উন্নয়নমূলক কাজ পরিদর্শন করলেন পাবনার জেলা প্রশাসক
পাবনার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো: মফিজুল ইসলাম বলেন, রাষ্ট্রের একটি টাকাও যেন নষ্ট না হয়, সবাইকে নিরলসভাবে কাজ করে যেতে হবে। অনুন্নত সব এলাকাকে দ্রুত উন্নয়নের আওতায় আনতে হবে। ইউনিয়ন পরিষদের কাজের মান বৃদ্ধি করতে হবে। নাগরিকদের দ্রুত সেবা নিশ্চিত করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার সব ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভার সকল ওয়ার্ডের উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন কালে এ কথা বলেন। পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের কাজের মান দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। এছাড়াও তিনি আতাইকুলা থানা পরিদর্শন করে পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় ও খোঁজখবর নেন।
এসময় এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, পৌরসভার ইঞ্জিনিয়ার ও ইউনিয়ন পরিষদের সকল চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্যরা যেন নিয়মের মধ্যে সঠিক নিয়মে বাস্তবায়ন করে। কাজের মানে ত্রুটি ও অনিয়ম হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে শাস্তির আওতায় আনা হবে। জনগণের কল্যাণ হয় ব্যাপক মানুষের উপকারে আসে এমন কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, নাগরিকদের দ্রুত সেবা নিশ্চিত করতে হবে। জন্ম নিবন্ধন, নাগরিক সনদপত্রসহ যাবতীয় কাজে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ লাঘব করতে হবে। ইউনিয়ন পরিষদে সেবা নিতে আসাদের সঙ্গে বন্ধুসুলভ আচরণ করতে হবে। সবার সঙ্গে চমৎকার ব্যবহার করতে হবে। আর প্রকল্পের কাজ স্বচ্ছতার সঙ্গে রাস্তবায়ন করতে হবে। কাজে কোন অনিয়ম করা যাবে না। যেসব কর্মকর্তা বা ব্যক্তি ভালো কাজ করবে এদের পুরস্কার প্রদান করা হবে। আর অনিয়ম হলে তাকে শাস্তির আওতায় আনা হবে। সবাই যারযার জায়গা থেকে ভালো কাজ করবেন। উন্নত ও মডেল পাবনা বাস্তবায়নে সবার সহযোগীতা কামনা করেন তিনি।
এসময় তিনি গ্রামীন অবকাঠামো উন্নয়নে সার্বিক দিক নির্দেশনা দেন। কৃষকদের কাজ সহজ করতে মাঠের মধ্যে দিয়ে বৃহৎ বাজেটের রাস্তা নির্মানের চিন্তাভাবনা রয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিজু তামান্না, সাঁথিয়া উপজেলা ভূমি সহকারী কর্মকর্তা সাদিয়া সুলতানা, আতাইকুলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একেএম হাবিবুল ইসলাম, সাঁথিয়ার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা, আর আতাইকুলা ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা বাবুল আক্তার, ইউনিয়ন সচিব সহ সকল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যবৃন্দ।
ভোরের আকাশ/এসআই
সংশ্লিষ্ট
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন যাত্রী। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ফুকরা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।দুর্ঘটনার ফলে মহাসড়কে প্রায় আড়াই ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। এতে ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।গোপালগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক শিপলু আহমেদ জানান, খুলনাগামী একটি ট্রাক ফুকরা এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা ঢাকাগামী নিউ বলেশ্বর পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে ট্রাকচালক ও বাসের হেলপার ঘটনাস্থলেই মারা যান।খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতাল ও কাশিয়ানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান।রাত ১১টার দিকে দুর্ঘটনাকবলিত যানবাহন সরিয়ে নেওয়ার পর মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।নিহতদের নাম-পরিচয় এখনও জানা যায়নি।ভোরের আকাশ//হ.র
মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার গোপালনগর গ্রামে দুটি মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে গোলাম রব্বানী (৩২) নামে এক এনজিও কর্মী নিহত হয়েছেন।আজ বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মুজিবনগর-গোপালনগর সড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।নিহত গোলাম রব্বানী যশোর সদর উপজেলার নরসিংহকাটি গ্রামের আবু বক্কর সরদারের ছেলে। তিনি একটি বেসরকারি সংস্থায় (এনজিও) কর্মরত ছিলেন।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গোলাম রব্বানী মোটরসাইকেলযোগে মুজিবনগরের দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় বিপরীত দিক থেকে আসা আরেকটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করেছে। পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ভোরের আকাশ/এসআই
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গৃদকালিন্দিয়া হাজেরা হাসমত ডিগ্রি কলেজের সভাপতি মনোনীত হন স্থানীয় বাসিন্দা মো. হারুনুর রশিদ। কিন্তু ৫ আগস্টের পর তার লোকজন কলেজে এসে হামলা ও ভাংচুর চালায়। তাকে সভাপতি হিসেবে গ্রহণ করতে না পেরে উচ্চ আদালতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের রীটে আটকে যায় তার সভাপতি পদ। বর্তমানে এই কলেজের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন জেলা প্রশাসক।খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, কলেজের এডহক কমিটির মেয়াদ শেষ হয় গত ৩১ মার্চ। এরই মধ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ কর্তৃপক্ষের পূর্নাঙ্গ কমিটির কাগজপত্র পেয়ে কোন ধরণের সমাধান না দিয়ে নতুন করে ২৪ এপ্রিল শুধুমাত্র মো. হারুনুর রশিদকে সভাপতি হিসেবে মনোনীত করে অধ্যক্ষকে চিঠি দেয়। এতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ গৌরী রানী সাহা সংক্ষুব্ধ হয়ে উচ্চ আদালতে রীট দায়ের করলে হারুনুর রশিদের সভাপতি পদ স্থগিত হয়। বর্তমানে উচ্চ আদালতের আদেশে কলেজটির এডহক কমিটির সভাপতির দায়িত্বে জেলা প্রশাসক।এডহক কমিটির সভাপতি মনোনয়ন, পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষকে চিঠি প্রেরণসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পর্যালোচনা ও সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানাগেছে।এই কলেজের এডহক কমিটির সভাপতি ছিলেন ডাঃ আনোয়ারা হক। তিনি ৬ মাসের জন্য মনোনীত হন। আর এর মেয়াদ শেষ হয় ৩১ মার্চ। তিনি সভাপতি থাকাকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক ১৫ মার্চ পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রস্তাবনা প্রেরণ করেন। প্রস্তাবিত কমিটির বিষয়টি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যথাযথ নিয়মে নিস্পত্তি না করে ২৪ দিন পর সভাপতি ডাঃ আনোয়ারা হক এর মনোনয়ন পরিবর্তন পূর্বক তদস্থলে মো. হারুনুর রশিদকে মনোনয়ন প্রদান করেন।কিন্তু এই সময়ের মধ্যে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মনোনীত সভাপতিকে কোন ধরণের আমন্ত্রণ কিংবা টেলিফোনে সভাপতি হিসেবে চিঠি পেয়েছেন এমন তথ্য নিশ্চিত করেননি। যে কারণে সভাপতি হারুনুর রশিদ নিজেই গত ৭ মে কলেজে উপস্থিত হয়ে শিক্ষকদের সাথে বৈঠকে বসেন। ওই সময় কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ উপস্থিত ছিলেন না। এই বৈঠকের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।ওই বৈঠকের পর সভাপতি তার দায়িত্বভার আনুষ্ঠানিকভাবে বুঝে নেয়ার কোন তথ্য না পাওয়াগেলেও তিনি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ গৌরী রানী সাহাকে অব্যাহতি দিয়ে নতুন করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ দেন পরিসংখ্যান বিষয়ের সহকারী অধ্যাপক মো. দেলোয়ার হোসেনকে।নতুন করে নিয়োগ পাওয়া ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, অধ্যক্ষ নিয়োগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুসরণ করে আমাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে কী-না তা আমি জানিনা। সভাপতি নিয়োগ প্রদান করায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেছি। এখানে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ হয়েছে কীনা সে বিষয়ে সভাপতি বলতে পারবেন।