ভোগান্তিতে পথচারী
জাহিদুল ইসলাম, জৈন্তাপুর (সিলেট) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২২ জুন ২০২৫ ০৭:৪৪ পিএম
জৈন্তাপুরে ৩০ বছরেও পাকা হয়নি রাস্তা: মানববন্ধন অনুষ্ঠিত
জৈন্তাপুর উপজেলাধীন চিকনাগুল ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডবাসীর চলাচলের একমাত্র রাস্তাটির বেহাল দশা। ভোগান্তিতে কয়েক গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ। এরই মধ্যে রাস্তাটি পাকাকরণের দাবীতে গত শুক্রবার (২০ জুন) বেলা আড়াই টায় এলাকাবাসীর উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটি পাকা করণের দাবি জানিয়ে আসছে এলাকাবাসী। জৈন্তাপুর উপজেলা প্রবেশ দ্বার সিলেট তামাবিল মহাসড়ক ঘাটেরচটি আইসক্রিম ফ্যাক্টরি টু নয়াটিলা হানিফ মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তাটি প্রায় দুই কিলোমিটার কাঁচা রাস্তাটি এখনো পাকা হয়নি। ওই রাস্তাটি প্রতিদিন প্রায় ১০-১২ হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম। একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তাটি দেখে মনে হয় হাল চাষ করার জমি। কর্দমাক্ত রাস্তা দিয়ে চলাচলে এলাকাবাসীকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। মাদ্রাসা, স্কুল কলেজের ছাত্র ছাত্রীসহ শিশু শিক্ষার্থী ও পথচারী এবং মসজিদের মুসল্লিদের চলাচলে দুর্ভোগের শেষ নেই। বিশেষ করে ঘাটেরচটি হাওর এলাকার মাঠে এই রাস্তাটি দিয়ে জালালাবাদ সেনানিবাসের আর্মি প্যারা জাম্প ট্রেনিং এ যাতায়াত করে থাকেন। এছাড়া দুটি হাউজিং, মসজিদ, মাদ্রাসা, রয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সবাই মিলে একাধিকবার স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বার, প্রশাসন, উপজেলা চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় সংসদ সদস্যের কাছে কাঁচা রাস্তাটি পাকা করণের জন্য দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু কেউ কোনো কাজ করেননি। তাই ভোগান্তি নিয়েই এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
মানববন্ধনে এলাকার সমাজসেবী জিতু মিয়া, সানুর মিয়াসহ একাধিক ব্যক্তি বলেন, প্রতিদিন এ রাস্তা দিয়ে শতাধিক শিক্ষার্থী বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করে। এছাড়া আমাদের দেশের গর্ব বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্যারা জাম্প ট্রেনিংয়ে মাঠে যেতে এই রাস্তাটি ব্যবহার করেন। আমাদের সকলের চলতে খুবই সমস্যা হয়। জরুরি সেবার কোনো গাড়ি বা যেকোনো গাড়ি গ্রামে প্রবেশ করতে পারে না। হিন্দু বা মুসলিম কেউ মারা গেলে কাদার কারণে সৎকার, দাফন-কাফনে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। অসুস্থ কোনো ব্যক্তিকে দ্রুত হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। ৩০ বছরের পুরনো অতি প্রাচীন মাত্র দুই কিলোমিটার রাস্তাটি পাকাকরণ এখন সময়ের দাবি।
স্থানীয় বাসিন্দা আফতাব আলী, আখলিছ মিয়া বলেন সামান্য বৃষ্টিতে কিছু কিছু এলাকায় হাঁটু পর্যন্ত কাদা হয়ে যায়। এছাড়াও পাশের মাঠের সব ফসল এই রাস্তা দিয়ে বাড়ি নিতে হয়। এই রাস্তা দিয়েই কৃষি পণ্য বাজারজাত করা হয়। আমাদের এ কষ্ট কবে দূর হবে তার কোনো ঠিক নেই।
এ বিষয়ে চিকনাগুল ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড মেম্বার ইঞ্জিনিয়ার শরিফুল ইসলাম জানান, রাস্তাটির শুরুতে বিগত দিনে প্রায় সাড়ে ৩ শত ফুট ইটসলিং ও পাকাকরণ হয়েছে। এছাড়া গত ১৩ জুলাই ২০২৩ ইং সালে সাবেক মন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি, প্রধান প্রকৌশলী স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি ভবন, আগারগাঁও, ঢাকা বরাবর ডিও লেটার প্রেরণ করেন। যাহা টেন্ডার প্রক্রিয়া দিন ছিল। কিন্তু গত ৫ আগস্ট সরকারের পেক্ষাপট পরিবর্তন হওয়ায় এটি বাতিল হয়। এর প্রেক্ষিতে আমি এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে গত ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ইং প্রধান প্রকৌশলী স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি ভবন, আগারগাঁও, ঢাকা বরাবর পুনরায় রাস্তা পাকাকরণের জন্য উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার এর সুপারিশ সহ ৬নং চিকনাগুল ইউনিয়নের"ঘাটের চটি আইসক্রিম ফ্যাক্টরী রাস্তা (আইডি নং- ৬৯১৫৩৪০৯৫)" পাকা করণ প্রসঙ্গে আবেদন করেছি। আশাবাদী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আবেদনটি গুরুত্ব সহকারে নিলে রাস্তাটির কাজ সম্পন্ন হবে।
ভোরের আকাশ/জাআ