রংপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৯ মে ২০২৫ ০১:০৬ এএম
রংপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৬ নেতা ও অর্ধশতাধিক কর্মীর পদত্যাগ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর জেলা ও মহানগর কমিটির ১৬ নেতা একযোগে পদত্যাগ করেছেন। একইসঙ্গে সংগঠনের আরও অর্ধশতাধিক কর্মী এই প্ল্যাটফর্ম ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
রোববার (১৮ মে) রাতে রংপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি চত্বরে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তারা এই ঘোষণা দেন।
পদত্যাগকারী নেতারা অভিযোগ করেছেন, জেলা ও মহানগর কমিটির কয়েকজন শীর্ষ নেতা জড়িত রয়েছেন দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, জমি দখল, নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ডে। এসব কর্মকাণ্ড আন্দোলনের মূল আদর্শের পরিপন্থী বলে তারা মন্তব্য করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগকারীদের মধ্যে ছিলেন মহানগর কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব সিয়াম আহসান আয়ান, সংগঠক আদনান সামির, মাহদী হাসান অনিক, রাতুল, এনায়েত রাব্বি, সদস্য আরাফাত সানি আপন, আল শামস সিয়াম, আল আমিন, সীমান্ত হোসেন, মোজাহিদ, আল তানজীল আহসান, জেলা কমিটির সদস্য মুবতাসিম ফুয়াদ সাদিদ, জুনাইদ ইসলাম সাদিদ, সৃজন সাহ, মাহতাব হোসেন আবির ও সাওম মাহমুদ সিরাজ।
এর আগে, গত ১৫ মে জেলা কমিটির সদস্য মাহমুদুর রহমান লিওনও একই অভিযোগে পদত্যাগ করেন।
পদত্যাগপত্রে বলা হয়, “রংপুর জেলা কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবসহ কয়েকজন নেতার দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং অনৈতিক কর্মকাণ্ড আন্দোলনের চেতনাবিরোধী। তাদের অপকর্মের দায় আমরা আর নিতে পারি না।”
মহানগর কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব আয়ান হাসান বলেন, “পুরো দেশের মানুষ আমাদের ওপর আস্থা রেখেছিল। কিন্তু নেতাদের নানা অপকর্মের কারণে সেই বিশ্বাস রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। তারা টেন্ডার বাণিজ্য, জমির দালালি, মামলা বাণিজ্য এবং মেলায় জুয়ার আসর থেকে চাঁদা আদায় করছে।”
জেলা কমিটির সদস্য মাহতাব হোসেন আবির বলেন, “দুই মাস আগে একটি বাণিজ্যমেলায় হাউজি জুয়ার আসর বসানো হয়। সেখান থেকে ১৪ লাখ টাকা চাঁদা তোলা হয় নেতাদের দ্বারা। এছাড়া রংপুর সিটি করপোরেশনে ২৫ জনকে নিয়োগ দিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ নেওয়া হয়েছে। এমনকি গত বছরের বন্যার সময় ত্রাণের ৮৭ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।”
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রংপুর জেলা কমিটির আহ্বায়ক ইমরান আহমেদ বলেন, “আমরা ষড়যন্ত্রের শিকার। অন্য একটি রাজনৈতিক দল এ ষড়যন্ত্রে জড়িত। শিগগিরই সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হবে।”
মহানগর কমিটির আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহমেদ ইমতি বলেন, “আমি কোনো অপকর্মে জড়িত নই। অভিযোগকারীরা যদি প্রমাণ দিতে পারে, তাহলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। হয়তো কারো স্বার্থে আঘাত লেগেছে বলেই এমনটা ঘটছে।”
উল্লেখ্য, গত ২৪ নভেম্বর রাতে ইমতিয়াজ আহমেদ ইমতিকে আহ্বায়ক এবং রহমত আলীকে সদস্য সচিব করে ১১২ সদস্যবিশিষ্ট মহানগর কমিটি গঠন করা হয়। একইদিনে ইমরান আহমেদকে আহ্বায়ক এবং ডা. আশফাক আহমেদ জামিলকে সদস্য সচিব করে ১৫৫ সদস্যবিশিষ্ট জেলা কমিটিও ঘোষণা করা হয়।
ভোরের আকাশ//হ.র