নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৯ জুলাই ২০২৫ ১২:৩৯ এএম
জুলাইয়ের মধ্যে সনদ প্রণয়ন না হলে দায়ভার সরকারের: সালাহউদ্দিন
বাংলাদেশে জনগণ এখনো ‘পিআর’ (আনুপাতিক) নির্বাচনী পদ্ধতির বিষয়টি পুরোপুরি বোঝে না— এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, জুলাইয়ের মধ্যেই জাতীয় সনদ প্রণয়ন না হলে তার দায়ভার বহন করতে হবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর মিরপুর পল্লবীতে বিএনপির আয়োজিত মৌন মিছিলপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। মহানগর উত্তর বিএনপি আয়োজিত এই কর্মসূচি ছিল ‘জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থান’– এ শহীদদের স্মরণে আয়োজিত দলীয় কর্মসূচির অংশ।
সালাহউদ্দিন অভিযোগ করেন, কিছু রাজনৈতিক দল নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের দাবি তুলে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, “কেয়ারটেকার সরকার তিন মাসের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত হয় কেবল জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের জন্য। তাদের হাতে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের কোনো সাংবিধানিক দায়িত্ব নেই।”
তিনি আরও বলেন, “যারা এখন পিআর পদ্ধতি, স্থানীয় সরকার নির্বাচন ইত্যাদি নিয়ে মাঠ গরম করছে— তাদের উদ্দেশ্য একটাই: নির্বাচন বিলম্বিত ও অনিশ্চিত করা।”
সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অতীতে যারা অবস্থান নিয়েছে, তারা এখন ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে। এসব অপচেষ্টা এবার ব্যর্থ হবে।”
সালাহউদ্দিন অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতি ‘ঢাকায় জন্ম হলেও দাফন হয়েছে দিল্লিতে’। তিনি আরও বলেন, “আজ যারা বিভিন্ন নামধারী দল হয়ে সংস্কার কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় বসছে— তাদের অনেকেই অতীতে আওয়ামী লীগের সঙ্গী ছিল। অথচ এখন তারা দলবদ্ধভাবে কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই সভা-সমাবেশ করে যাচ্ছে।”
তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, “জুলাই মাস শেষ হওয়ার আগেই যদি জাতীয় সনদ চূড়ান্ত না হয়, তবে এর দায় বর্তাবে সংস্কার কমিশন ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ওপর।”
বিএনপির এই নেতা বলেন, “আমরা তো ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব আগেই দিয়েছি। এই রাষ্ট্রকে গণতান্ত্রিক ও জনগণের সেবায় নিয়োজিত করতে হলে সংবিধান, রাষ্ট্রব্যবস্থা ও প্রশাসনিক কাঠামোতে আমূল সংস্কার দরকার।”
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, “সব দলের সঙ্গে আলোচনা করে একদিন অবশ্যই আমরা একটি জাতীয় ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারব। যদিও গণতন্ত্রে শতভাগ মতৈক্য সব সময় সম্ভব নয়, তবে গণতন্ত্রের সৌন্দর্য সেখানেই।”
সমাবেশের শেষদিকে তিনি ফ্যাসিবাদবিরোধী বিভিন্ন স্লোগানে অংশ নেন, যেমন: “এই দেশ আমার মুক্ত, আর দেব না রক্ত”, “ফ্যাসিবাদের ঠাঁই নাই, বাংলায় বাংলায়” এবং “রক্তঝরা বাংলায়, ফ্যাসিবাদের ঠাঁই নাই”।
ভোরের আকাশ/হ.র