× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

কাল ভয়াল ১৩ মে

টাঙ্গাইলে শোক ও আতঙ্কের দিন

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৩ মে ২০২৫ ০৫:৩০ এএম

টাঙ্গাইলে শোক ও আতঙ্কের দিন

টাঙ্গাইলে শোক ও আতঙ্কের দিন

১৯৯৬ সালের ১৩ মে এই দিন ২-৩ মিনিট স্থায়ী টর্ণেডোর ছোঁবলে গোপালপুর, কালিহাতী, বাসাইল, ঘাটাইল এবং সখীপুর উপজেলার ৫২৩ জন নারী-পুরুষ নিহত এবং ৩০ হাজার আহত হন। ৮৫ হাজার ঘরবাড়ি, ৮৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ১৭টি মসজিদ এবং ১৪টি মন্দির লন্ডভন্ড হয়ে যায়। সেদিনের কথা মনে হলে এখনও শিউরে ওঠে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা। সেই টর্ণেডোর ভয়াবহ ছোঁবলের ২৯তম বার্ষিকী।

সেদিন বিকালে প্রলয়ঙ্করী ঘুর্ণিঝড়ে মুহূর্তের মধ্যে জেলার ৫টি উপজেলার ৪০টি গ্রাম লন্ডভন্ড হয়ে যায়। অনেকের ঘরের চালা উড়ে যাওয়ায় গোলার ধান পর্যন্ত ঝড়ে অদৃশ্য হতে দেখা যায়। অনেক ঘরবাড়ি, গাছপালা, গবাধিপশু নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। অনেক নারী-পুরুষের পরনের কাপড় ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। অনেককে সম্পূর্ণ বস্ত্রহীন ক্ষতবিক্ষত দেহে বিভিন্ন কৃষি জমি, জঙ্গল, পুকুর-ডোবা থেকে উদ্ধার করা হয়। বৈদ্যুতিক খুঁটি ও নলকূপের উপরের অংশ দালানের ছাদ পর্যন্ত উঠে যায়।

জানা যায়, ১৯৯৬ সালের ১৩ মে ছিল সোমবার। ওইদিন বিকাল ৪টা ১৭ মিনিটের দিকে আকস্মিকভাবে গোপালপুর উপজেলার হেমনগর ইউনিয়নের বেলুয়া গ্রাম থেকে শুরু হওয়া ২-৩ মিনিটের স্থায়ী প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় (টর্ণেডো) আলমনগর ইউনিয়ন হয়ে মির্জাপুর ইউনিয়নের পশ্চিম নুডুরচর গ্রামে শেষ হয়। মাত্র দুই মিনিটের ছোবলে গোপালপুর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের ১৬টি গ্রাম লন্ডভন্ড হয়ে যায়, নিহত হন ১০৪ জন। এ ছাড়া চার হাজারেরও বেশি গ্রামবাসী আহত হন। ঝড়ে ২০০ একর বোরো জমির পাকা ধান নষ্ট হয়ে যায়। ১০ হাজার গৃহপালিত পশু-পাখি মারা যায়। ওই দিনই বিকাল সোয়া ৫টার দিকে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার তাঁতসমৃদ্ধ এলাকা রামপুর এবং কুকরাইল গ্রামে হানা দেয় টর্ণেডো। রামপুর ও কুকরাইল গ্রামের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ৩-৪ মিনিটের প্রলয়ঙ্করী ঘুর্ণিঝড়ে ওই দুই গ্রামের একই পরিবারের ৭জন সহ ১০৫ জন নারী-পুরুষ ও শিশু নিহত এবং চার শতাধিক মানুষ আহত হয়। রামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে গণকবরে একত্রে ৭৭ জনকে দাফন করা হয়।

বাসাইলের মিরিকপুরে ধান কাটার মৌসুম থাকায় উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলার ধানকাটা শ্রমিক জড়ো হয়েছিল এ অঞ্চলে। ঝড় থেকে রক্ষা পেতে মিরিকপুর-সৈদামপুরের ধানের মাঠের আতঙ্কগ্রস্ত বহু শ্রমিক মিরিকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দালানে আশ্রয় নিয়েছিল। সেদিন বিকাল ৫টা ২০ মিনিটের দিকে উত্তর দিক থেকে ধেয়ে আসা ৩-৪ মিনিটের টর্ণেডোর ছোঁবলে দালান বিধ্বস্ত হওয়ায় তারা সেখানেই চাপা পড়ে মারা যায়। এলাকার গ্রামের বহু লোক নিখোঁজ হয়। পরদিন তাদের মৃতদেহের খোঁজ মেলে পার্শ্ববর্তী নদী, পুকুর, খাল ও বিলে। মৃত মানুষ, গবাদিপশু ও মাছের দুর্গন্ধে বাসাইলের বাতাস সেদিন ভারি হয়ে গিয়েছিল।

