নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৫ অক্টোবর ২০২৫ ০৭:২২ পিএম
ছবি: ভোরের আকাশ
বিচার ব্যবস্থা আধুনিকায়ন ও ন্যায়বিচারে সহজগম্যতা নিশ্চিত করতে দেশের প্রচলিত বেইলবন্ড দাখিল পদ্ধতির পরিবর্তে ডিজিটাল মাধ্যমে ই-বেইলবন্ড প্রবর্তন করা হয়েছে। বুধবার (১৫ অক্টোবর) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ সার্কিট হাউজ প্রাঙ্গণে এ ঐতিহাসিক উদ্যোগের উদ্বোধন করেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
এসময় তিনি বলেন, আমরা নারায়ণগঞ্জকে নির্যাতনের প্রতীক হিসেবে, নারায়ণগঞ্জের গডফাদার ছিলো, এখানে ৭ খুনের মতো ঘটনা ঘটানো হয়েছে সেই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা নারায়ণগঞ্জ থেকে এই নির্যাতনের প্রতীকী হিসেবে অনলাইন ই-বেইলবন্ড চালু করলাম।
তিনি আরও বলেন, আইন ও বিচার বিভাগের সংস্কারের মূল উদ্দেশ্যই হলো বিচারের সময় কমানো, বিচার প্রার্থীদের ভোগান্তি কমানো, খরচে সাশ্রয় করা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা।
উপদেষ্টা আরও বলেন, আমরা অনেক কাজ করেছি। সময় বাঁচানোর জন্য আমরা ফৌজদারি কার্যবিধিতেও আমরা অনেক পরিবর্তন এনেছি। সরকারি ম্যাজিস্ট্রেটসহ কর্মকর্তাদের স্বাক্ষী আমরা অনলাইনে নেয়ার ব্যাবস্থা করে দিয়েছি। আমাদের লক্ষ্য বিচার নিতে মানুষকে যে ভোগান্তি পোহাতে হয়, সেটা যেন হ্রাস পায় এর ব্যাবস্থা করা।
তিনি আরও বলেন, আমরা প্রায়ই দেখি বাচ্চার কাস্টডি কে পাবে, দুই লাখ টাকার চেকের মামলা এরকম ছোট বিষয়গুলোর জন্য যেন কোর্টে যেতে না হয় সেজন্য আমরা সংস্কার করছি। এটা পাইলট প্রজেক্ট আকারে আছে। দুয়েক মাসের মধ্যে আমরা এটা সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিতে পারবো। নিন্ম আদালতে সংস্কার করে ফেললাম কিন্তু উচ্চ আদালতে সংস্কার হল না, তাহলে কিন্তু কোন লাভ হয় না। নিম্ন আদালতে যে মামলাগুলো নিষ্পত্তি হয় উচ্চ আদালতে তা বছরের পর বছর ঝুলে থাকে। শিশু আছিয়ার ঘটনায় আমরা আইন বদলে এক মাসে বিচার করলাম। কিন্তু উচ্চ আদালতে এটা কয়েক বছরেও নিষ্পত্তি হবে কি না আমরা জানি না।
তিনি বলেন, উচ্চ আদালতের বিচারকেরা নিন্ম আদালতে ইনস্পকেকশনে যান আদালত ঠিকমত চলছে কি না দেখতে। তখন এটা একরকম আনন্দভ্রমণে পরিনত হয়। বগুড়ায় এক জায়গায় ইনস্পেকশনে দুই লক্ষের অধিক টাকা খাবারের বিল দিতে হয়েছে। এই টাকা দিয়েছে নিম্ম আদালতের গরীব বিচারকরা।
তিনি আরও বলেন, নিম্ন আদালত সংস্কার করবো কিন্তু উচ্চ আদালত আগের মত থাকলে লাভ হবে না। এতে বিচার প্রত্যাশিরা লাভবান হবে না। আমরা যতদিন আছি সংস্কারের কাজ করবো। আমি আপনাদের সহযোগিতা চাই। আপনারা যদি সহযোগিতা করেন আমরা বিচার ব্যবস্থাকে আগের চেয়ে অনেক সুন্দর ভাবে সাজাতে পারবো।
এসময় উপস্থিত ছিলেন এটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, নারায়ণগঞ্জ জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবু শামীম আজাদ, নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সরকার হুমায়ুন কবির, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার প্রধান, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানসহ আইনজীবী নেতৃবৃন্দ ও বিচারকগণ উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ই-বেইলবন্ড প্রবর্তনের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রাপ্তি আরও সহজ, স্বচ্ছ ও প্রযুক্তিনির্ভর হবে, যা সাধারণ জনগণের সময় ও অর্থ সাশ্রয় করবে এবং বিচার ব্যবস্থায় নতুন দিগন্তের সূচনা ঘটাবে।
ভোরের আকাশ/জাআ