ফাইল ছবি
রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় একের পর এক দুঃসংবাদ পাচ্ছেন দগ্ধদের স্বজনরা। আজ সকালে দগ্ধ আরেক শিক্ষার্থী জারিফের (১৩) মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (২৬ জুলাই) সকাল ৯টা ১০ মিনিটে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সে।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান। তিনি জানান, জারিফের শ্বাসনালীসহ শরীরের ৪০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। ক্রিটিকাল অবস্থায় লাইফ সাপোর্টে ছিল সে। নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে।
তিনি বলেন, এনিয়ে ঘটনাটিতে ইনস্টিটিউটে ১৬ জনের মৃত্যু হলো। এখন ভর্তি আছে ৩৯ জন। যাদের মধ্যে ৪ জন এখনও আইসিইউতে ক্রিটিকাল অবস্থায় আছে।
মৃত জারিফের বাবা মো. হাবিবুর রহমান জানান, মাইলস্টোন স্কুলের ৭ম শ্রেণিতে ইংলিশ ভার্সনে পড়ত জারিফ। তাদের বাড়ি রাজবাড়ীর সদর উপজেলার শ্রীপুর এলাকায়। তার ২ ছেলেমেয়ের মধ্যে জারিফ ছিল ছোট।
এর আগে, সোমবার (২১ জুলাই) বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর এফ-৭ বিজেআই বিমানটি দুপুর ১টা ৬ মিনিটে উড্ডয়নের ১২ মিনিটের মাথায় ১টা ১৮ মিনিটে উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিধ্বস্ত হয়।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
সংশ্লিষ্ট
সাম্প্রতিক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা-পরবর্তী ধারাবাহিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে শুক্রবার (২৫ জুলাই) বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন সস্ত্রীক মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের সাথে সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে ঢাকার তুরাগে যান। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।এ সময় তিনি শোকাহত পরিবারগুলোর খোঁজখবর নেন। শুধু বিমান বাহিনী প্রধান নয়, একজন বাবা ও অভিভাবক হিসেবে তিনি শোকে কাতর পরিবারগুলোর এই কঠিন সময়ে তাদের দুঃখগুলো ভাগ করে নেয়ার চেষ্টা করেন।তিনি জানান, কোনো ভাষায়ই এই শোক প্রকাশ করা সম্ভব নয়। তিনি এই পরিবারগুলোকে যেকোনো প্রয়োজনে সর্বোচ্চ সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দেন। বিমান বাহিনী প্রধানের পত্নী বাফওয়া সভানেত্রী সালেহা খান এ সময় শোকাহত মায়েদের পাশে থাকার প্রত্যয় জানান। বিমান বাহিনী প্রধান সস্ত্রীক নিহত শিশুদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।উল্লেখ্য, ঢাকার তুরাগে বিমান বাহিনী প্রধানের পক্ষ থেকে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নিহত কোমলমতি শিশুদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে তাদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হয়।এছাড়াও, শুক্রবার বিমান বাহিনী প্রধানের পক্ষ থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার সোহাগপুর গ্রামে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষিকা মাসুকা বেগমের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে তার প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হয় এবং বিমান দুর্ঘটনায় নিহত বৈমানিক ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো: তৌকির ইসলামের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনায় রাজশাহীর সপুরায় কবর জিয়ারত করা হয়।এছাড়াও, একইদিনে জুমার নামাজের পর উত্তরার তাফালিয়া ক্রিকেট একাডেমি মাঠ প্রাঙ্গণে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী তাসনিম আফরোজ আয়মানের (১০) নামাজে জানাজায় বিমান বাহিনীর একটি প্রতিনিধিদল অংশ নেয় এবং মরহুমার কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হয়। অপরদিকে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী শুক্রবার বিমান দুর্ঘটনায় শাহাদাত বরণকারী সকল নিহতদের রূহের মাগফেরাত ও আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনায় একযোগে সকল ঘাঁটিতে অফিসার্স মেসে দোয়া ও মাহফিলের আয়োজন করে।