সিলেট ব্যুরো
প্রকাশ : ১৬ আগস্ট ২০২৫ ০৮:২৪ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র ‘সাদাপাথর’ থেকে লুট হওয়া আরও আড়াই লাখ ঘনফুটেরও বেশি পাথর উদ্ধার করেছে প্রশাসন। আজ সিলেট সদর উপজেলা ও গোয়াইনঘাট উপজেলায় চালানো অভিযানে বিভিন্ন বাসা-বাড়িও ক্র্যাশার মিল থেকে এসব পাথর উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলার মহালদিক ও আশপাশের গ্রামে শনিবার (১৬ আগস্ট) সকাল ১০টা থেকে দুটি টিমের অভিযান শুরু হয় বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খোশনূর রুবাইয়াৎ।
খোশনূর রুবাইয়াৎ বলেন, ‘আমি ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নেতৃত্বে দুটি টিম অভিযান চালিয়ে বাসাবাড়ি ও বিভিন্ন ক্র্যাশার মিল থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করেছি।’
তিনি বলেন, ‘উপজেলার মহলদিক গ্রামে প্রচুর ছোট ছোট স্তূপে পাথর রাখা এবং প্রায় প্রতিটি বাড়িতে আমরা দেখেছি পাথর আছে। যে পাথরগুলো ধোপাগুল এলাকার ক্র্যাশার মিল থেকে এনে গ্রামের উঠান ও বাসাবাড়িতে রাখা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যেসব বাড়ির মালিকরা এবং যারা এই লুটপাটকাণ্ডে জড়িত তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। তাদের নাম আমরা নিয়েছি, মিল ও বাড়ির মালিকদের বিরুদ্ধে মামলা হবে।’
অবৈধভাবে লুট হওয়া প্রাকৃতিক সম্পদ উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি। অন্যদিকে গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের বিন্নাকান্দি এলাকা থেকে ২ হাজার ৫০০ ঘনফুট সাদাপাথর জব্দ করা হয়েছে বলে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রতন কুমার অধিকারী জানান।
গত বছরের ৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর থেকেই সিলেটের অন্যান্য পাথর কোয়ারির মতো সাদাপাথর হিসেবে পরিচিত কোম্পানীগঞ্জের ধলাই নদের উৎসমুখেও শুরু হয় ব্যাপক লুটপাট। দিনের বেলা প্রকাশ্যেই সেই সব পাথর নৌকা করে নিয়ে লুট করা শুরু হয়। প্রতিদিন শত শত নৌকা দিয়ে লুটের পাথর পরিবহন করা হয়। নদী তীরের বালি খুঁড়েও লুটপাট চলে। লাগামহীন লুটপাটের কারণে ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় এ পর্যটনকেন্দ্র।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে এ লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে সম্প্রতি সোশাল মিডিয়ায় শোরগোল পড়লে দুদকসহ স্থানীয় প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। এই অবস্থার মধ্যে বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট ‘সাদাপাথর’ থেকে লুট হওয়া পাথর সাত দিনের মধ্যে উদ্ধার করে যথাস্থানে প্রতিস্থাপনের নির্দেশ দিয়েছে। এ ঘটনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিশেষ অভিযান শুরু করা হয়। অভিযান চলাকালে বিভিন্ন স্থানে বালু ও মাটি চাপা দেওয়াসহ লুকানো অবস্থায় পাথর পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন ক্র্যাশার মিলে এবং স্থানীয় বসতবাড়িতেও লুকিয়ে রাখা পাথর উদ্ধার করা হচ্ছে।
ভোরের আকাশ/এসএইচ