নাজিরপুর (পিরোজপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০১ জুন ২০২৫ ০৪:২৫ পিএম
নাজিরপুরে জমে উঠেছে মাছ ধরার ফাঁদ চাঁইয়ের হাট
বর্ষায় নতুন পানি আসার সাথে সাথে খাল-বিল, নদ-নদীতে দেখা মেলে বিভিন্ন প্রজাতির দেশীও প্রজাতি মাছের আনাগোনা। আর এসব মাছ ধরতে ব্যবহার হয় চাঁই বা দুয়ারীর অথবা খাদোইন।
পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর উপজেলার দিঘিরজান ও শ্রীরামকাঠী বাজারে জমে উঠেছে এসব মাছ ধরার চাঁই এর হাট। সপ্তাহে দুদিন এ বাজারে হাজার হাজার মাছ ধরার চাঁই খুচরা ও পাইকারী দরে বিক্রী হচ্ছে।
জানা গেছে, নাজিরপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বহু পরিবার চাঁই ও দুয়ারি তৈরীর সংঙ্গে জড়িত। বছরের বর্ষা মৌসুমের ৬ মাস তারা এ মাছ ধরার বিশেষ ফাঁদ তৈরির কাজে ব্যাস্ত থাকেন। তল্লা ও কালী জিরা বাশঁ দিয়ে এ যন্ত্র তৈরি করা হয়। একটি বাশঁ দিয়ে ৭ থেকে ৮টি চাঁই তৈরি করা হয়। তবে একজন কারিগর একদিনে ৫ থেকে ৬টির বেশি চাই তৈরি করতে পারে না। প্রতি শনি ও মঙ্গলবার বাজারে এ মাছ ধরার যন্ত্র চাঁই বিক্রি হয়।
বাজারে এক কুড়ি চাই ৩ হাজার টাকা থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রী হয়ে থাকে। এছাড়া এক পিস চাঁই ১৩০ টাকা থেকে ১৬০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। এসব যন্ত্র চাঁই তৈরির জন্য একটি বাশঁ কেনেন ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকার মধ্যে। এযন্ত্রে ছোট মাছসহ বেশির ভাগে চিংড়িমাছ আটকা পাড়ে।
চাঁই তৈরির কারিগর সুদেব বৈরাগী জানান, তার পরিবারের সবাই মিলে বর্ষা মৌসুমের ৬ মাস চাঁই তৈরির কাজ করেন। বাশঁ কেনা থেকে শুরু করে সম্পূর্ণ চাঁই তৈরি করতে যে কষ্ট আর খরচ হয়, সে তুলনায় লাভ বেশি হয় না। তবে এ শিল্প এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে।
দিন দিন খাল-বিল নদীর সংখ্যা কমে যাওয়ায় মাছ শিকারীর সংখ্যাও কমে গেছে। যার কারণে চাঁইয়ের চাহিদাও কমে গেছে। বর্তমান সব জিনিসের দাম বেশি, সে তুলনায় চাঁইয়ের দাম ভাল পাচ্ছেন না। সরকার এ শিল্প বাঁচাতে স্বল্প সুদে ঋণ দিলে তাদের কর্যক্রম আরো গতিশীল করতে পারতেন।
এদিকে উপজেলা মৎস্য আফিস জানান, মে মাস থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত প্রতিটি মাছের পেটেই ডিম থাকে। এই মা মাছ না ধরার জন্য জেলেদের বিভিন্ন প্রকার সচেতননতামূলক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। মাছ শিকারে জেলেরা বিভিন্ন ধরনের যন্ত্র বা জাল ব্যবহার করেন। এগুলো দমনে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় মাঝে মধ্যেই ভ্র্যম্যমান আদালত পরিচালনা করাও হচ্ছে।
ভোরের আকাশ/জাআ