দেলোয়ার হোসেনকে জিজ্ঞাসা করা হয়, ৭ মে সভাপতি হিসেবে কলেজে এসে কোন ধরণের নোটিশ ছাড়া মিটিং করে কিভাবে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করলেন?এমন প্রশ্নের জবাবে দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমাকে কোন নোটিশ দেয়া হয়নি। তিনি (সভাপতি) ৭ তারিখে এসে জানিয়েছেন অধ্যক্ষ পরিবর্তন হবে। পরদিন ৮ তারিখ ২৪ ঘন্টারও কম সময়ে আমাকে নিয়োগ দিয়েছেন। অধ্যক্ষের কক্ষ বন্ধ থাকায় নতুন করে রেজুলেশন বুক নিয়ে তিনি (সভাপতি) সভার রেজুলেশন তৈরী করে নিয়েছেন।এদিকে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর মো. হারুনুর রশিদকে সভাপতি হিসেবে প্রস্তাব না পাঠানোর কারণে কলেজের সামনে মানববন্ধন, কলেজ ক্যাম্পাস ও অধ্যক্ষের কক্ষে ভাংচুর, শিক্ষককে লাঞ্ছিত এবং শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। পুরো ঘটনায় জড়িত সকলেই মো. হারুনুর রশিদের অনুসারী। এই বিষয়ে সরেজমিন প্রতিবেদন প্রকাশ হয় স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমে। কলেজ কর্তৃপক্ষ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ফরিদগঞ্জ থানায় আবেদন করেন।উপজেলার সনামধন্য এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্টকারীদের জন্য ভীতসন্তস্ত থাকেন কলেজটির অধ্যক্ষ ও শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্টের জন্য দায়ী ব্যাক্তি মো. হারুনুর রশিদকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কলেজটির নতুন সভাপতি হিসেবে মনোনয়ন করায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ গৌরী রানী সাহা সংক্ষুব্ধ হয়ে ২৮ এপ্রিল উচ্চ আদালতে একটি রীট করেন।উচ্চ আদালত এই রিটের বিষয়ে ২৮ ও ২৯ এপ্রিল এবং ৪ মে শুনানি শেষে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক মনোনীত সভাপতির ওই চিঠির কার্যকারিতা ৩ মাসের জন্য স্থগিত করেন। একই সাথে এই বিষয়ে জবাব দিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, ভাইস চ্যান্সেলর, রেজিষ্টার, কলেজ পরিদর্শক বরাবর রুল জারি করেন। পাশাপাশি এই তিন মাস কলেজ শিক্ষকদের বেতন ভাতা প্রদান ও কলেজের প্রয়োজনীয় দাপ্তরিক স্বাক্ষরের জন্য জেলা প্রশাসক চাঁদপুরকে নির্দেশনা দেয় উচ্চ আদালত।ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ গৌরী রানী সাহা বলেন, উচ্চ আদালতের আদেশের কপি জেলা প্রশাসক বরাবর দাখিল করা হয়েছে এবং বিষয়টি আমি নিজেও মৌখিকভাবে জানিয়েছি।২৪ ঘন্টার মধ্যে কীভাবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ দেয়া হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় মনোনীত সভাপতি মো. হারুনুর রশিদ বলেন, এই পদ স্থায়ী নিয়োগ নয়, ভারপ্রাপ্ত হিসেবে নিয়োগ দিয়েছি, এটি তেমন কিছু নয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুসরণ না করে নিয়োগ কতটা যৌক্তিক এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুর্বের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও কমিটির লোকজনের বিষয়ে অনেক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এভাবে একটি কলেজ চলতে পারে না। এই জন্য তাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। উচ্চ আদালতের রায়ে আপনার পদ স্থগিত করা হয়েছে এই বিষয়ে আপনি জেনেছেন কিনা, এই বিষয়ে তিনি বলেন, আমি ফেসবুকে দেখেছি। এরকম হয়ে থাকলে এটি আইনগত বিষয়। সেভাবে দেখা হবে।গৃদকালিন্দিয়া হাজেরা হাসমত ডিগ্রি কলেজের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য উচ্চ আদালতের আদেশ সংক্রান্ত কোন কপি জেলা প্রশাসক পেয়েছেন কীনা জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন পেয়েছেন বলে নিশ্চিতকরেন। ভোরের আকাশ/এসআই
