× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সারাদেশে সাঁড়াশি অভিযান

চাঁদাবাজ ধরলেই ‘ডিটেনশন অর্ডার’, ৭ দিনেই তদন্ত

ভোরের আকাশ ডেস্ক

প্রকাশ : ১৬ জুলাই ২০২৫ ০৮:৩০ এএম

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

গত দশ মাসে বাংলাদেশে সহিংসতা ও চাঁদাবাজির কারণে জনজীবন অস্থির হয়ে উঠেছে। রাজনৈতিক কোন্দল, ক্ষমতা দখলের লড়াই এবং সংঘর্ষে একের পর এক প্রাণহানিও ঘটছে।  এ অবস্থা থেকে উত্তোরণের জন্য চাঁদাবাজির লাগাম টানতে শুরু হয়েছে ‌‘সাঁড়াশি অভিযান’।

গতকাল মঙ্গলবার রাত থেকে এই অভিযান শুরু হয়।  এর আগে পুলিশ সদর দপ্তরের এক জরুরি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, হাতেনাতে কোনো চাঁদাবাজ ধরা পড়লেই তাকে ডিটেনশন অর্ডার (আটকাদেশ) দেওয়া হবে।  হাটে-মাঠে-ঘাটে, বাস, ট্রাক, টেম্পু স্ট্যান্ড, রেল-নৌ-বাস টার্মিনাল, ফুটপাতসহ যেখানেই চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটবে সেখানেই সাঁড়াশি অভিযান চালাবে পুলিশ-র‍‍্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।  জড়িতদের সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা দেবে।  মামলার তদন্ত শেষ করতে হবে এক সপ্তাহের মধ্যেই।  এরপর এক মাসের মধ্যেই মামলার রায় দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।

পুলিশ সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা জানান, চাঁদাবাজদের ধরতে পুলিশের সব ইউনিটকে বিশেষ নিদর্শনা দেওয়া হয়েছে।  যে দলেরই হোক কাউকে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।  ধরার পড়ে কোনো তদবিরেও ছাড়া হবে না চাঁদাবাজদের।

এছাড়াও ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কঠোর মধ্যে নির্দেশনা দিয়েছেন।  থানার ওসি থেকে শুরু করে ডিসি, এডিসি এবং এসিকে মনিটরিং করতে বলেছেন।  এছাড়া ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সদস্যদের বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন চাঁদাবাজদের ধরার বিষয়ে।

পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানায়, পুলিশ সদর দপ্তর থেকে বিশেষ শাখার (এসবি) প্রধানের কাছে গত ১৬ অক্টোবর একটি জরুরি পত্র পাঠিয়ে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের সম্পর্কে প্রতিবেদন পাঠাতে বলা হয়।  এই চিঠি পাওয়ার পর পুলিশের বিশেষ শাখা থেকে ৭২টি ইউনিটের কাছে তালিকা চেয়ে গোপনীয় পত্র পাঠানো হয়।  ওই ইউনিটগুলোকে ২০ অক্টোবরের মধ্যে প্রতিবেদন পাঠাতে বলা হয়।

এর মধ্যে ২৯টি ইউনিট বাদে ৪৩টি ইউনিট চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসীদের তালিকা করে বিশেষ শাখায় পাঠায়।  বিশেষ শাখা থেকে ওই বছরের ৬ নভেম্বর ৪৫৭ পৃষ্ঠার গোপনীয় প্রতিবেদনটি পুলিশ সদর দপ্তরের সংশ্লিষ্ট শাখায় পাঠানো হয়।

ওই প্রতিবেদনে সারাদেশের চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সবিস্তার তুলে ধরা হয়।  তাতে ২০৩১ জন চাদাঁবাজ-সন্ত্রাসীদের নাম উঠে আসে বলে একটি সূত্র জানায়।

গত সোমবার কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ‘রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ, ক্যাম্প ব্যবস্থাপনা ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ’ শীর্ষক আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে চাঁদাবাজি বন্ধে সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, যত উঁচু লেভেলের চাঁদাবাজ হোক, তাকে ছাড় দেওয়া হবে না।