মিরিকপুর ছাড়াও উপজেলার বর্নীকিশোরী, হান্দুলিপাড়া, কলিয়া, কাউলজানী, খাটরা, ফুলকী, বাদিয়াজান, সুন্না গ্রামের অংশবিশেষ মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হয়। বর্নীকিশোরী উত্তরপাড়ার একই পরিবারের মৃতদেহ প্রায় আধমাইল দূরের বিল থেকে উদ্ধার করা হয়। অনেক পরিবারের কেউ জীবিত ছিল না। বাসাইল উপজেলা হাসপাতালসহ পার্শ্ববর্তী হাসপাতালগুলো ছিন্নভিন্ন আহত লোকজনে ভরে গিয়েছিল। উপজেলায় টর্ণেডো আক্রান্ত এলাকায় একাধিক গণকবর সৃষ্টি করতে হয়েছিল। ঘুর্ণিঝড়ে বাসাইল উপজেলার ১৭ গ্রামের ৫ হাজার পরিবারের প্রায় সাড়ে ২৫ হাজার লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ৩ হাজার ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। ২০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ৫-৬টি কাঁচাবাজার, প্রায় ২ হাজার গবাদিপশু, ১০ হাজার হাঁস-মুরগি, সাড়ে ৩০০ টিউবওয়েল ও ২৫ হাজার গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সরকারি হিসাবে মৃতের সংখা ২৩৭ জন। তবে বেসরকারি হিসাবে মৃতের সংখা ছিল আরও অনেক বেশি। আজো কালো মেঘের আনাগোনা দেখলে গোপালপুর, কালিহাতী, বাসাইল, ঘাটাইল এবং সখীপুর উপজেলার মানুষের মনে ভেসে ওঠে টর্ণেডোর সেই প্রলয়ঙ্করের স্মৃতি।

২৯ বছর আগের টর্ণেডোয় প্রাণ হারানো ব্যক্তিদের স্মরণ করতে স্ব স্ব এলাকায় স্থানীয়দের উদ্যোগে প্রতিবছর দোয়া ও মিলাদ মাহফিল, মসজিদে মসজিদে কাঙালিভোজ, প্রার্থণা এবং স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। এ বছরও বাসাইলের মিরিকপুর, কালিহাতীর রামপুর, গোপালপুরের আলমনগর গ্রামে অনুরূপ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

ভোরের আকাশ/এসআই

  • শেয়ার করুন-
 ফলাফল বিপর্যয়ের নেপথ্যে

ফলাফল বিপর্যয়ের নেপথ্যে

 টিটিইআই’র অধীনে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম

টিটিইআই’র অধীনে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম

 সুনামগঞ্জে মহিলা দলের ৩১ দফা ও ধানের শীষের পক্ষে গণসংযোগ

সুনামগঞ্জে মহিলা দলের ৩১ দফা ও ধানের শীষের পক্ষে গণসংযোগ

 চাঁদপুরে এইচএসসি ফলাফলে শীর্ষে সরকারি কলেজ

চাঁদপুরে এইচএসসি ফলাফলে শীর্ষে সরকারি কলেজ

 এইচএসসিতে মাইলস্টোন কলেজের অসাধারণ সাফল্য, পাসের হার ৯৯.৮৩ শতাংশ

এইচএসসিতে মাইলস্টোন কলেজের অসাধারণ সাফল্য, পাসের হার ৯৯.৮৩ শতাংশ

সংশ্লিষ্ট

সুনামগঞ্জে মহিলা দলের ৩১ দফা ও ধানের শীষের পক্ষে গণসংযোগ

সুনামগঞ্জে মহিলা দলের ৩১ দফা ও ধানের শীষের পক্ষে গণসংযোগ

চাঁদপুরে এইচএসসি ফলাফলে শীর্ষে সরকারি কলেজ

চাঁদপুরে এইচএসসি ফলাফলে শীর্ষে সরকারি কলেজ

সুনামগঞ্জে শিক্ষার মানোন্নয়নে জেলা প্রশাসনের প্রেস ব্রিফিং

সুনামগঞ্জে শিক্ষার মানোন্নয়নে জেলা প্রশাসনের প্রেস ব্রিফিং

একমাত্র শিক্ষার্থী কৃতকার্য হওয়ায় ঈশ্বরগঞ্জে একটি প্রতিষ্ঠানে শতভাগ পাস

একমাত্র শিক্ষার্থী কৃতকার্য হওয়ায় ঈশ্বরগঞ্জে একটি প্রতিষ্ঠানে শতভাগ পাস