পটুয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০১ অক্টোবর ২০২৫ ১০:২১ এএম
ছবি : সংগৃহীত
পটুয়াখালীর গলাচিপায় ইলিশ চুরির অভিযোগে দুই শিশুকে প্রকাশ্যে হাত-পা বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের এক সদস্য ও একজন মাছ ব্যবসায়ীর সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে জানা গেছে।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার চরবিশ্বাস ইউনিয়নের চরমহিরউদ্দিন এলাকার নতুন স্লুইসগেট সংলগ্ন স্থানে এ ঘটনা ঘটে।
নির্যাতনের পর শিশুদের হাতে মাছ ধরিয়ে তোলা ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
ভুক্তভোগী দুই শিশুর মধ্যে একজনের বয়স ১০ বছর অন্যজনের ১৪। তাদের একজনের বাড়ি মির্জাগঞ্জ উপজেলার মহিষকাটা গ্রামে অন্যজনের চরবিশ্বাস ইউনিয়নের চরআগস্তি গ্রামে। নির্যাতনের পর স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেয় একজন।
স্বজনদের বরাতে জানা গেছে, গত রোববার রাতে দুই শিশু স্থানীয় জেলে জয়নাল খাঁর সঙ্গে নদীতে মাছ ধরতে গিয়েছিল। পরে রাত গভীর হলে তারা নৌকায় ঘুমিয়ে পড়ে। পরদিন সকালে মাছ ব্যবসায়ী ইমরান বয়াতি তাদের ধরে তার আড়তে নিয়ে যান।
অভিযোগ ওঠে, তারা আড়ত থেকে প্রায় ১০টি ইলিশ মাছ চুরি করেছে। এরপর তাদের হাত-পা বেঁধে মারধর করা হয় ও দুপুরের রোদে বসিয়ে স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়। এসময় হাতে মাছ ধরিয়ে ছবি তুলে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
শিশুদের স্বজনরা ঘটনাস্থলে গিয়ে বেঁধে রাখা অবস্থায় তাদের দেখতে পান। এসময় স্থানীয় ইউপি সদস্য হাসান সরদার ও ইমরান বয়াতি ক্ষতিপূরণ বাবদ ১০ হাজার ৫০০ টাকা দাবি করেন। টাকা না দিতে পারায় স্বজনদের কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেওয়া হয়। এরপর নির্যাতিত শিশুদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি সদস্য হাসান সরদার বলেন, ‘শিশুরা ইমরানের আড়ত থেকে মাছ চুরি করেছে। আমি খবর পেয়ে সেখানে গিয়েছিলাম। পরে মাছের দাম ক্ষতিপূরণ হিসেবে দাবি করা হয়। তাদের মারধর করা হয়নি।’
অন্যদিকে মাছ ব্যবসায়ী ইমরান বয়াতি জানান, ‘দুজন আমার আড়ত থেকে মাছ চুরি করেছে। পালানোর চেষ্টা করলে তাদের হাত-পা বেঁধে রাখা হয়। আগেও এরা মাছ চুরি করেছে, যা স্থানীয়ভাবে মীমাংসা হয়েছিল। এবার প্রমাণ হিসেবে ছবি তোলা হয়েছে।’
গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশাদুর রহমান বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে আমরা অবগত হয়েছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়েছিল। ভুক্তভোগীদের লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ভোরের আকাশ/মো.আ.