭৫ হাজার টাকায় ক্রয় করেছি। এখন ওই গরু বিক্রি করতে পারছি না। একটি গরু অনেক কষ্টে ৪৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। অপর দুটি তেমন দাম বলেন না। তিনি আরো বলেন, বাজারে অনেক গরু এসেছে। তিনটি গরু বর্তমান বাজার মুল্যে বিক্রি করতে পারলে ব্যবসা তো হবেই না, উল্টো ২৫ হাজার টাকা লোকসান হবে।
পৌরসভার খোন্তাকাটা এলাকার ক্রেতা আল হাসিব সজিব বলেন, কোরবানী উপলক্ষে একটি ছোট গরু ক্রয় করতে এসেছি। বাজারে গরু অনেক দামও অনেক কম। যাছাই বাছাই করে স্থানীয় গরু ক্রয় করবো।
কাঠালিয়া গ্রামের লিটন প্যাদা বলেন, বড় গরুর চাহিদা কম। গত বছরের চেয়ে গরু প্রতি ৩০-৩৫ হাজার টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে। একটি গরু এক লাখ ৩৫ হাজার টাকা দাম হাকিয়েছি কিন্তু ক্রেতা এক লাখ টাকা দাম বলেন। তাও দাম বলে চলে যায়।
পটুয়াখালীর ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, বাজারে যে পরিমাণ গরু এসেছে। তার চার ভাগের এক ভাগও ক্রেতা নেই। তিনি আরো বলেন, গত সপ্তাহে আমতলীর বাজার থেকে ২১টি গরু ১১ লাখ টাকা ক্রয় করে কুষ্টিয়া নিয়ে বিক্রি করেছি। তাতে কোন লাভ হয়নি।
গলাচিপা উপজেলার আমখোলা গ্রামের ব্যবসায়ী হারুন মিয়া বলেন, পাঁচটি গরু গত এক মাস আগে ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকায় ক্রয় করেছি। এখন ওই পাঁচটি গরু বর্তমান বাজারে বিক্রি করলে মূলধনের টাকাও আসবে না। লাভ তো দুরে থাক। তারপর গত একমাস ধরে খাবার খাইয়েছি, তারও দাম তো ধরেনি। তিনি আরো বলেন, বাজারে ক্রেতা কম আসায় একটি গরুও বিক্রি করতে পারিনি।
আমতলী গরু হাটের ইজারাদার আলাউদ্দিন মৃধা বলেন, বাজারে অনেক গরু আসছে। কিন্তু ক্রেতা কম। এখন পর্যন্ত ৩শ গরু বিক্রি হয়েছে।
ভোরের আকাশ/জাআ