মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৩ জুন ২০২৫ ০৯:৫৬ পিএম
আরিচা-কাজিরহাট নৌ-রুটে স্পিডবোট বন্ধ
আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে আরিচা-কাজিরহাট নৌ-রুটে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে ওই রুটে সব ধরনের স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রেখেছেন চালকেরা। সরকার নির্ধারিত ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করতে না পেরে ভাড়া বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন ঈদে ঘরমুখো হাজারো যাত্রী।
নৌপথটি দিয়ে রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের এলাকা থেকে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে থাকেন যাত্রীরা। দ্রুত যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে এই রুটে স্পিডবোট অন্যতম জনপ্রিয় বাহন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, আরিচা লঞ্চঘাট এলাকায় সকাল থেকেই যাত্রীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও স্পিডবোট না পেয়ে বিপাকে পড়েন। কেউ কেউ বাধ্য হয়ে লঞ্চ বা ফেরির দিকে ঝুঁকছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১১ সালে চালু হওয়া এই ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ নৌ-রুটে প্রতিদিন শতাধিক স্পিডবোট চলাচল করে। সরকার নির্ধারিত ভাড়া ধরা হয়েছে জনপ্রতি ২১০ টাকা। তবে যাত্রীরা জানান, বাস্তবে তাদের কাছ থেকে নেওয়া হয় ২৫০ টাকা।
যাত্রী সুমন মিয়া বলেন, "এভাবে জিম্মি করে ভাড়া বাড়িয়ে নেওয়া হয়। এখন আবার ঈদের সময় চলাচলই বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা যাব কোথায়?"
স্পিডবোট মালিক ও চালকেরা বলছেন, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে তারা আর ২১০ টাকায় ভাড়া দিতে পারছেন না।
চালক রফিকুল ইসলাম বলেন, "প্রতি ট্রিপে স্পিডবোটে ২৫ থেকে ২৮ লিটার অকটেন লাগে। প্রতি লিটার অকটেনের দাম ১২২ টাকা। আপ-ডাউন মিলিয়ে ৫০ মিনিটে তেল খরচই পড়ে ৩ হাজারের বেশি। এর সঙ্গে আছে ঘাট খরচ, মবিল ও চালকের মজুরি। সব মিলিয়ে প্রতি ট্রিপে খরচ হয় প্রায় ৫ হাজার টাকা।"
চালকেরা জানান, প্রতিটি বোটে ১৮ থেকে ২০ জন যাত্রী নেয়া হয়। সে হিসেবে সরকার নির্ধারিত ২১০ টাকা ভাড়া ধরলে আপ-ডাউনে আয় হয় ৭ হাজার ৫৬০ থেকে ৮ হাজার ৪০০ টাকা। কিন্তু ঈদের আগে-পরে একমুখী যাত্রী পরিবহন করতে হয়। তখন খালি বোট নিয়ে ফিরতে হয়, ফলে লোকসান গুণতে হয়।
বিআইডব্লিউটিএর আরিচা নদীবন্দর উপপরিচালক মো. সেলিম শেখ বলেন, "মালিক সমিতির পক্ষ থেকে ভাড়া বৃদ্ধির আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু মন্ত্রণালয় থেকে আগে থেকেই সিদ্ধান্ত রয়েছে, ভাড়া বাড়ানো যাবে না।"
তিনি আরও জানান, ভাড়া বৃদ্ধি না করায় মালিকেরা স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রেখেছেন। তবে লঞ্চ ও ফেরি চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএর ট্রাফিক সুপারভাইজার আফসার আলী বলেন, "বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আলোচনা চলছে। আশা করছি দ্রুত সমাধান হবে।"
ভোরের আকাশ/জাআ