সংগৃহীত ছবি
২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল আজ বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ১০টায় একযোগে প্রকাশিত হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা তিনটি সহজ প্রক্রিয়ায় তাদের ফলাফল জানতে পারবে।
বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. খন্দোকার এহসানুল কবিরের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকা, রাজশাহী, কুমিল্লা, যশোর, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেট, দিনাজপুর, ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড এবং বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ফলাফল সকাল ১০টায় প্রকাশ করা হবে।
শিক্ষার্থীরা ফলাফল জানতে পারবে ওয়েবসাইটের www.educationboardresults.gov.bd মাধ্যমে। সেক্ষেত্রে ওয়েবসাইটে গিয়ে বোর্ড, রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়ে ফলাফল দেখা যাবে। আবার কেউ চাইলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা কেন্দ্র থেকেও ফলাফল জানতে পারবে৷ আর ফল জানার তৃতীয় পদ্ধতিটি হলো এসএমএস। এক্ষেত্রে নির্ধারিত শর্ট কোড 16222–এ বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর, রোল ও বছর লিখে এসএমএস পাঠিয়েও ফল জানা যাবে।
ফলাফল প্রকাশ উপলক্ষ্যে একই দিন সকাল ১০টায় মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকার সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে, ফলাফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন গ্রহণ করা হবে ১৭ অক্টোবর থেকে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত। শিক্ষার্থীরা অনলাইনে https://rescrutiny.eduboardresults.gov.bd ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবে। শিক্ষা বোর্ড বা অন্য কোনো অফিসে সরাসরি আবেদন করা যাবে না।
ভোরের আকাশ/তা.কা
সংশ্লিষ্ট
মায়ের অসুস্থতার কারণে কেন্দ্রে দেরিতে আসায় পরীক্ষা দিতে না পারা সেই আনিসা আহমেদ এইচএসসি পরীক্ষায় ফেল করেছেন। তিনি বাংলা ও ইসলামের ইতিহাস বিষয়ে ফেল করেছেন।বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. আসাদুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর প্রথম দিনই (২৬ জুন) ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরীক্ষার্থী আনিসা মায়ের অসুস্থতার কারণে সময়মতো পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছুতে পারেননি। দেরি হওয়ায় তাকে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেননি দায়িত্বরতরা। এসময় ওই ছাত্রী পরীক্ষাকেন্দ্রের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন। গেটের বাইরে দীর্ঘসময় অপেক্ষায় থেকে তিনি সেদিন ফিরে যান। ওই ছাত্রীর পরীক্ষাকেন্দ্র ছিল রাজধানীর সরকারি মিরপুর বাঙলা কলেজ।আনিসার কান্না-আকুতি তখন নাড়িয়ে দেন বহু মানুষের বিবেক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশ্ন উঠে—আইন কি মানবিক বিবেচনার ঊর্ধ্বে? নেটিজেনরা দাবি তোলেন—মানবিক বিবেচনায় হলেও তাকে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া উচিত।অন্তর্বর্তী সরকারও সেই দাবি আমলে নেয়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে তখন শিক্ষা উপদেষ্টার বরাতে জানানো হয়, ‘পরীক্ষা দিতে না পারা আনিসার বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে।’ভোরের আকাশ/মো.আ.
বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে চলতি বছরের এইচএসসি (ভোকেশনাল/বিএম/ডিপ্লোমা ইন কমার্স) পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। এতে সারাদেশে গড় পাসের হার ৬২ দশমিক ৬৭ শতাংশ। আর জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ হাজার ৬১০ জন।বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) কারিগরি শিক্ষা বোর্ড সূত্র এ তথ্য জানায়।সকাল ১০টায় দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ড একযোগে ফল প্রকাশ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড— ঢাকা, রাজশাহী, কুমিল্লা, যশোর, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেট, দিনাজপুর ও ময়মনসিংহের পাশাপাশি বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড এবং বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড। প্রতিটি বোর্ড নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ফলাফল প্রকাশ করেছে।শিক্ষার্থীরা তিনটি উপায়ে ফল জানতে পারবেন। অনলাইনে ফল দেখতে হলে শিক্ষার্থীদের www.educationboardresults.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে পরীক্ষার নাম, বোর্ড, রোল নম্বর এবং রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়ে তথ্য পূরণ করতে হবে। এছাড়া, মোবাইল ফোন থেকে এসএমএস পাঠিয়েও ফল জানা যাবে। এজন্য মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে লিখতে হবে— HSC <স্পেস> বোর্ডের প্রথম তিন অক্ষর <স্পেস> রোল নম্বর <স্পেস> ২০২৫— এবং তা পাঠাতে হবে ১৬২২২ নম্বরে। যেমন: HSC DHA 123456 2025। এছাড়া, শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা পরীক্ষাকেন্দ্র থেকেও ফল জানতে পারবে।ফল প্রকাশের পর যারা নিজের প্রাপ্ত ফলাফলে সন্তুষ্ট নন, তারা ফল পুনর্নিরীক্ষার আবেদন করতে পারবেন আগামী ১৭ অক্টোবর থেকে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত। শুধুমাত্র অনলাইনের মাধ্যমে এই আবেদন করা যাবে, নির্ধারিত ওয়েবসাইট https://rescrutiny.eduboardresults.gov.bd গিয়ে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। কোনো শিক্ষাবোর্ড বা প্রতিষ্ঠান সরাসরি আবেদন গ্রহণ করবে না।উল্লেখ্য, ২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার জন্য এবার মোট ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন শিক্ষার্থী ফরম পূরণ করেছিল। এর মধ্যে ৬ লাখ ১৮ হাজার ১৫ জন ছাত্র এবং ৬ লাখ ৩৩ হাজার ৯৬ জন ছাত্রী। তবে, প্রায় ২৭ হাজার পরীক্ষার্থী শেষ পর্যন্ত পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। সারাদেশে মোট ২ হাজার ৭৯৭টি কেন্দ্রে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।ভোরের আকাশ/মো.আ.
বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে চলতি বছরের আলিম পরীক্ষায় পাসের হার ৭৫ দশমিক ৬১ শতাংশ। এ বোর্ডে সারা দেশে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৪ হাজার ২৬৮ জন।বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ১০টায় দেশের শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইট, সংশ্লিষ্ট সব পরীক্ষা কেন্দ্র বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং এসএমএসের মাধ্যমে ফল প্রকাশ করা হয়।বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত ২০২৫ সালের আলিম পরীক্ষার পরীক্ষার ফল দেখা যাবে অনলাইন ও এসএমএস— উভয় মাধ্যমেই। শিক্ষার্থীরা www.bmeb.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে ‘অনলাইন সেবা-১’ কর্নার থেকে ‘আলিম পরীক্ষা ২০২৫’ অপশনে ক্লিক করে জেলা ও কেন্দ্রভিত্তিক ফল দেখতে পারবে। এ ছাড়া www.educationboardresults.gov.bd ওয়েবসাইটেও রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়ে ব্যক্তিগত ফলাফল জানা যাবে।আবার, ফল জানতে আগ্রহী শিক্ষার্থীরা চাইলে মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে প্রি-রেজিস্ট্রেশন করে রাখতে পারবে। এজন্য মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে টাইপ করতে হবে— ALIM MAD রোল নম্বর 2025— এবং তা পাঠাতে হবে ১৬২২২ নম্বরে। যেমন : ALIM MAD 123456 2025। প্রি-রেজিস্ট্রেশন করা থাকলে ফল প্রকাশের পর সঙ্গে সঙ্গে ফল মোবাইলে পৌঁছে যাবে।শুধু শিক্ষার্থী নয়, প্রতিষ্ঠানের ফলাফল জানার জন্যও আলাদা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানভিত্তিক ফলাফল জানতে https://eboardresults.com/v2/home ওয়েবসাইটে গিয়ে ‘Institution Result’ সিলেক্ট করে বোর্ড ও প্রতিষ্ঠানের ইআইআইএন (EIIN) নম্বর ব্যবহার করে পুরো ফল ডাউনলোড করা যাবে।ভোরের আকাশ/মো.আ.
