ভোরের আকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৭ জুন ২০২৫ ১০:০৫ পিএম
ফাইল ছবি
গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। এ ছাড়া মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে আরও ২৪৪ জন। মারা গেছেন তিনজন। চলতি বছরের ১৭ জুন পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ছয় হাজার ৪৬৬ জন। এর মধ্যে ৫৯ দশমিক দুই শতাংশ পুরুষ এবং ৪০ দশমিক আট শতাংশ নারী রয়েছেন। চলতি বছরে এ যাবত ডেঙ্গুতে ৩০ জন মারা গেছে।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৩৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৯ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২৬ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের চার জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩২ জন, ময়মনসিহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) এক জন, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২৪ জন রয়েছেন।
২৪ ঘণ্টায় ২০৯ ডেঙ্গুরোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। চলতি বছরে এ যাবত মোট পাঁচ হাজার ৬৯৮ রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে এক লাখ এক হাজার ২১৪ জন এবং ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যুবরণ করেছেন ৫৭৫ জন।
এর আগে ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়, পাশাপাশি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন মোট তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন।
কুমিল্লায় ডেঙ্গুতে মৃত্যু তিন : জেলার দাউদকান্দিতে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা ক্রমেই বেড়েই চলছে। প্রতিদিনই আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। ইতোমধ্যে দু’টি ওয়ার্ডকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। নিহতরা হলেন- উপজেলার দোনারচর গ্রামের মান্নানের ছেলে ইউসূফ আলী, নাজির চৌধুরীর স্ত্রী মাকসুদা বেগম ও রাসেলের স্ত্রী শাহিনুর আক্তার।
পৌর স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানায়, দাউদকান্দি পৌরসদরে ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দোনারচর, সবজিকান্দি, দাউদকান্দি, সাহাপাড়া, বলদাখাল ও তুজারভাঙ্গা গ্রামগুলোতে দ্রুত বাড়ছে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা। আক্রান্তদের মধ্যে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, সাংবাদিক, রাজনৈতিক, ব্যবসায়ী, নারী-শিশু ও বৃদ্ধারা রয়েছেন।
দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. হাবিবুর রহমান বলেছেন, জুন মাসের শুরু থেকে এই পর্যন্ত হাসপাতালে ১০২ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এরমধ্যে উন্নত চিকিৎসার জন্য ২৮ জনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়াও উপজেলার বেসরকারি হাসপাতাগুলোতে ২৫৮ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। ডেঙ্গু রোগীদের তাৎক্ষণিক সেবা দিতে প্রস্তুত রয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
দাউদকান্দি পৌর প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেদওয়ান ইসলাম বলেছেন, পৌরসভার পক্ষ থেকে দু’টি ওয়ার্ডকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে। প্রতিদিন ডেঙ্গু মশার বিস্তার রোধে মশক নিধন কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। প্রতিদিন ফ্রগার মেশিনের মাধ্যমে উচ্চমাত্রার ওষুধ প্রয়োগ করা হচ্ছে।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা মন্ত্রণালয়ের চিঠি : দেশের যেসব এলাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে সেসব এলাকায় কার্যকর ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় সরকার বিভাগকে চিঠি দিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানানো হয়। চিঠিতে সই করেছেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. সাইফুল ইসলাম মজুমদার।
চিঠিতে বলা হয়, সম্প্রতি দেশে ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পেয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন সব সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা এলাকায় বিশেষ করে ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ, বরিশাল, বরগুনাসহ যেসব এলাকায় ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পেয়েছে সেখানে মশক নিধন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাকরণ, জলাবদ্ধতা দূরীকরণ জরুরি।
এছাড়া, এ বিভাগের অধীন তৃণমূল পর্যায়ের কমিটিগুলোর মাধ্যমে ডেঙ্গু রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে জনসচেতনতামূলক বার্তা প্রচার-প্রচারণাসহ প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা অপরিহার্য। এসব বিভাগের আওতাধীন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে শূন্য পদে দ্রুত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ করা প্রয়োজন।
ভোরের আকাশ/এসএইচ