বিমান বাহিনী ঘাঁটি বীর উত্তম এ কে খন্দকার (ঢাকা) এর অফিসার্স মেসে আয়োজিত বিশেষ দোয়া মাহফিলে সেনাবাহিনী প্রধান, বিমান বাহিনী প্রধান, প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ), সহকারী নৌবাহিনী প্রধান (পরিচালন), সাবেক বিমান বাহিনী প্রধানরা, সশস্ত্র বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, মরহুম ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো: তৌকির ইসলামের শোকসন্তপ্ত পরিবার এবং মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজের আনুমানিক শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং অভিভাবক সমবেত হন।এ সময় বাহিনী প্রধানরা শোকার্ত পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং যেকোনো প্রয়োজনে সর্বোচ্চ সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দেন। এছাড়াও, একই দিনে পবিত্র জুমার নামাজের পর একযোগে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সকল ঘাঁটি ও ইউনিটের মসজিদসমূহে বিমান দুর্ঘটনায় শাহাদাত বরণকারীদের রূহের মাগফেরাত ও আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনায় বিশেষ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।ভোরের আকাশ/এসএইচ
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন ১৪টি রাজনৈতিক দল ও জোটের প্রতিনিধিরা।শনিবার (২৬ জুলাই) বিকেল ৫টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই বৈঠক বসেছে। বৈঠকে অংশ নেওয়া রাজনীতিবিদরা হলেন– জাতীয় গণফ্রন্ট নেতা আমিনুল হক টিপু বিশ্বাস, ১২ দলীয় জোটের মোস্তফা জামাল হায়দার, নেজামে ইসলাম পার্টি মাওলানা আব্দুল মাজেদ আতহারী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নেতা মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, এনপিপি চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, বাংলাদেশ জাসদ নেতা ড. মুশতাক হোসেন, ন্যাশনালিস্ট ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট নেতা ববি হাজ্জাজ, জাকের পার্টির মহাসচিব শামীম হায়দার, ইসলামী ঐক্যজোট মহাসচিব মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজি, ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বাবলু, বাংলাদেশ লেবার পার্টি চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, মার্কসবাদী- বাসদ সমন্বয়ক মাসুদ রানা ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মন্জুরুল ইসলাম আফেন্দী।প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার (২২ জুলাই) দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য চারটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা।এরপর বুধবার (২৩ জুলাই) আরও ১৩টি দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।ভোরের আকাশ/এসএইচ
আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, মানবাধিকারকে একটি সংস্কৃতি হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এটা শুধু আইন দিয়ে সম্ভব নয়। সবার উপলব্ধি, আত্মশুদ্ধি ও স্বচ্ছতার প্রয়োজন। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের আত্মসমালোচনা ও আত্মশুদ্ধি করতে হবে। আইনগত ও প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তনের সঙ্গে এসব বাস্তবায়িত হলে সত্যিকার অর্থে পরিবর্তন আসতে পারে।শনিবার (২৬ জুলাই) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে ‘হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি’ আয়োজিত ১১তম মানবাধিকার সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।আসিফ নজরুল বলেন, আমাদের প্রত্যেকটা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বচ্ছতা লাগবে। আমাদের আত্মসমালোচনা করতে হবে, আত্মশুদ্ধি করতে হবে। এগুলোর সঙ্গে যখন আমরা আইনগত পরিবর্তন করবো, প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তন করবো; তখন একটা সত্যিকার অর্থে পরিবর্তন আসতে পারে।