পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৮ জুন ২০২৫ ০৫:০৯ পিএম
পাথরঘাটায় কোস্টগার্ড অভিযানে ভাংচুর উত্তেজনা
বরগুনার পাথরঘাটায় কোস্ট গার্ডের অভিযানে অবৈধ আর্টিসানাল ট্রলিং বোট জব্দকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার রাতের ঘটনায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।
একদিকে কোস্ট গার্ডের উপর হামলা, স্থাপনা ভাংচুর ও সদস্যদের অবরুদ্ধ করার অভিযোগ উঠেছে। অন্যদিকে জেলেদের পক্ষ থেকে অর্থ দাবিসহ মারধরের পাল্টা অভিযোগ করা হয়েছে।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে আজ (১৮ জুন) কোস্ট গার্ডের পক্ষে মানববন্ধন করেছে স্থানীয় সচেতন জেলে ও সাধারণ মানুষ।
বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড পাথরঘাটা স্টেশন আজ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ১৭ জুন মঙ্গলবার দুপুর ১টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে একটি অভিযান পরিচালনা করে তারা। অভিযানে ২টি অবৈধ আর্টিসানাল ট্রলিং বোট জব্দ করা হয় এবং ২০০ কেজি সামুদ্রিক মাছ উদ্ধার ও ২৪ জন জেলেকে আটক করা হয়। পরে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার উপস্থিতিতে মাছ গরিব ও অসহায়দের মাঝে বিতরণ করা হয়।
কোস্ট গার্ডের দাবি, ওই দিন রাত ৯টার দিকে আনুমানিক ৩০০ জন স্থানীয় দুষ্কৃতিকারী স্টেশনে হামলা চালায়। কোস্ট গার্ড সদস্যদের অবরুদ্ধ করে রাখে এবং একটি পিকআপ, একটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। টহলের কাজে ব্যবহৃত একটি কাঠের বোট নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। প্রথমে কোস্ট গার্ড কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে এবং পরে নৌবাহিনী ও থানা পুলিশের সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
অন্যদিকে আটক ট্রলারের মালিক ও জেলেদের অভিযোগ, সাগর থেকে ঘাটে ফেরার সময় কোস্ট গার্ড সদস্যরা তাদের কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন। তারা টাকা না দিলে ট্রলারগুলো আটক করে এবং প্রতিবাদ করলে জেলেদের মারধর করা হয়। এতে কয়েকজন আহত হন বলেও তারা অভিযোগ করেছেন। তারা আরও দাবি করেন, ট্রলারগুলোর বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও সেগুলো জব্দ করা হয়েছে।
কোস্ট গার্ড প্রেস রিলিজে জানিয়েছে, আটক জেলেরা দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ ট্রলিং গিয়ার ব্যবহার করে অগভীর পানিতে মাছের পোনা ও ডিম ধ্বংস করছিলেন, যা সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যের জন্য মারাত্মক হুমকি।
এই ঘটনার প্রতিবাদে আজ ১৮ জুন সকাল ১১টায় পাথরঘাটা বাজারে কোস্ট গার্ডের পক্ষে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন স্থানীয় সচেতন জেলে, মৎস্যজীবী ও সাধারণ জনগণের একাংশ।
বক্তারা বলেন, অবৈধ ট্রলিং ও মাছের পোনা নিধন যারা করে, তারা প্রকৃত জেলে নয়। তারা সমুদ্র ও দেশের শত্রু। যারা কোস্ট গার্ডের মতো বাহিনীর ওপর হামলা চালায়, তারা দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
তারা আরও বলেন, সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ রক্ষা করতে হলে কঠোর নজরদারি দরকার। কোস্ট গার্ডকে ধন্যবাদ দিতে আমরা এসেছি, প্রতিবাদ করতে নয়।
বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড জানিয়েছে, উপকূলীয় অঞ্চলের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণের জন্য ২৪ ঘণ্টার টহল অব্যাহত থাকবে এবং ভবিষ্যতেও নিয়মিত এ ধরনের অভিযান পরিচালনা করা হবে।
ভোরের আকাশ/জাআ