× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

পোশাক শিল্পে বড় আঘাতের শঙ্কা

এ চাপ কীভাবে সইবে বাংলাদেশ

শিপংকর শীল

প্রকাশ : ০৬ এপ্রিল ২০২৫ ০৮:২৭ পিএম

এ চাপ কীভাবে সইবে বাংলাদেশ

এ চাপ কীভাবে সইবে বাংলাদেশ

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। এর প্রভাব নিয়ে নানা হিসাব-নিকাশ করছে বাংলাদেশ। অর্থনীতিবিদদের অনেকে বলছেন, এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের রপ্তানি খাতে, বিশেষ করে পোশাক শিল্পে। এ খাতে বড় আঘাতের শঙ্কা করছে সংশ্লিষ্টরা। তবে যুক্তরাষ্ট্র এটাকে পাল্টা শুল্ক বলে অভিহিত করেছে। তারা বলেছে, যেসব দেশ এতদিন মার্কিন পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক নির্ধারণ করে রেখেছিল, সেই সব দেশের পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

হোয়াইট হাউসের প্রকাশিত তালিকায় বলা হচ্ছে, বাংলাদেশ মার্কিন পণ্যের ওপর ৭৪ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করে। এর প্রতিক্রিয়ায় এখন থেকে বাংলাদেশি পণ্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে ৩৭ শতাংশ নতুন অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। আগামী ৯ এপ্রিল থেকে এই উচ্চতর শুল্ক আরোপ শুরু হবে। বাংলাদেশি পণ্যের ওপর আগে যুক্তরাষ্ট্রে গড়ে শুল্ক ছিল ১৫ শতাংশ। অর্থাৎ নতুন ও পুরাতন মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্য প্রবেশের ক্ষেত্রে এখন থেকে গড়ে ৫২ শতাংশ শুল্ক আরোপ হবে।

এদিকে বাংলাদেশে মার্কিন পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ৭৪ শতাংশ শুল্ক রয়েছে বলে যে বক্তব্য মার্কিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অর্থনীতিবিদেরা। তাদের মতে, বাংলাদেশ মার্কিন পণ্যের ওপর গড়ে সাত থেকে আট শতাংশ শুল্ক আরোপ করে থাকে। এমন প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র কী কারণে বা কিসের ভিত্তিতে ৭৪ শতাংশ শুল্কের কথা বলছে, সে বিষয়টি দ্রুত স্পষ্ট হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন তারা।  মার্কিন এ শুল্ক আরোপ করে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহম্মদ ইউনূস জরুরি বৈঠক ডেকেছেন। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত গতকাল শনিবার রাতে যমুনায় ওই বৈঠক চলছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে ৭৪ শতাংশ শুল্ক নিয়ে প্রশ্ন : যুক্তরাষ্ট্রের অফিস অব দ্য ইউনাইটেড স্টেট ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ, যা ইউএসটিআর নামে পরিচিত, তাতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল আনুমানিক এক হাজার ৬০ কোটি ডলার। ওই বছর যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২২০ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করা হয়েছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি হয়েছে প্রায় ৮৪০ কোটি ডলারের মতো। বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের যেসব পণ্য রপ্তানি হয় তার মধ্যে রয়েছে কৃষিপণ্য যেমন খাদ্যশস্য, বীজ, সয়াবিন, তুলা, গম এবং ভুট্টা। এছাড়া যন্ত্রপাতি এবং লোহা ও ইস্পাত পণ্যও আসে বাংলাদেশে। আর বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি পণ্যের মধ্যে আছে, তৈরি পোশাক, জুতা, টেক্সটাইলসামগ্রী ও কৃষিপণ্য।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের ওপর খুবই কম শুল্ক আরোপ করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে অতিরিক্ত শুল্ক বসালো, তার যৌক্তিকতা কী? কিভাবে তারা এই ৭৪ শতাংশের হিসাবটা করল? যুক্তরাষ্ট্রের উল্লেখ করা ৭৪ শতাংশ শুল্কটা আমাদের নাই এবং মার্কিন পণ্যে বাংলাদেশে শুল্ক খুবই কম বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা (যুক্তরাষ্ট্র) বলছে যে তারা এখানে শুধু শুল্ক বিবেচনায় নেয়নি। এক্সচেঞ্জ রেট পলিসি, ট্রেড পলিসি এগুলোও বিবেচনায় নিয়েছে। ওগুলো বিবেচনায় নিলেও ৭৪ শতাংশ শুল্ক হারের বিষয়ে অস্পষ্টতা থেকে যায়।