এসএসসি ও এইচএসসির মতো পাবলিক পরীক্ষায় খারাপ ফল করায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে অনেক শিক্ষার্থী। প্রত্যাশিত ফল না পেয়ে অনেকে আত্মহননের পথও বেছে নেন। প্রতিবার পরীক্ষার পরই সারা দেশে আত্মহত্যার এ প্রবণতা দেখা যায়। ক্রমেই এ প্রবণতা বাড়ছে।মনেরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খারাপ ফল করলে বা কোনো বিপর্যয়ের মুখে পড়লে সবাই আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় না। যারা এ পথে পা বাড়ায়, তারা রিস্ক গ্রুপ। অর্থাৎ, আগে থেকেই তাদের এ ধরনের প্রবণতা ছিল। তারা বেশি আবেগপ্রবণ এবং মানসিক অস্থিরতায় ধ্বংসাত্মক সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে। এ ক্ষেত্রে বাবা-মা ও পরিবারের সদস্য এবং শিক্ষকদের ভূমিকা রাখতে হবে।জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের শিশু ও কিশোর মনোরোগবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ডা. সাদিয়া আফরিন বলেন, পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর শিক্ষার্থীরা যে প্রতিক্রিয়া দেখায় বা ভেঙে পড়ে, তা ঠিক রাখতে বাবা-মাকে সন্তানের মানসিক অবস্থার খোঁজ রাখতে হবে। তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের পরিচর্যা করতে হবে। তাহলে ফল প্রকাশের পর এ ধরনের আত্মহননের পথে তারা হাঁটবে না।তিনি বলেন, স্কুলে শিক্ষার্থীদের ইমোশনাল ডেভেলপমেন্ট হয়, সোশ্যাল ডেভেলপমেন্টও হয়। স্কুলের মেন্টাল কাউন্সিলর এবং শিক্ষকদের প্রোপার সাইকোলজিক্যাল বা বিহেভিয়ারাল সায়েন্সের ওপরে ট্রেনিং দেওয়া হয়, তাহলে কিন্তু একজন শিক্ষার্থীর আবেগীয় বা আচরণগত যখন সমস্যা হবে, সে প্রথম তার কাছে হেল্প নিতে পারবে। তার একজন ট্রাস্টেড এডাল্ট পারসনের (বিশ্বস্ত প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ) কাছে সে তার আবেগ নিয়ে কথা বলতে পারবে। এতে মানসিক চাপ বা কষ্ট কমে যায়।ডা. সাদিয়া আফরিন আরও বলেন, অনেক শিক্ষার্থী মনে করে আমার বন্ধু বা বান্ধবী পাস করে গেছে বা ভালো ফল করে ফেলেছে; কিন্তু আমি পারলাম না। নিজের ওপরে একটা দায়বদ্ধতা অবচেতন মনে ভেবে ফেলে। সে হয়তো ভাববে কীভাবে সে সমাজে মুখ দেখাবে? এজন্য ফল প্রকাশের আগে ও পরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাবা-মা ও পরিবারের অন্য সদস্যদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখতে হবে।‘শিক্ষকদেরও অনুপ্রেরণামূলক কথা বলতে হবে। তাদের ইমোশনালি স্ট্রাগল বা সেলফ স্টিম বা আত্মবিশ্বাসের জায়গাগুলোতে নিয়ে সচেতন থাকতে হবে। তাহলে এ ধরনের ঘটনা কমে যাবে’ যোগ করেন এ মনোরোগ বিশেষজ্ঞ।ভোরের আকাশ/মো.আ.