নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ জুলাই ২০২৫ ০৮:১২ পিএম
ভূমি দুর্নীতি মামলায় শেখ হাসিনা-রেহানা-জয়সহ ১০০ জনকে আদালতে হাজিরের নির্দেশ
রাজধানীর পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৬০ কাঠা সরকারি প্লট বরাদ্দে অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে দায়েরকৃত ছয়টি দুর্নীতি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১০০ জনকে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দিয়ে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।
গত ৩ জুলাই ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব স্বাক্ষরিত গেজেটটি বিজি প্রেস থেকে প্রকাশ করা হয়।
গেজেটে বলা হয়, তফসিলভুক্ত আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে। আদালতের ধারণা, তারা বিচার এড়াতে আত্মগোপনে রয়েছেন এবং নিকট ভবিষ্যতে তাদের গ্রেপ্তারের সম্ভাবনা নেই। তাই ক্রিমিনাল ল’ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট, ১৯৫৮-এর ৬(১৩) ধারা অনুসারে আগামী ধার্য তারিখে (২০ জুলাই) আসামিদের আদালতে উপস্থিত হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় তাদের অনুপস্থিতিতেই বিচার কার্যক্রম চলবে।
এর আগে গত ১ জুলাই আদালত গেজেট প্রকাশের আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম। তিনি জানান, দুর্নীতির ছয়টি মামলায় গেজেট প্রকাশের নির্দেশ অনুযায়ী বিজি প্রেস থেকে তা প্রকাশিত হয়েছে।
মামলাগুলোর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য রয়েছে ২০ জুলাই। নির্ধারিত তারিখে আসামিরা আদালতে উপস্থিত না হলে অনুপস্থিতিতেই বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে জানান প্রসিকিউটর।
২০২৪ সালের ১২ থেকে ১৪ জানুয়ারির মধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক সালাহউদ্দিন, সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া এবং এস এম রাশেদুল হাসান বাদী হয়ে পৃথক ছয়টি মামলা দায়ের করেন।
এর মধ্যে ১৪ জানুয়ারি উপপরিচালক সালাহউদ্দিন শেখ হাসিনাসহ ৮ জনকে আসামি করে মামলা করেন। তদন্ত শেষে আরও ৪ জনকে যুক্ত করে ১২ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেন সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া।
একই দিনে এস এম রাশেদুল হাসান শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে আরও দুইজনকে যুক্ত করে চার্জশিটে আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় ১৭ জন।
১৩ জানুয়ারি সালাহউদ্দিন শেখ রেহানাকে প্রধান আসামি করে শেখ হাসিনা ও টিউলিপ সিদ্দিকসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তদন্ত শেষে ১৭ জনকে আসামি করে চার্জশিট দেন কেয়া।
আফনান জান্নাত কেয়া ১৩ জানুয়ারি আজমিনা সিদ্দিককে প্রধান আসামি করে শেখ হাসিনা ও টিউলিপসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করেন। তদন্তে আরও দুইজন যুক্ত হয়ে আসামির সংখ্যা হয় ১৮।
একই দিনে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, টিউলিপ ও শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনকে আসামি করে মামলা করেন এস এম রাশেদুল হাসান। তদন্ত শেষে ১৮ জনের নামে চার্জশিট জমা দেওয়া হয়।
সবশেষে ১২ জানুয়ারি শেখ হাসিনা ও শেখ পুতুলসহ ১৬ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন কেয়া। তদন্তে আরও দুজন যুক্ত হয়ে মোট ১৮ জনকে আসামি করে চার্জশিট দেওয়া হয়। মামলাটিতে সাক্ষী হিসেবে রাখা হয়েছে ১৬ জনকে।
দুদক বলছে, পূর্বাচল প্রকল্পে ক্ষমতার অপব্যবহার করে সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়া এবং সরকারি সম্পদের ক্ষতিসাধনের অভিযোগে এসব মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আসামিদের অনুপস্থিতির কারণে বিচার প্রক্রিয়া বিলম্বিত হওয়ায় গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে, নির্ধারিত তারিখে উপস্থিত না হলে আইন অনুযায়ী অনুপস্থিতিতেই বিচার চলবে।
ভোরের আকাশ//হ.র