পরিষ্কার-পরিচ্ছনতায় উদাসীনতার অভিযোগ
ইসা হাসান, পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২০ জুন ২০২৫ ০৪:৪৪ পিএম
পাথরঘাটায় ডেঙ্গুর প্রকোপ, এক পরিবারে আক্রান্ত ৫
বরগুনার পাথরঘাটা পৌর শহরে ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ বেড়েই চলেছে। মে মাস থেকে ২০ জুন পর্যন্ত এখানে ৭২ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন ৭ জন।
সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন পৌর শহরের বাসিন্দারা। পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইমান আলী সড়কে একটি পরিবারের পাঁচজন সদস্য ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে চারজন স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পৌরসভার নানা স্থানে ড্রেনের পানি জমে থাকে, সেগুলো পরিষ্কার করা হয় না। বাজার ও আবাসিক এলাকার পাশে ময়লা-আবর্জনায় ভরে থাকে ডোবা ও ড্রেন।
নিয়মিত মশা নিধনের কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেই বলেও অভিযোগ তাদের। মাঝে মাঝে স্প্রে করা হলেও সেটি ড্রেনের পানিতে থাকা মশার লার্ভা ধ্বংস করতে পারছে না। বরং স্প্রের ধোঁয়ায় মশা ঘরে ঢুকে যাচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়ে পৌরসভা দীর্ঘদিন ধরে উদাসীন। অভিযোগ করলেও কর্তৃপক্ষ প্রতিদিন কোনো না কোনো অজুহাত দেখায়। কেউ বলেন গাড়ি নেই, কেউ বলেন জনবল কম।
সচেতন নাগরিক ও মানবিক কর্মী মেহেদী সিকদার বলেন, “ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনগণের সচেতনতার পাশাপাশি পৌরসভার ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ময়লা জমে থাকা স্থানগুলো নিয়মিত পরিষ্কার না করলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।”
পাথরঘাটার সমাজসেবক আব্দুল কাদের খান বলেন, “নাগরিক ও পৌর কর্তৃপক্ষ একসাথে কাজ না করলে ডেঙ্গু ঠেকানো যাবে না। সবার সচেতনতা দরকার।”
পাথরঘাটা পৌরসভা প্রশাসক মিজানুর রহমান দৈনিক ভোরের আকাশকে বলেন, “ডেঙ্গু নিয়ে আমরা সচেতন। স্প্রে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। কিছু ওয়ার্ডে সমস্যা রয়েছে, আমরা তা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিচ্ছি।”
তিনি আরও বলেন, “শহর পরিষ্কার রাখতে নাগরিকদেরও এগিয়ে আসা দরকার। পৌরসভা তার দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থাকবে।”
পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা মাহবুব হোসেন বলেন, জমে থাকা পানি, খোলা ড্রেন ও ময়লার স্তূপই ডেঙ্গু মশার প্রজননস্থল। এসব পরিষ্কার না করা গেলে সংক্রমণ রোধ করা কঠিন।
শহরজুড়ে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি—নইলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।
ভোরের আকাশ/জাআ