পিরোজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৮ মে ২০২৫ ০১:২৫ পিএম
কঁচা ও বলেশ্বরে ডুবোচর, বাধাগ্রস্ত হচ্ছে নৌযান চলাচল
ডুবোচরের কারণে নব্যতা সংকট দেখা দিয়েছে পিরোজপুর এলাকার কঁচা ও বলেশ্বর নদে। বাধাগ্রস্ত হচ্ছে ফেরিসহ অন্যান্য যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল। পণ্য পরিবহণেও বিপাকে পড়ছেন পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানী উপজেলাসহ আশপাশের এলাকার ব্যবসায়ীরা। নৌপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা নিরাপদ রাখতে খননের দাবি তাদের।
এক সময় দক্ষিণাঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে নদী দুটি। ক্রমান্বয়ে নাব্যতা হারাচ্ছে নদীর। প্রায় আট বছর ধরে শুষ্ক মৌসুমে এই রুটে নৌযান চলাচল কমে এসেছে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে স্থানীয় অর্থনীতিতে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, এ উপজেলায় টগড়া ফেরিঘাটের পশ্চিম পাশে কঁচা নদীতে জেগে উঠেছে প্রায় চার কিলোমিটার এলাকা জুড়ে চর। এছাড়া বলেশ্বর নদের ওপর নির্মিত শহীদ ফজলুল হক মনি সেতুর উত্তর প্রান্তে তীর ঘেঁষে প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকায় জেগে উঠেছে একটি চর। ফলে গত একমাস ধরে এখানে ফেরি চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ভাটার টানে পানি কমে গেলেই টগরা প্রান্তে ফেরি আটকে যায়। এতে ট্রলারে নদী পারাপার হতে গিয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রীদের।
এ নদীর সন্ন্যাসী পয়েন্টসহ একাধিক স্থানে ছোটবড় অসংখ্য ডুবোচর রয়েছে বলে জানিয়েছেন নৌযান শ্রমিকরা। এমবি ফারহান নামে একটি নৌযান খুলনা-মোংলা-বরিশাল নৌপথে নিয়মিত পণ্য পরিবহন করে। ওই নৌযানের মাষ্টার তরিকুল ইসলাম জানান, ডুবোচরের কারণে সন্ন্যাসী পয়েন্টে নৌযান থামিয়ে রাখতে হয়। জোয়ারে পানি বাড়লে তবে চলা শুরু করতে হয়। টগড়া পয়েন্টে কঁচা নদীর অর্ধেকটা জুড়ে রয়েছে চর। ফলে মাঝে-মধ্যেই বাধার মুখে পড়তে হয় নৌযান চলাচল।
স্থানীয়রা জানায়, যুগ যুগ ধরে এ উপজেলার বাসিন্দারা কঁচা ও বলেশ্বর নদ দিয়ে ঢাকা-মোংলা ও খুলনাগামী লঞ্চ,স্টিমার ও ট্রলারে যাতায়াত করে আসছেন। এ ছাড়া পণ্যবাহী দেশি-বিদেশি জাহাজ, কার্গো চলাচলও কওে এই নৌপথ ধরে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে নির্দিষ্ট পথ ছাড়া ভাটার সময় বড় জাহাজ চলাচল করতে পারে না। অসংখ্য ডুবোচরের কারণে নদী দুটির গতিপথও ধীরে ধীরে বদলে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
চর পড়ার কারণে খুলনা থেকে নৌপথে মালপত্র পরিবহনে সমস্যার কথা জানান ইন্দুরকানী বাজার সমিতির সভাপতি মো. হারুন অর রশিদ। তিনি বলেন, বাধ্য হয়ে সড়ক পথে মালপত্র আনছেন ব্যবসায়ীরা। এতে ব্যয় করতে হচ্ছে দ্বিগুণ অর্থ।
কঁচা নদীর তীরে পড়েছে উপজেলার পাড়েরহাট ইউনিয়ন। এ ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যান মো. আ. রাজ্জাক এই প্রতিবেদককে জানান, কঁচা নদীর টগড়া প্রান্তে অর্ধেকের বেশি এলাকাজুড়ে চর জেগেছে। এতে জোয়ারের সময় ছাড়া নৌযান চলতে বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে। একই সঙ্গে টগড়া-চরখালী রুটে ফেরি চলাচলেও সমস্যা হচ্ছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিসি) বরিশাল ড্রেজিং বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন উর রশীদ জানান, বর্ষা মৌসুম চলে আসায় খনন কাজ সম্ভব হচ্ছে না। আগামী অর্থ বছরের শুকনা মৌসুমে কঁচা ও বলেশ্বর নদের ডুবোচরের খনন কাজ শুরু করা হবে।
ভোরের আকাশ/আজাসা