এর আগে শনিবার রাজধানীর পুরান ঢাকায় পুলিশের কয়েকটি ইউনিট পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বাহারুল আলম গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের মাধ্যমে সারাদেশে বিশেষ করে ঢাকায় চাঁদাবাজ ও আধিপত্য বিস্তারকারীদের তালিকা তৈরি হচ্ছে বলে জানান।

তিনি বলেন, চাঁদাবাজি ও নৈরাজ্য বন্ধে পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। ঢাকায় এলাকাভিত্তিক গোয়েন্দা পুলিশকে দায়িত্ব দিয়েছি, যাদের রেপুটেশন খারাপ এবং যাদের বিরুদ্ধে মামলা আছে, তাদের তালিকা তৈরি করতে হবে। এক্ষেত্রে যাদের রেপুটেশন খারাপ তাদের বিরুদ্ধে প্রিভেনটিভ ডিটেনশন এবং যাদের বিরুদ্ধে মামলা আছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

চাঁদাবাজদের ডিটেনশন

হাতেনাতে কোনো চাঁদাবাজ ধরা পড়লেই তাকে ডিটেনশন (আটকাদেশ) দেওয়া হবে।  ডিটেনশন হচ্ছে, আটকাদেশ অবস্থা।  কোনো অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আটক করার পর মুক্তি না দিয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনের ৩(২) ধারা মোতাবেক জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অভিযুক্তকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আটকাদেশের নির্দেশ দিয়ে থাকেন, এই আসামিকে আটক রাখার নামই হলো ডিটেনশন।  এর মেয়াদ প্রথম পর্যায়ে ৩০ দিন এবং পরে ৯০ দিন এভাবে মোট ১২০ দিন পর্যন্ত একজন আসামিকে আটকে রাখা যায়।

পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (পিআর অ্যান্ড মিডিয়া) ইনামুল হক সাগর জানান, বিশেষ অভিযানসহ অভিযানে গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশ থেকে এক হাজার ৫৭২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।  এর মধ্যে মামলা এবং ওয়ারেন্টের আসামি এক হাজার সাতজন।  অন্যান্য ঘটনায় গ্রেফতার ৪৬৫ জন।

ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক বলেন, চাঁদাবাজি রোধে কাজ করছে পুলিশ।  ঢাকা রেঞ্জের সকল পুলিশ সদস্যকে নির্দেশ দিয়েছি চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী চলবে না।  চাঁদাবাজ যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই ধরা হবে।

ডিএমপি কমিশনার মো. সাজ্জাত আলী বলেন, কোনো অপরাধী ছাড় পাবে না, তাদের কঠোরভাবে দমন করা হবে। ঢাকা মহানগরীর আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং অপরাধ প্রতিরোধে সর্বোচ্চ আন্তরিকতা ও পেশাদারত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনে সবাইকে নিদর্শনা দেওয়া হয়েছে।

ভোরের আকাশ/জাআ

  • শেয়ার করুন-
 জাতীয় মহাসমাবেশ সফল করার জন্য পিরোজপুরে মিছিল

জাতীয় মহাসমাবেশ সফল করার জন্য পিরোজপুরে মিছিল

সংশ্লিষ্ট

গোপালগঞ্জের ঘটনায় কেউ ছাড় পাবে না: অন্তর্বর্তী সরকার

গোপালগঞ্জের ঘটনায় কেউ ছাড় পাবে না: অন্তর্বর্তী সরকার

সোহাগ হত্যায় রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা নেই: ডিএমপি কমিশনার

সোহাগ হত্যায় রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা নেই: ডিএমপি কমিশনার

হজের অব্যয়িত অর্থ ফেরত দিচ্ছে সরকার, প্রতারণা এড়াতে সতর্কবার্তা

হজের অব্যয়িত অর্থ ফেরত দিচ্ছে সরকার, প্রতারণা এড়াতে সতর্কবার্তা

ইসির ওয়েবসাইট থেকে সরানো হলো ‘নৌকা’ প্রতীক

ইসির ওয়েবসাইট থেকে সরানো হলো ‘নৌকা’ প্রতীক