অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল
আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, জুলাই আন্দোলন নির্মূলে পরিচালিত নির্বিচারে গণহত্যার অপরাধে শেখ হাসিনার বিচার আজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হচ্ছে।
আইন উপদেষ্টা তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে এক পোস্টে বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন ও তদন্ত টিম দিনরাত পরিশ্রম করে গণহত্যার বিচারের কাজ এগিয়ে নিচ্ছে।
শহীদ ওয়াসিমের বাবার একটি ছবি ফেসবুক পোস্টে আপলোড করে উপদেষ্টা বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সবচেয়ে প্রথম যারা প্রাণ দিয়েছেন ছাত্রদল নেতা ওয়াসিম ছিলেন তাদের অন্যতম। আবু সাঈদ, মুগ্ধ আর ওয়াসিমের পরিবারের (এবং আমাদের সবার) বিচারের প্রতীক্ষার অবসান হতে যাচ্ছে।’
উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘নির্বিচারে হত্যার অপরাধে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে আনুষ্ঠানিকভাবে। প্রসিকিউশন টিম কর্তৃক আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে ফরমাল চার্জ দাখিলের মাধ্যমে এই বিচার শুরু হবে। বিটিভিসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে এটি সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। আমাদের প্রসিকিউশন ও তদন্ত টিম দিনরাত পরিশ্রম করে গণহত্যার বিচারের কাজ এগিয়ে নিচ্ছে। আমরা এই বিচারে সকল ডিউ প্রসেস অনুসরণ করবো।
ইনশাআল্লাহ, সুষ্ঠুভাবে বিচার করেই শেখ হাসিনা ও অন্যান্য অপরাধীদের দোষ প্রমাণ করা হবে।’
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মূলে আওয়ামী লীগ সরকার, তার দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠিত করে বলে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। জাজ্জ্বল্যমান এসব অপরাধের বিচার অনুষ্ঠিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।
ভোরের আকাশ/আজাসা
সংশ্লিষ্ট
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, অর্থবছরের (২০২৫-২৬) প্রস্তাবিত বাজেটের মৌলিক জায়গায় গলদ রয়ে গেছে।তিনি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট আগের সরকারের ধারাবাহিকতা। রাজস্ব আয়ের সঙ্গে বাজেটের আকারের সম্পৃক্ততা রেখে বাজেট করা উচিত ছিল, যা করা হয়নি।সোমবার (২ জুন) বিকালে রাজধানীর হোটেল সারিনায় তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়া সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।বাজেটের আকার আরও ছোট হওয়া উচিত ছিল উল্লেখ করে বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য এই বাজেট বাস্তবায়ন কঠিন হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের দেওয়া বাজেট নিয়ে বুধবার (৪ জুন) বিএনপি আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দেবে বলেও জানান তিনি।আমির খসরু বলেন, ‘আগের বাজেট যেভাবে চলে আসছে, সেখান থেকে সংখ্যার তারমাম্য হয়েছে কিন্তু বাজেটের প্রিন্সিপাল একই রয়ে গেছে। এটাও গতানুগতিক বাজেট।বিগত সরকারের ধারাবাহিকতা থেকে অন্তর্বর্তী সরকার রের হতে পারেনি। রাজস্ব আয়ের ওপর ভিত্তি করে বাজেট করা উচিত। তাহলে প্রাইভেট সেক্টরে টাকার সরবরাহ থাকবে, বিনিয়োগ থাকবে, ইন্টারেস্ট কমে আসতো, বিদেশি ঋণের পরিমাণ কমে আসত ও সুদের হারও কম পেমেন্ট করতে হতো। কিন্তু আমরা সেই জায়গা থেকে সরে আসতে পারিনি। আমি মনে করি, এই মৌলিক জায়গায় গলদ রয়ে গেছে।’ভোরের আকাশ/জাআ
