এক সপ্তাহে প্রাণ গেল দুইজনের
ইসা হাসান, পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৮ জুন ২০২৫ ০২:৩৭ পিএম
ছবি: ভোরের আকাশ
বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সিরাজুম মুনিরা (৩২) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি পাথরঘাটা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জিয়াউল হক জুয়েলের দাপ্তরিক সহকারী (সিএ-২) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
শনিবার (২৮ জুন) সকালে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে অ্যাম্বুলেন্সেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাথরঘাটায় ডেঙ্গুতে প্রাণ হারালেন দুই নারী।
নিহত সিরাজুম মুনিরা উপজেলার ৩ নম্বর চরদুয়ানী ইউনিয়নের হোগলাপাশা গ্রামের বাসিন্দা।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, কয়েকদিন ধরে তিনি জ্বরে ভুগছিলেন। ডেঙ্গু শনাক্ত হলে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা শুরু করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে বরিশালে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে পথেই তার মৃত্যু হয়।
এর আগে গত ২৪ জুন কালমেঘা ইউনিয়নের ছোট পাথরঘাটা গ্রামের গৃহবধূ সাধনা রানী (৩৫) ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বরিশালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার স্কুলপড়ুয়া ছেলেও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, গত তিন দিনে এখানে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ২০ জনেরও বেশি মানুষ। প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। ইতোমধ্যে বরগুনা জেলাকে ডেঙ্গুর ‘হটস্পট’ ঘোষণা করা হয়েছে। যদি এখনই কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, তবে পাথরঘাটাও যে কোনো সময় সেই তালিকায় যুক্ত হতে পারে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য একটি আলাদা ওয়ার্ড খোলা হলেও চিকিৎসক ও জনবল সংকট প্রকট। ২৭টি অনুমোদিত চিকিৎসক পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র একজন চিকিৎসক, যিনি একজন দন্ত চিকিৎসক (ডেন্টিস্ট)। এই সীমাবদ্ধতার কারণে বেশিরভাগ রোগীকেই বরিশালে রেফার করা হচ্ছে।
স্থানীয়রা বলছেন, মশক নিধন কর্মসূচি ও প্রচার প্রচারণা থাকলেও চিকিৎসা ব্যবস্থার এমন দৈন্যদশায় মানুষ বাড়িতে বসেই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ, ওষুধ সরবরাহ, ফগিং কার্যক্রম জোরদার ও জনগণকে সচেতন করতে মাঠপর্যায়ে ব্যাপক তৎপরতা চালানোর দাবি উঠেছে।
ডেঙ্গুতে দুই নারীর মৃত্যুর ঘটনায় এলাকাজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। স্থানীয়দের প্রশ্ন, আর কত প্রাণ গেলে নড়বে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ?
ভোরের আকাশ/জাআ