সবার আগে রাষ্ট্রের প্রধান তিনটি অঙ্গ- নির্বাহী বিভাগ, আইন বিভাগ, বিচার বিভাগ সংস্কার করা দরকার উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, আগে এই তিনটা অঙ্গের প্রবলেম সলভ (সমস্যা সমাধান) করতে হবে। এখানে প্রবলেম রেখে তথ্য কমিশন করে, হিউম্যান রাইটস কমিশন করে, সেমিনার সিম্পোজিয়াম করে আসলে কোনও লাভ হবে না। আসল জায়গাতে হাত দিতে হয়।মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা একটি বড় চ্যালেঞ্জের ব্যাপার উল্লেখ করে আইন উপদেষ্টা বলেন, অনেকে মনে করে, মানবাধিকার বাস্তবায়ন ইউরোপে হয়েছে, আমেরিকায় হয়েছে। তারা নিজের দেশের ভেতরে করেছে। কিন্তু তারা সারা পৃথিবীতে চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করার কাজে নিয়োজিত আছে।তিনি বলেন, ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার ভয়টা চলে গেলে তখন (সরকার) কী দানবে পরিণত হয়, সেটা আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট আমল থেকে আমরা বুঝতে পারি। যেটার কারণে আমাদের ১ হাজারেরও বেশি ছাত্র-জনতাকে প্রাণ দিতে হয়েছে। হাজার হাজার ছাত্রজনতাকে চিরস্থায়ীভাবে পঙ্গু হয়ে যেতে হয়েছে। কত কঠিন ভয়াবহ মূল্য দিতে হয়েছে আমাদের তা উপলব্ধির করে সার্বিকভাবে চিন্তা চেতনার প্রয়োজন আছে। আমরা আশাবাদী থাকবো। কিন্তু আমরা যেন ইউটোপিয়ান হয়ে না যাই।গুমের শিকার মাইকেল চাকমা বলেন, আমাকে তুলে নেওয়ার পর আমার পরিবার, মানবাধিকারকর্মীসহ অনেকে আমাকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করেছে। এক পর্যায়ে আমার পরিবার মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। আমার বাবা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে মারা যায়। তারা (পরিবার) একসময় আমারো শেষকৃত্য করে নেয়। একটা পরিবার কতটুকু আশাহীন হলে শেষকৃত্য করে নেয়! আমার সেই অবস্থা থেকে মুক্ত হয়ছি। কিন্তু এখনও প্রশ্ন রয়ে যায় ভবিষ্যতে বাংলাদেশ কেমন হবে?ভোরের আকাশ/এসএইচ
ভারতে থাকা কোনো রোহিঙ্গাকে গ্রহণ করা হবে না বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।শনিবার (২৬ জুলাই) দুপুর পৌনে ১২টায় সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীতে র্যাব-১১ এর কার্যালয় পরিদর্শনকালে তিনি এ কথা বলেন।জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ভারত যেভাবে পুশ ইন করছে তা নিন্দনীয়।তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অনেক মামলায় অগনিত ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যমূলকভাবে আসামি করা হয়েছে। এজন্য মামলার তদন্ত কাজ বিলম্বিত হচ্ছে।তিনি আরও বলেন, কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যাতে হয়রানি না হয়, সেদিকে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।এ সময় অভ্যুত্থানের মামলাগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে বলেও জানান তিনি।নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের এই উপদেষ্টা বলেন, আগামী নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে অভ্যুত্থানে লুট হওয়া অস্ত্রসহ সারাদেশে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী তৎপর রয়েছে।এদিকে মোহাম্মদপুরের আলোচিত ছিনতাইয়ের ঘটনার বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, এখন পর্যন্ত চারজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। যার মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি ফোনও উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনার জন্য একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। দোষীদের ছাড় দেওয়া হবে না। পাশাপাশি কেউ যদি এই ঘটনাকে অবহেলা করে থাকে তাকেও শাস্তির আওতায় আনা হবে।এ সময় উপদেষ্টার সঙ্গে র্যাব মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান, র্যাব-১১ ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক (সিও) এডি. ডিআইজি মোশারফ হোসেন ভূঁইয়া, উপ অধিনায়ক মেজর অনাবিল ইমাম, অপস অফিস সিনিয়র এএসপি গোলাম মোর্শেদসহ বিভিন্ন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।ভোরের আকাশ/এসএইচ