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, জুলাই সনদ কার্যকর হওয়ার আগে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা ঠিক হবে না। জুলাই সনদ ঘোষণার আগে যদি নির্বাচনের তারিখ ঘোষিত হয়, তাহলে সংস্কার প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে।সোমবার (২ জুন) বিকেলে রাজধানীর বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমি মিলনায়তনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলোচনা শেষে এ কথা বলেন তিনি।নাহিদ ইসলাম বলেন, আগামী ৫ আগস্ট আমাদের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্ণ হবে। এটি আমরা উদযাপন করতে চাই। তিনি বলেন, যেসব রাজনৈতিক দল দ্রুত নির্বাচন চাচ্ছে আমরা তাদের প্রতি এবং সরকারের প্রতি আহ্বান রেখেছি। ১৬ বছর অপেক্ষা করেছি, ১০ মাস অপেক্ষা করেছি, আরও দুই মাস যেন অপেক্ষা করি। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকি এবং সরকারকে সময় দেই। এ দুই মাসের মধ্যে আমরা জুলাই সনদ রচনা করে ফেলি।তিনি আরও বলেন, জুলাই সনদের পরই সরকার যেন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে। জুলাই ঘোষণাপত্রের জন্য ৩০ কার্যদিবস ছিল, সেটা অনেক কার্যদিবস হয়ে গেছে। কিন্তু আমরা কোনো ধরনের পদক্ষেপ দেখছি না। আমরা আহ্বান জানিয়েছি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যেন জুলাই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়িত হয়। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার, নির্বাচন কমিশন আইন সংস্কার এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করা উচিত।নাহিদ ইসলাম বলেন, সকল রাজনৈতিক দল মিলে এই দুই মাসের মধ্যে জনগণের ভবিষ্যতের জন্য বাংলাদেশে শাসন ব্যবস্থার মৌলিক সংস্কারের রূপরেখা হিসেবে জুলাই সনদ তৈরি করা উচিত। জুলাই সনদ হওয়ার পরেই আমরা চাই সরকার নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুক। সেই সময়েই আমরা আমাদের দলের অবস্থান স্পষ্ট করব, আমরা কখন নির্বাচন চাই।তিনি বলেন, সবশেষে আমরা নির্বাচন কমিশনের প্রসঙ্গ তুলেছি। আগেও বলেছি, একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন ও সংশ্লিষ্ট আইন সংস্কার অপরিহার্য। নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে। নির্বাচন কমিশন নিয়ে মানুষের আস্থা নেই, নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ। আমরা উচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণও দেখেছি, নির্বাচন কমিশন নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তাই নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের বিষয়টি সরকারকে বিবেচনা করতে হবে।প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আজকের বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ ও আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস; জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ; গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেন।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের নিহত নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্যর বড় ভাই সর্দার আমিরুল ইসলাম সাগর জাতীয় নাগরিক পার্টিতে (এনসিপি) যোগ দিয়েছেন।এর আগে, সাগর ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। গতকাল রোববার গঠিত এনসিপি ঢাকা মহানগর উত্তর সমন্বয় কমিটির সদস্য করা হয়েছে তাকে।গত ১৩ মে সর্দার আমিরুলের ছোট ভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এফ রহমান হল ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক সাম্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চের পাশে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত হন। এই হত্যার বিচারের দাবিতে এখনো কর্মসূচি পালন করছে ছাত্রদল।এদিকে এনসিপিতে যোগ দেওয়া সর্দার আমিরুল ইসলাম ২০১৭ সালের আগস্টে ফেসবুকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বহিষ্কার হয়েছিলেন। পরে ২০১৯ সালের ১৭ এপ্রিল বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে সাগরকে সংগঠনে ফিরিয়ে নেয় ছাত্র দল।