গোপালগঞ্জ সড়ক বিভাগে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক এর দুটি দল অভিযান পরিচালনা শুরু করেছে। সড়ক বিভাগের রক্ষণাবেক্ষণ কাজসহ রাস্তা নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম ও লুটপাটের অভিযোগ আমলে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।বৃহস্পতিবার (১৫ মে) দুর্নীতি দমন কমিশন এর প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশেক্রমে দুদক গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয় এ অভিযান শুরু করে। দুদকের গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বিজন কুমার রায়ের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। এ অভিযানে আরো উপস্থিত ছিলেন সহকারী পরিচালক মোঃ সোহরাব হোসেন সোহেল ও উপ-সহকারী পরিচালক মোঃ আল-আমিন হোসেন।গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বিজন কুমার রায় জানান, প্রথমে বৃহস্পতিবার দিনভর গোপালগঞ্জ সড়ক বিভাগ হতে তথ্য সংগ্রহ করা হয় পরে টেকেরহাট-ঘোনাপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়ক সড়কের ৩৯ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে দীর্ঘসূত্রিতা ও অনিয়মের সরেজমিন তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এ সময় গোপালগঞ্জ সদর হতে টেকেরহাট আঞ্চলিক মহাসড়কের কিছু অংশের কাজ কয়েক বছরেও শেষ হয়নি। কিছু ব্রিজের উপর পিচ না থাকায় সমতল রাস্তা হতে ৫-১০ ইঞ্চি নিচু হওয়ায় ও সতর্কতা সাইন না থাকায় হঠাৎ গাড়ি ব্রেক করায় প্রায় দুর্ঘটনা ঘটছে ও গাড়ির ক্ষতি হচ্ছে। রাস্তার কাজ শেষ না হতেই বিভিন্ন স্থানে ফাটল এবং ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ২০২২ সালে কাজ শুরু হলেও অদ্যাবধি কাজ শেষ না হওয়ায় জনদুর্ভোগ হচ্ছে বলে প্রমাণ পেয়েছে দলটি।তিনি জানান, গোপালগঞ্জ শহরের প্রবেশ পথে পুলিশ লাইন্সের আগে হরিদাসপুর সেতুতে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয়ে নিম্নমানের লাইট স্থাপন করা হয়। তাই সেই লাইট গুলি কিছুদিনের মধ্যেই নষ্ট হয়ে যায়। বর্তমানে উক্ত সড়কে সন্ধ্যার পর থেকে অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকে এতে চুরি ডাকাতিসহ বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম হচ্ছে বলে জানান এলাকাবাসী। সড়ক ও সেতুর মেরামত খাতের বরাদ্দকৃত অর্থ যথাযথভাবে ব্যবহার না করায় সাধারণ জনগণ ভোগান্তির মধ্যে রয়েছেন বলে প্রমাণিত হয়েছে।বিজন কুমার রায় আরও বলেন, গোপালগঞ্জ থেকে নড়াইল যাওয়ার পথে চাপাইল সেতুর নিম্নমাণের লাইটসমূহ দীর্ঘদিন নষ্ট হলেও মেরামত না করায় জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে। মেরামত খাতের অর্থ যথাযথভাবে ব্যবহার না করায় লাইটগুলো ঠিক হচ্ছে না। ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোপালগঞ্জের হরিদাসপুর সেতু ও চাপাইল সেতুর লাইট দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট হলেও মেইনটেইনেন্স না করায় জনদুর্ভোগের বিষয়ে সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহ করা হয়।অন্যদিকে, গোপালগঞ্জের ঘোনাপাড়া থেকে টুঙ্গিপাড়া সড়কে ৬০০টি ৩০ ওয়াটের স্ট্রিট লাইটের পরিবর্তে ২০ ওয়াট লাইট দেয়ায় আলো কম হয়ে জনদুর্ভোগ ও ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজশ করে বিপুল অর্থ আত্মসাৎ বিষয়ে সরেজমিনে লাইট পরিদর্শন করা হয়। এসব অনিয়ম ও অভিযোগ তদন্ত করে দুদকের টিম সত্যতা পেয়েছেন এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।ঢাকা-খুলনা মহাসড়েকের গোপালগঞ্জ অংশে মেরামতের বাজেটের বেশিরভাগ অর্থ যথাযথ ব্যয় হচ্ছেনা মর্মে জানা গেছে। বিগত ৪-৫ বছরে ব্যায়ের তালিকা যাচাই করলে কোটি কোটি টাকার অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আরো ব্যাপক তদন্ত শেষে এ বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন দুদক প্রধান কার্যালয়ে দাখিল করা হবে। ভোরের আকাশ/এসআই