যশোর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৮ জুন ২০২৫ ০৬:২০ পিএম
বিএনপি জনগণের ভোটের মাধ্যমেই ক্ষমতা পরিবর্তনে বিশ্বাসী: অধ্যাপক নার্গিস বেগম
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক নার্গিস বেগম বলেছেন, বিএনপি কোন বায়বীয় আশ্বাসে বিশ্বাসী নয়। জনগণের ভোটের মাধ্যমেই ক্ষমতা পরিবর্তনে বিশ্বাসী। বিগত ১৬ বছর বিএনপি এ কারণেই রাজপথে থেকে আন্দোলন সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছে।
বুধবার সকালে সমমনা শিক্ষকজোট যশোর জেলা শাখার উদ্যোগে যশোর শিল্পকলা একাডেমীতে "রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা এবং শিক্ষকদের ভূমিকা" শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সুচিন্তিত শিক্ষাব্যবস্থাই একটি রাষ্ট্রকে সর্বোচ্চ মর্যাদায় নিয়ে যেতে পারে। শিক্ষকরা ছাড়া দেশ ও জাতির পরিবর্তন কখনোই সম্ভব না। রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফার আলোকে জ্ঞানভিত্তিক, গণতান্ত্রিক, মানবিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন।তিনি।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতির যশোর জেলা সভাপতি অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মকবুল হোসেন।
প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয়তাবাদী কৃষক দল কেন্দীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার টিএস আইয়ুব, যশোর জেলা বিএনপির সভাপতি পিপি এড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন।
বক্তব্য রাখেন জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক আসাদুজ্জামান শাহীন, মাষ্টার রাজীব মাহমুদ, অধ্যাপক আমিনুর রহমান পিন্টু, আমিনুর রহমান মধু, আলমগীর সিদ্দিকি, মাষ্টার মিজানুর রহমান, প্রভাষক কামরুন্নার, এ কে এম শরীফুল আলম, আব্দুস সবুর খান, নাজমুল হোসেন, হাসানুজ্জামান শাকিল, ফিরোজ হাসান প্রমুখ। অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন অধ্যাপক সোলায়মান হোসেন সোহেল।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, শিক্ষাকে আনন্দময় করে তুলতে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের জন্য টিফিনের ব্যবস্থা করেন। তিনি সর্বত্র গণশিক্ষা ব্যবস্থা চালু করেছিলেন। নিরক্ষরতা দূর করতে গ্রহণ করেছিলেন ভিন্নধর্মী উদ্যোগ। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করেছিলেন। তিনি বুঝেছিলেন বাংলাদেশ বিনির্মাণের সহযাত্রী হিসেবে শিক্ষক সমাজের গুরুত্ব অপরিসীম। ফলে সমাজ গড়ার কারিগর হিসেবে শিক্ষকদের শিরদাড়া শক্ত করে রাখতে হবে।
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত শিক্ষক সমাজকে জাতির সামনের আলোকবর্তিকা উল্লেখ করে বলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা শিক্ষকদের মর্যাদাকে সর্বনিম্ন পর্যায়ে এনে নামিয়েছিল। তাদেরকে দিয়ে নির্বাচনে ব্যালট পেপারে জোরপূর্বক সীল মেরে বাক্সে ঢুকাতে বাধ্য করেছিল। ভোট ডাকাতির মত একটি জঘন্য কাজে শিক্ষকদেরকে সম্পৃক্ত করেছিল। সেই শিক্ষকদের শিক্ষা ছাত্র-ছাত্রীদের হৃদয়ে কতটুকু দাগ কাটবে সেটিই ভাববার বিষয়।
তিনি বলেন, সেদিন সমাজের সকল শ্রেণীর মানুষ আওয়ামী সরকারের ভোট ডাকাতির বিষয়টি গভীরভাবে উপলব্ধি করেছিল। আবার অনেক শিক্ষক সেদিন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের জঘন্য এবং ঘৃণিত কাজকে প্রত্যাখ্যান করে আনন্দচিত্তে শাস্তিকে মাথা পেতে নিয়েছিল।
বিএনপি নেতা অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, শেখ হাসিনা পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের সমাজটাকে নষ্ট করে দিয়েছে। যেখানে শিক্ষকদেরকে দেখে মানুষ সম্মান করবে, শ্রদ্ধা করবে, তাদের কাছে শিখবে - এই বিষয়গুলোকেই ধূলিসাৎ করে দেয়া হয়েছে।
শিক্ষকদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা সমাজের সবচেয়ে মর্যাদার শ্রেণী। সুচিন্তিতভাবে আপনি একটিবার ভেবে দেখেন আপনাকে আজকে এই জায়গায় কে বা কারা এখানে এনে দাঁড় করিয়েছে। বিএনপি'র খসড়া ইশতেহারের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আগামীতে বিএনপি সরকার গঠন করলে ১৮০ দিনের যে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। সেই পরিকল্পনায় বাংলাদেশের বেকারত্ব নিরসনে ব্যাপকভাবে স্বল্প মেয়াদী প্রশিক্ষণ দিয়ে বেকার যুবকদের বিদেশে চাকরির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।
তিনি আরো বলেন, প্রাথমিক, মাধ্যমিক,কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য বাজার মূল্য অনুযায়ী বেতনের কাঠামো নির্ধারণ করা হবে। দেশের আরো রেমিটেন্স বাড়াতে দক্ষ এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শ্রমিকদের পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে চাকরি নিশ্চিত করা হবে।
ভোরের আকাশ/জাআ