এনসিপিতে যোগ দেওয়ার বিষয়ে আমিরুল ইসলাম সাগর বলেছেন, ২০১৯ সালে ছাত্র রাজনীতি ছাড়ার পর থেকে আর কিছুতে ছিলাম না। জিয়াউর রহমানের আদর্শের জাতীয়তাবাদী রাজনীতিতে বিশ্বাস করি। আমার বাবাও ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাকালীন নেতা ছিলেন। গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে জাতীয়তাবাদের রাজনীতি করার প্রচেষ্টা হিসেবেই এনসিপিতে যোগ দিয়েছি।ঢাকা মহানগর উত্তর কমিটিতে আছেন যারা: এনসিপির ঢাকা মহানগর উত্তর সমন্বয় কমিটিতে প্রধান সমন্বয়কারী আকরাম হুসাইন, যুগ্ম সমন্বয়কারী মোস্তাক আহমেদ শিশির, এম এম শোয়াইব (মোহাম্মদপুর জোন)।সদস্য করা হয়েছে- আব্দুল্লাহ আল মনসুর (মিরপুর জোন), সৈয়দা নীলিমা দোলা, কাজী সাইফুল ইসলাম, সর্দার আমিরুল ইসলাম, মুনতাসির মাহমুদ (তেজগাঁও জোন), মাশকুর রাতুল (উত্তরা জোন), মাইনুল ইসলাম (গুলশান জোন), ওমর ফারুক (রামপুরা জোন) ও খালেদা আক্তার নাদিয়া চৌধুরী।জানা গেছে, এই কমিটিই জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির ঘোষিত প্রথম জেলা কমিটি।ভোরের আকাশ/এসএইচ
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. হামিদুর রহমান আযাদ বলেছেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে বৈঠকে আমাদের পজিটিভ রেসপন্স জানানো হয়েছে। আমরা আশা করছি, দাঁড়িপাল্লা প্রতীক ফিরে পাবো। রোববার (২ জুন) প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।তিনি বলেন, আজকের বৈঠকে সিইসি আমাদের পজিটিভ রেসপন্স জানিয়েছে। বিলম্ব না করে দ্রুততম সময়ে যাতে নিবন্ধন দেওয়া হয়, আমরা তা বলেছি।তিনি আরো বলেন, সুপ্রিম কোর্টে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বিষয়ক যে আপিল ছিল, সে আপিলের শুনানি হয়েছে এবং কোর্ট রায় দিয়েছেন। সে রায়ে নির্বাচন কমিশনকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে। এ আদেশের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকার কর্তৃক আমাদের নিবন্ধনের যে অধিকার কেড়ে নিয়েছিল, তা ফিরে পেয়েছি।ড. হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, আজকের বৈঠকে আদালতের রায় এক্সিকিউশন করার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে যে আবেদনটা করা হয়েছিল, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তারা আমাদের এ বিষয়ে পচিটিভ রেসপন্স করেছেন এবং দ্রুত এ বিষয়টি কার্যকর করা হবে জানানো হয়েছে। আদালত যে আমাদের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছে, আমরা তা ফিরে পেতে চাই।প্রতীকের বিষয়ে তিনি বলেন, আদালতের আদেশে বলা হয়েছে যে, সব পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে হবে। আমরা দাঁড়িপাল্লা প্রতীকেই তো কাজ করেছি। কমিশন তো আদালতের আদেশ অমান্য করতে পারবে না। আমরা আশাবাদী যে, দাঁড়িপাল্লা প্রতীকই আমরা ফিরে পাবো।সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের পর নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরে পেতে বেলা ১২টার দিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠকে বসে জামায়াতের ছয় সদস্যের প্রতিনিধিদল।জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. হামিদুর রহমান আযাদের নেতৃত্বে বৈঠকে অংশ নেন দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং কেন্দ্রীয় মিডিয়া ও প্রচার বিভাগের প্রধান অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, মোবারক হোসাইন, অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার এবং আইনজীবী অ্যাডভোকেট শিশির মনির।এর আগে, রোববার (১ জুন) রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বাতিল হওয়া নিবন্ধন ফিরিয়ে দিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।ভোরের আকাশ/এসএইচ