এই অর্থনীতিবিদ উল্লেখ করেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২০২৪ সালে ২২০ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছে, এর বড় অংশই ছিল তুলা। বাংলাদেশে তুলার ওপর আমদানি শুল্ক ছিল শূন্য। ওই বছর যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে লোহা ও পেট্রোলিয়াম আমদানি করা হয়েছে, যেগুলোর আমদানি শুল্ক যথাক্রমে শূন্য ও ৩১ শতাংশ। সব মিলিয়ে গড়ে আমদানি শুল্ক হয় সাত-আট শতাংশ হবে বলে মনে করেন তিনি।

পোশাক খাত বড় আঘাতের শঙ্কা : বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের অন্যতম বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের এই নতুন শুল্ক বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে আঘাত হানবে। এই অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাকের দাম বেড়ে যাবে। যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তাদের কাছে দাম বেশি হলে তৈরি পোশাকের চাহিদা কমে যেতে পারে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ ও খাত সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, বাড়তি শুল্ক আরোপের ফলে সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশ থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি কমে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।

বিশ্ব ব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, শুল্ক আরোপের কারণে শুধু বাংলাদেশে প্রভাব পড়বে না। এতে করে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কা বেড়ে গেছে, এই কারণে তাদের জিডিপি কমে যাবে। একদিকে তাদের আয় কমবে, অন্যদিকে দাম বাড়বে। মার্কিন ভোক্তাদের ক্রয় ক্ষমতা কমে যাবে। এর একটি প্রভাব বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বেই পড়বে।

যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি ইউরোপেও চাহিদা কমে যাবে বলে উল্লেখ করে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, বাংলাদেশ থেকে গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে ৮৪০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। তার মধ্যে তৈরি পোশাকই রপ্তানি হয়েছে ৭৪০ কোটি ডলারের। এর বাইরে ব্যাগ, প্লাস্টিক, জুতা, কৃষিপণ্যও বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়েছে। সাধারণত বাংলাদেশ থেকে যে ধরনের পণ্য যুক্তরাষ্ট্র আমদানি করে, তা কম দামি। কারণ এখানে শ্রমিক খরচ কম। কিন্তু এই নতুন আরোপ করা শুল্কের কারণে তখন একই পণ্যের দাম আগের চেয়ে বেড়ে যাবে।

তৈরি পোশাক শিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজেএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘বিদেশি ক্রেতারা বাংলাদেশ থেকে পোশাক ক্রয়ের কারণ সস্তা শ্রম ও মূল্য। তারা যেখানে সস্তা পাবে, সেখানেই যাবে। এটাই তাদের ব্যবসা। ব্র্যান্ডগুলো কখনোই চাইবে না যে বেশি টাকায় পণ্য কিনুক। সুতরাং, বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের দাম বেড়ে গেলে মার্কিন বায়াররা বিকল্প খুঁজবে।

এক্ষেত্রে, তাদের জন্য সম্ভাব্য গন্তব্য হতে পারে কেনিয়া, মিশর কিংবা হন্ডুরাসের মতো দেশ। কারণ ওই দেশগুলোতে শুল্কের হার ১০ শতাংশ এবং ওগুলো যুক্তরাষ্ট্র থেকে কাছেও। এতে তৈরি পোশাক শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ এই খাত যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল। পাশাপাশি আমাদের ইউরোপের কথাও মাথায় রাখতে হবে। দুই মার্কেটেই একই ঘটনা ঘটলে আমাদের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে না।’

ভোরের আকাশ/এসএইচ

  • শেয়ার করুন-
 পরিবেশবান্ধব সনদ পেল আরও ৪ কারখানা

পরিবেশবান্ধব সনদ পেল আরও ৪ কারখানা

 আজ থেকে দেশজুড়ে অতি ভারী বর্ষণের আভাস

আজ থেকে দেশজুড়ে অতি ভারী বর্ষণের আভাস

 পর্বতসম খেলাপি ঋণ

পর্বতসম খেলাপি ঋণ

 ডেঙ্গু-করোনা সতর্কতায় আসনের দূরত্ব বাড়ছে এইচএসসি কেন্দ্রে

ডেঙ্গু-করোনা সতর্কতায় আসনের দূরত্ব বাড়ছে এইচএসসি কেন্দ্রে

 ঢাকায় নেওয়ার পথে ডেঙ্গুতে ৩ বছরের শিশুর মৃত্যু, বরগুনায় বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল

ঢাকায় নেওয়ার পথে ডেঙ্গুতে ৩ বছরের শিশুর মৃত্যু, বরগুনায় বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল

 ইরানের হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, ইসরায়েলের হাইফা ও তেল আবিবে আঘাত

ইরানের হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, ইসরায়েলের হাইফা ও তেল আবিবে আঘাত

 ডেঙ্গু ও করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাউশির বিশেষ নির্দেশনা

ডেঙ্গু ও করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাউশির বিশেষ নির্দেশনা

 ‘ইরান শেষ হলে কেউ বাঁচবে না’— ইসরায়েলকে হুঁশিয়ার করল পাকিস্তান

‘ইরান শেষ হলে কেউ বাঁচবে না’— ইসরায়েলকে হুঁশিয়ার করল পাকিস্তান

 বাবা দিবসে শাকিব খানকে ঘিরে অপু-বুবলীর হৃদয়ছোঁয়া পোস্ট

বাবা দিবসে শাকিব খানকে ঘিরে অপু-বুবলীর হৃদয়ছোঁয়া পোস্ট

 ইরানে বড় হামলার ইঙ্গিত, সামরিক ও বাণিজ্যিক অঞ্চল ছাড়তে বলল ইসরায়েল

ইরানে বড় হামলার ইঙ্গিত, সামরিক ও বাণিজ্যিক অঞ্চল ছাড়তে বলল ইসরায়েল

 মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা: আইএইএর জরুরি বৈঠকে নজর আন্তর্জাতিক মহলের

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা: আইএইএর জরুরি বৈঠকে নজর আন্তর্জাতিক মহলের

 ঋতুপর্ণার জন্য ফেরদৌসের কবিতা, নতুন করে আলোচনায়

ঋতুপর্ণার জন্য ফেরদৌসের কবিতা, নতুন করে আলোচনায়

 রোদে হাত-পা কালো হয়ে গেছে? ঘরেই বানান ডি-ট্যান বডি ওয়াশ

রোদে হাত-পা কালো হয়ে গেছে? ঘরেই বানান ডি-ট্যান বডি ওয়াশ

 মধ্যপ্রাচ্য সংকট নিয়ে ট্রাম্প-এরদোয়ানের ফোনালাপ

মধ্যপ্রাচ্য সংকট নিয়ে ট্রাম্প-এরদোয়ানের ফোনালাপ

 বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের জন্য স্কোয়াড ঘোষণা করল শ্রীলঙ্কা

বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের জন্য স্কোয়াড ঘোষণা করল শ্রীলঙ্কা

 জরায়ু ফাইব্রয়েডে করণীয়: কী খাবেন, কী খাবেন না

জরায়ু ফাইব্রয়েডে করণীয়: কী খাবেন, কী খাবেন না

 সাকিবের সঙ্গে সম্পর্কের বরফ গলবে, আশাবাদী তামিম

সাকিবের সঙ্গে সম্পর্কের বরফ গলবে, আশাবাদী তামিম

 হজ থেকে ফিরে কেমন হওয়া উচিত জীবনের ধারা?

হজ থেকে ফিরে কেমন হওয়া উচিত জীবনের ধারা?

 রেমিট্যান্সে ধীরগতি: জুনের ১৪ দিনে এসেছে ১১৫ কোটি ডলার

রেমিট্যান্সে ধীরগতি: জুনের ১৪ দিনে এসেছে ১১৫ কোটি ডলার

সংশ্লিষ্ট

ব্যাংক খাতে প্রভিশন ঘাটতি, পৌনে দুই লাখ কোটি টাকা

ব্যাংক খাতে প্রভিশন ঘাটতি, পৌনে দুই লাখ কোটি টাকা

নতুন এমডি পাচ্ছে ন্যাশনাল ব্যাংক

নতুন এমডি পাচ্ছে ন্যাশনাল ব্যাংক

বিশ্ববাজারে আরও বাড়লো জ্বালানি তেলের দাম

বিশ্ববাজারে আরও বাড়লো জ্বালানি তেলের দাম

পরিবেশবান্ধব সনদ পেল আরও ৪ কারখানা

পরিবেশবান্ধব সনদ পেল আরও ৪ কারখানা