চিতলমারী (বাগেরহাট ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২১ জুন ২০২৫ ১২:৪৬ পিএম
বাগেরহাটের চিতলমারী রায়গ্রাম বাঁশতলা স্লুইসগেট এলাকা
বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) রায়গ্রাম বাঁশতলা স্লুইসগেট রক্ষার নৈতিক দায়িত্ব ভুলে ব্যক্তিস্বার্থে সরকারি জায়গা দখল নিয়ে দুই পক্ষ প্রকাশ্য দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্যে পুলিশ একাধিকবার ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয় পক্ষকে শান্ত থাকতে বলেছে। কিন্তু পুলিশ বলে চলে গেলে আবারো জায়গা দখল তৎপরতা অব্যাহত থাকে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পরবর্তী ওই গেটের সরকারি জীর্ণ খালাসীঘরে সাবেক গেটখালাসির পরিবার এসে বসবাস শুরু করেন এবং ক্রমাগতভাবে জায়গা দখল করায় এই বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে চরমে । এই বিষয়ে বাগেরহাট পাউবো কর্মকর্তা ও চিতলমারী থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
জানা গেছে, ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে প্রতিবেশী টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতী বাজার এলাকার ফিরোজা বেগম তার আত্মীয়স্বজন নিয়ে চিতলমারী উপজেলার রায়গ্রামে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বাঁশতলা স্লুইসগেটের পুরনো সরকারি ভবন দখল করে বসবাস শুরু করে। তারা আশপাশের জমি, অন্যের মাছের ঘের নিজেদের দখলে নিচ্ছে। ফিরোজা বেগম এই স্লুইসগেটের সাবেক গেটখালাসি মৃত রতন মোল্লার স্ত্রী।
স্থানীয়দের দাবি, ফিরোজা বেগমের নাতি (বড় মেয়ের ছেলে) রুবেল হাওলাদারের নেতৃত্বে দখলদারিত্ব, হুমকি-ধামকি দিচ্ছে বলে ভুক্তভোগীদের পক্ষে প্রকাশ রায়, তাপস বিশ্বাস, শুখলাল অধিকারী চিতলমারী থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
এই বিষয়ে সাবেক গেটখালাসি রতন মোল্লার স্ত্রী ফিরোজা বেগম জানান, এই গেট এলাকায় তার স্বামীর কবরস্থানসহ নানা স্মৃতি রয়েছে। তিনি কিছুদিন ধরে স্বামীকে স্বপ্ন দেখছেন। তাই পাউবোতে লিখিত আবেদন করে স্মৃতিবিজড়িত পরিত্যক্ত সরকারী খালাসি-বসতঘরে উঠেছেন। তারা সরকারী জায়গায় বিভিন্ন গাছ লাগিয়ে ফসল লাগিয়েছেন। কারো ব্যক্তিগত জায়গা বা ঘের তারা দখল করেননি বলে দাবি করেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোস্তফা তালুকদার জানান, পদাধিকারবলে রায়গ্রাম বাঁশতলা স্লুইসগেটের স্থানীয় ব্যবস্থাপনা কমিটির তিনি সভাপতি। রায়গ্রাম বাঁশতলা স্লুইসগেট কচুরিপানার আটকে আছে। এখানে "গেট এলাকা" হিসেবে তিন একর জায়গা রয়েছে - যা গেটের রক্ষণাবেক্ষণের কাজে ব্যবহৃত হওয়ার কথা। গেটের জায়গা গেটের উপকারে আসছে না। স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা ও সাবেক গেটখালাসির পরিবার গেট রক্ষার কথা ভুলে ব্যক্তিস্বার্থে বিরোধে জড়িয়েছে। বিষয়টি নিরসনের জন্য প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী পদক্ষেপ নেয়া দরকার।
বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান মোহাম্মদ আল বারুনী বলেন, সাত-আট মাস আগে আমি নিজে ওই স্লুইসগেটে গিয়ে সাবেক গেটখালাসির অবস্থান ও জায়গা দেখে এসেছি। দুই-একজন লোক এলাকায় অযথা অশান্তির চেষ্টা করছে। তারপরও আমি বিষয়টি দেখবো। স্থানীয় বাসিন্দা, জনপ্রতিনিধি ও সাবেক খালাসী সহ সকলের দায়িত্ব স্লুইসগেট ও গেট এলাকার নির্দিষ্ট জায়গা জনস্বার্থে সংরক্ষণ করা। কিন্তু এই নৈতিক দায়িত্ব ভুলে গেটের সংরক্ষণ-বিরোধী কাজ করাটা অপ্রত্যাশিত। সাবেক গেটখালাসির পরিবার ওই স্লুইসগেটের খালাসীঘরে বসবাস করার আবেদন করেন এবং স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ভোরের আকাশ/আজাসা