ছবি: সংগৃহীত
বিচারক হিসেবে দুর্নীতি ও বিদ্বেষমূলকভাবে বেআইনি রায় প্রদান এবং জাল রায় তৈরির অভিযোগে শাহবাগ থানায় দায়ের করা মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হককে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক খালেক মিয়া সাত দিনের রিমান্ড শেষে খায়রুল হককে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুজ্জামান তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
দুর্নীতি ও রায় জালিয়াতির অভিযোগে গত বছর ২৭ অগাস্ট শাহবাগ থানায় এ মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন।
মুজাহিদুল ইসলাম সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায়ে ‘জালিয়াতির’ অভিযোগ এনে বলেন, বিচারপতি খায়রুল সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কথায় প্রভাবিত হয়ে অবসর পরবর্তী ভালো পদায়নের লোভে দুর্নীতিমূলকভাবে শেখ হাসিনাকে খুশি করার জন্য ২০১১ সালের ১০ মে সংক্ষিপ্ত আদেশটি পরিবর্তন করে বেআইনিভাবে ২০১২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর আপিল মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছিল। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ওই ব্যবস্থা বাতিল করা হয়। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে এই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ কয়েকজন রিট আবেদন করেন। সেই মামলার শুনানি করে ২০০৪ সালে হাইকোর্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করে রায় দেন।
রিট আবেদনকারী ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে ২০১১ সালের ১০ মে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে রায় দেন আপিল বিভাগ। তখন প্রধান বিচারপতি ছিলেন এবিএম খায়রুল হক। ত্রয়োদশ সংশোধনী মামলায় প্রকাশ্য আদালতে ঘোষিত রায়ে সুপ্রিম কোর্ট দুই মেয়াদ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল রাখার পথ খোলা রেখেছিলেন। কিন্তু ওই বছর সেপ্টেম্বরে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের সময় ‘জালিয়াতি’ করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৪ জুলাই সকালে ধানমন্ডির বাসা থেকে খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে যুবদল কর্মী আবদুল কাইয়ুম আহাদ হত্যা মামলায় ওইদিন রাতে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। ৩০ জুলাই তার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
এ মামলায় গত ৩১ জুলাই দণ্ডবিধির ১২০-বি, যা অপরাধ মূলক ষড়যন্ত্র এবং ৪২০ যা প্রতারণা এ দুই ধারা সংযোজনের আবেদন করেন। আদালত আবেদনটি নথিভুক্তের আদেশ দেন।
ভোরের আকাশ/মো.আ.
সংশ্লিষ্ট
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন সম্পন্ন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন বিচারিক প্যানেলের সামনে এই আবেদন জানান তিনি।একইসঙ্গে, মামলায় রাজসাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের শাস্তির বিষয়টি আদালতের বিবেচনার ওপর ছেড়ে দেন প্রধান প্রসিকিউটর।চিফ প্রসিকিউটর বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ১ হাজার ৪০০ ছাত্র-জনতা নিহত হয়েছেন। একজন মানুষকে হত্যার দায়ে যদি মৃত্যুদণ্ড হয়, তাহলে ১ হাজার ৪০০ জনকে হত্যার দায়ে শেখ হাসিনাকে ১৪শ বার ফাঁসি দেওয়া উচিত। যদিও আইনে তা সম্ভব নয়, তবে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে তার সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি। এই দণ্ড দেওয়া হলে দেশের জনগণ ন্যায়বিচার পাবে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে রাজধানীর চানখারপুলে ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ আটজনের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) অবশিষ্ট সাক্ষ্য দেবেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।