স্পোর্টস রিপোর্টার
প্রকাশ : ০৭ জুলাই ২০২৫ ০১:৫৪ এএম
চোখের জলে বিদায়, গন্ডোমারে লিভারপুল তারকা দিয়েগো জোতা ও ভাই আন্দ্রে সিলভার শেষযাত্রা
পর্তুগালের গন্ডোমার শহর শনিবার সকালে শোকের আবহে বিমুষ্ক হয়ে উঠল। চার্চে জড়ো হয়েছিলেন পরিবারের সদস্য, বন্ধু ও বর্তমান-সাবেক সহকর্মীরা লিভারপুলের তারকা ফুটবলার দিয়েগো জোতা এবং তার ছোট ভাই আন্দ্রে সিলভার শেষকৃত্যানুষ্ঠানে অংশ নিতে।
২৮ বছর বয়সী দিয়েগো জোতা ও ২৫ বছর বয়সী আন্দ্রে সিলভা বৃহস্পতিবার ভোরে স্পেনের জামোরার কাছে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন।
শেষকৃত্যের সময় চার্চে দুই ভাইয়ের কফিন বহন করেন লিভারপুল অধিনায়ক ভার্জিল ফন ডাইক ও ম্যানেজার আর্নে স্লট। তাদের হাতে ছিল লাল ফুলের তৈরি দুইটি জার্সির আকৃতির মালা, একটি দিয়েগোর লিভারপুল জার্সি নম্বর ২০ এবং অন্যটি আন্দ্রের পেনাফিয়েল ক্লাবের জার্সি নম্বর ৩০।
সবাই কালো পোশাকে নীরব হয়ে চার্চে প্রবেশ করেন, আর বাইরে জড়ো হওয়া মানুষদের একটানা হাততালি শোকের ভাষা প্রকাশ করেছিল।
জোতার স্ত্রী রুট কারদোসো, যিনি মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে তার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন, পরিবারের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন। গন্ডোমারের শত শত বাসিন্দাও এসে প্রিয় সন্তানকে শেষ বিদায় জানিয়েছেন।
পরিবারের জন্য ব্যক্তিগত অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন পোর্তোর বিশপ মানুয়েল লিন্ডা, যিনি বলেন,
“ভালোবাসার একতা মৃত্যুর থেকেও শক্তিশালী।”
পর্তুগালের জাতীয় দলের সতীর্থ ব্রুনো ফার্নান্দেজ, জোয়াও কানসেলো, রেনাটো ভেইগা, জোয়াও ফেলিক্স, জোসে ফন্তে, দানিলো, অ্যাড্রিয়েন সিলভা এবং ম্যানচেস্টার সিটির বার্নার্দো সিলভাও শেষকৃত্যে উপস্থিত ছিলেন। বার্নার্দো সিলভা বলেন,
“রুট, বাচ্চারা, বাবা-মায়ের কষ্ট আমি কল্পনাও করতে পারছি না। জোতার বন্ধুত্ব, হাসি, দৃঢ়তা সবই স্মৃতিতে থাকবে। তার নম্বর ২০ এখন আরও বেশি অর্থবহ।”
দিয়েগো জোতা মাত্র ২২ জুন পোর্তোতে তার শৈশবের প্রিয়তমা রুট কারদোসোর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। এতো অল্প সময়ে তার এই অকাল প্রস্থানে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সবার হৃদয়ে।
অ্যানফিল্ডে হাজার হাজার লিভারপুল সমর্থক ফুলের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছেন। জোতা লিভারপুলের হয়ে খেলেছেন ১৮২টি ম্যাচ, জিতেছেন প্রিমিয়ার লিগ, এফএ কাপ এবং দুটি কারাবাও কাপ। পর্তুগালের হয়ে ৪৯টি ম্যাচে দুটি উয়েফা নেশনস লিগ শিরোপা লাভ করেন।
অন্যদিকে, আন্দ্রে সিলভা পেনাফিয়েলের হয়ে পর্তুগালের নিম্ন বিভাগের ফুটবল খেলতেন।
আজকের বিদায় শুধুমাত্র দুই প্রতিভার অকাল প্রস্থান নয়, হারিয়ে গেলো দুই পরিবারের স্বপ্ন, হাজারো সমর্থকের ভালোবাসা এবং একটি শহরের গর্ব।
ভোরের আকাশ//হ.র