আজ দুপুরের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে এ সাক্ষ্যগ্রহণ পেশ করবেন তিনি। এমনটিই জানিয়েছে প্রসিকিউশন। গত ৯ অক্টোবর দুপুর ২টায় এ মামলায় সাক্ষ্য দিতে ট্রাইব্যুনালে এসেছিলেন এই উপদেষ্টা। বিকেল পৌনে ৩টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত তার সাক্ষ্যগ্রহণ চলে। তবে শেষ না হওয়ায় অবশিষ্ট জবানবন্দি নিতে প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজকের দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল-১। ওই দিন ১৯ নম্বর সাক্ষী হিসেবে নিজের সাক্ষ্যে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের পুরো পটভূমি তুলে ধরেন আসিফ মাহমুদ। একইসঙ্গে গত বছরের ৫ আগস্ট চানখারপুলে চালানো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নৃশংসতার বিবরণ দেন। এমনকি ডিবি পরিচয়ে রাতের আঁধারে নিজেকে গুম করার কথাও জবানবন্দিতে পেশ করেন তিনি। এসব ঘটনার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ সরাসরি জড়িতদের দায়ী করেছেন এই উপদেষ্টা।এ মামলার গ্রেপ্তার চার আসামি হলেন— শাহবাগ থানার সাবেক ওসি (অপারেশন) মো. আরশাদ হোসেন, কনস্টেবল মো. সুজন মিয়া, মো. ইমাজ হোসেন ইমন ও মো. নাসিরুল ইসলাম।পলাতক আসামিরা হলেন— সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহ আলম মো. আখতারুল ইসলাম ও রমনা অঞ্চলের সাবেক সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল।গত ১৪ জুলাই চানখারপুলের মামলাটির পলাতক চার আসামিসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট চানখারপুল এলাকায় শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে গুলি চালায় পুলিশ। এতে বহু হতাহতের ঘটনার পাশাপাশি শাহরিয়ার খান আনাস, শেখ জুনায়েদ, মো. ইয়াকুব, মো. রাকিব হাওলাদার, মো. ইসমামুল হক ও মানিক মিয়া শাহরিক নিহত হন।ভোরের আকাশ/মো.আ.
জুলাই-আগস্টে মানবতাবিরোধী অপরাধের সাত মামলায় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে ৮ জানুয়ারির মধ্যে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকালে জুলাই-আগস্টে মানবতাবিরোধী অপরাধের সাত মামলায় ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী, সচিব এবং সাবেক সাংসদসহ মোট ৪৫ আসামিকে। পরে আওয়ামী লীগ ও তৎকালীন সরকারের ঘনিষ্ঠ শীর্ষ আসামিদের এজলাসে না তুলে, খাস কামরা থেকেই ৮ জানুয়ারির মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ করার আদেশ দেওয়া হয়।এদিকে, জুলাই মাসে সংঘটিত কথিত গণঅভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে যুক্তিতর্কের চতুর্থ দিনের শুনানি চলছে। চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যুক্তি উপস্থাপন করবেন।মঙ্গলবার দিনভর এই মামলার শুনানিতে দালিলিক প্রমাণ ‘প্লেস অব অকরেন্স’, গণহত্যার বিস্তার, সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর ভূমিকা এবং জুলাইয়ের ধারাবাহিক ঘটনাক্রম তুলে ধরা হয়। প্রসিকিউশন আসামিদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট পাঁচটি অভিযোগ উপস্থাপন করে। এছাড়া আশুলিয়া মরদেহ পোড়ানো মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ।ভোরের আকাশ/এসএইচ
হাতে হাতকড়া পরানোয় ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে হাজতখানার ওসিকে ধমক দিলেন শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ওরফে মো. ফাতেহ আলী।বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকালে প্রিজনভ্যান থেকে হাজতখানায় নেওয়ার পথে এ ধমক দেন সুব্রত বাইন।রাজধানীর হাতিরঝিল থানার অস্ত্র মামলায় চার্জ গঠনের শুনানি করতে বুধবার সকালে সুব্রত বাইনকে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে ঢাকার আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় প্রিজন ভ্যান থেকে নামিয়ে মহানগর দায়রা জজ আদালতের ওসি রিপন মোল্লা তাকে হেলমেট ও বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরান।এরপর তার হাতে হাতকড়া পরাতে গেলে ওসি হাজতকে ধমক দিয়ে ওঠেন সুব্রত বাইন। এ সময় ওসির উদ্দেশে সুব্রত বাইন বলেন, ডাণ্ডাবেড়ি পরানো অবস্থায় হাতকড়া কিসের। আপনি কবে থেকে ডিউটি করেন।উল্লেখ্য, আজ রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় অস্ত্র আইনের মামলায় শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ও তার তিন সহযোগীর বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের শুনানির দিন ধার্য ছিল।ভোরের আকাশ/এসএইচ